প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জনসচেতনতামূলক সভায় জেলা প্রশাসক ॥ বিশে^ বাংলাদেশ সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী দেশ

1
জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘নিরাপদ অভিবাসন, বিক্রুটিং এজেন্ট লাইসেন্স, আচরণ ও শ্রেণিবিভাগ বিধিমালা বিষয়ে জনসচেতনতামূলক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন জেলা প্রশাসক মো: মজিবর রহমান।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো মজিবর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ বিশ্বে সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী দেশ। একইসঙ্গে স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের রোল মডেল। এই সাফল্যের পিছনের প্রবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
মঙ্গলবার সকালে সিলেট জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘নিরাপদ অভিবাসন, বিক্রুটিং এজেন্ট লাইসেন্স, আচরণ ও শ্রেণিবিভাগ বিধিমালা বিষয়ে জনসচেতনতামূলক সভা’য় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো আব্দুস সালাম। উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মামুনুর রশীদ। সভাপতিত্ব করেন, সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসান। আলোচনায় অংশ নেন, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মাওলানা শাহ নজরুল ইসলাম, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আল আজাদ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ইকবাল সিদ্দিকী, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন-ইমজার সভাপতি মঈন উদ্দিন মনজু ও সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী। সঞ্চালনায় ছিলেন, সহকারী কমিশনার সাদিয়া বিনতে সুলেমান।
সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট এন্ড কোঅপারেশন-এসডিসি ও ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন-আইএলওর সহযোগিতায় এবং জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, শ্রীলংকার মতো দেশ যেখানে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে না পেরে চরম বিপর্যয়ে পড়েছে সেখানে বাংলাদেশের প্রবাসীরা অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
তিনি জানান, সরকার প্রবাসীদের জন্যে কল্যাণধর্মী অনেককিছু করছে; কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে সেই খবর পৌঁছুচ্ছেনা। তাই মানুষকে জানাতে হবে। সচেতনও করতে হবে, যাতে আগ্রহীরা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে বৈধপথে নিরাপদে বিদেশ গিয়ে নিজের ও পরিবারের পাশাপাশি দেশের জন্যে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারেন।
জেলা প্রশাসক উল্লেখ করেন, সরকারি উদ্যোগে প্রবাসীদের জন্যে সহজশর্তে বীমার সুবিধা করা হয়েছে। দেওয়া হচ্ছে ব্যাংক ঋণ। এছাড়া বৃত্তির ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
তিনি দক্ষ জনশক্তি হিসেবে বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে জনসচেতনতা গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
বিশেষ অতিথি উপসচিব মো আব্দুস সালাম জানান, ‘প্রবাসীরা এতদিন দিয়েছেন, এখন প্রবাসীদেরকে দেওয়ার পালা’ প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা অনুসারে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। অন্তত ৩০টি দেশে গড়ে তোলা হয়েছে নিরাপদ আবাসন, যেখানে প্রবাসজীবনে বিপন্ন হয়ে পড়া বাংলাদেশী নাগরিকরা সহজেই আশ্রয় নিতে পারেন। প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের উপর প্রণোদনা দুই শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা হয়েছে। মাত্র ৪৯০ টাকার করা হয়েছে বীমার ব্যবস্থা, যা যুগোপযোগী একটি পদক্ষেপ। এর থেকে একজন প্রবাসী বা প্রবাসী পরিবার ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা পেতে পারে।
তিনি বলেন, সরকার চায়, দেশের নাগরিকরা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে বিদেশে যান। যাওয়াটাও যেন হয় বৈধভাবে। তাহলে যেমনি আয় হবে দ্বিগুণ-তিনগুণ তেমনি জীবন থাকবে নিরাপদ। এ লক্ষ্যে প্রতিটি উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উপসচিব বলেন, কেউ যাতে লাখ লাখ টাকা খরচ করে প্রতারিত না হয়, সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে দুঃখজনক পরিণতি কিংবা বিদেশের বনে-জঙ্গলে অথবা কর্মস্থলে নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার না হয় সেজন্যে তৃণমূল পর্যায়ে জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে।
রিক্রুটিং এজেন্ট লাইসেন্স ও শ্রেণিবিন্যাসের উপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি আশা প্রকাশ করেন, এতে প্রতারণা বন্ধ হবে। বিজ্ঞপ্তি