ঈদে স্বাস্থ্যবিধি

9

এই মুহূর্তে বাংলাদেশে করোনার তেমন উদ্বেগ নেই। স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন সবাই। তবে সরকারী বিধিনিষেধে মাস্ক পরা, যথাসম্ভব সামাজিক দূরত্বের কথা বলা হলেও এটি মানছেন না অনেকেই। মাঝে মধ্যে কিছু সচেতন মানুষের মুখে মাস্ক দেখা গেলেও সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই কোথাও। করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু অব্যাহত থাকলেও এর সংখ্যা মানুষকে ভীত করার জন্য যথেষ্ট নয়। এর সঙ্গে শুরু হয়েছে ঈদুল ফিতরের প্রস্তুতি। চলছে কেনাকাটার ধুম। হাট বাজার, দোকান পাট ও শপিংমলগুলোতে মানুষের উপস্থিতি ফিরে গেছে করোনাকালের আগের পর্যায়ে। করোনার ভয়ঙ্কর দিনগুলোর কথা মানুষ প্রায় ভুলেই গেছে। এর মধ্যেই একটি নতুন আশঙ্কার সংবাদ এসেছে পত্রিকার পাতায়। ডেল্টা ধরনের নতুন একটি ভাইরাস আগামী দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে আসতে পারে বলে আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশে মানুষের মনে ভীতি না থাকলেও করোনাভাইরাস চলে যায়নি এখনও। প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন অনেক মানুষ। যদিও মৃত্যুর কোঠা প্রায় শূন্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি দুর্বল ভাইরাস। আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুর ঝুঁকি কম থাকলেও শরীরে দেখা দিচ্ছে দীর্ঘমেয়াদী নানা উপসর্গ। আক্রান্ত বাড়লে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়তে পারে। ভারত-বাংলাদেশসহ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশ এবং মধ্যপ্রাচ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কম থাকলেও অষ্ট্রেলিয়া, জাপান, মালয়েশিয়া, কোরিয়া, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপ অর্থাৎ পূর্ব-পশ্চিমের অধিকাংশ দেশেই দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা অনেক। ইউরোপের কোন কোন দেশে দৈনিক আক্রান্ত লাখের ওপরে থাকছে। মৃত্যুর সংখ্যাও কম নয়। সম্প্রতি ভারতে নতুন ধরনের ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস আপাতত নির্মূল হচ্ছে না। প্রতি তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে ভাইরাসটি নতুন ধরনে রূপান্তরিত হচ্ছে। পুরনো ধরনেও টিকা নেয়া অথবা আগে সংক্রমিত হওয়া ব্যক্তি আক্রান্ত হচ্ছেন পুনরায়। টিকা কিংবা আক্রান্ত হওয়ার কারণে সৃষ্ট ভাইরাসপ্রতিরোধ ক্ষমতা তিন/চার মাসের বেশি থাকছে না। টিকা নেয়া থাকলে ক্ষতির আশঙ্কা কম থাকলেও করোনায় আক্রান্ত হলে সুস্থ ব্যক্তিরও পরবর্তীতে ঘুম কম হওয়া, স্মরণশক্তি কমে যাওয়া, দুর্বল অনুভব করা, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীদের জটিলতা বাড়ছে। এ কারণে করোনাকে একেবারে উড়িয়ে দেয়ার মতো পরিস্থিতি এখনও আসেনি।
দেশে করোনা প্রতিরোধে বিধিনিষেধ উঠে গেছে মাস দু’য়েক আগে। এখন চলছে ঈদের প্রস্তুতি। ঈদের কেনাকাটায় ভিড়ের পাশাপাশি শুরু হবে ঘরে ফেরা। সারাদেশে কোটি কোটি মানুষ চলাচল করবে ঈদকে কেন্দ্র করে। বাড়বে মেলামেশা। স্বাভাবিকভাবেই ভাইরাস ছড়াবে দ্রুত। এর মধ্যে বলা হচ্ছে নতুন ঢেউয়ের আশঙ্কার কথা। আপাতত করোনা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও নতুন সংক্রমণ প্রতিরোধে মাস্ক পরাসহ সবধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই।