রমজানে স্বস্তি

9

টিসিবির পর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সুলভ মূলে পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। পবিত্র রমজানে মন্ত্রণালয়ের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে দুধ-ডিম-মাংস। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষকে একটু স্বস্তি দেয়ার লক্ষ্যেই নেয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত। রাজধানীর ১০টি স্থানে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রে চলছে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রি। স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে সচিবালয় সংলগ্ন আব্দুল গণি রোড, খামারবাড়ী গোল চত্বর, জাপান গার্ডেন সিটি, মিরপুর ৬০ ফুট রাস্তা, আজিমপুর মাতৃসদন, পুরান ঢাকার নয়াবাজার, আরামবাগ, নতুন বাজার, মিরপুরের কালশী এবং যাত্রাবাড়ী।
রমজান মাসে সকল পণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা দীর্ঘ দিনের। ব্যবসায়ীরা এই মাসে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য কয়েক মাস আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে থাকে। পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে সরকারের পক্ষ থেকেও নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে থাকে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া, টিসিবির মাধ্যমে পণ্য বিক্রি, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা, বাজার মনিটরিং, আমদানিকৃত পণ্যের ভ্যাট-ট্যাক্স কমানো ইত্যাদি। সরকারের এসব উদ্যোগে সহনীয় পর্যায়ে থাকে পণ্যমূল্য।
এবার রমজানে সমস্যা আরও প্রকট। তেলের বাজারে অস্থিরতা চলছে গত কয়েক মাস ধরে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অজুহাতে সকল আমদানি পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে দফায় দফায়। এর মধ্যে খামারে পালিত পশু, মুরগি ও মাছের খাবারের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ইউক্রেন থেকে খামারের খাদ্য উৎপাদনের প্রধান পণ্য ভুট্টার আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে তারা এই পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। অথচ ব্যবসায়ীরা খামারের খাদ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে যুদ্ধ শুরুর আগে থেকেই। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের এসব দেখার সময় নেই।
পশু ও হাঁস-মুরগি খাদ্যের দাম বাড়ানোর কারণে বেড়ে গেছে মাংস, ডিম, দুধ এবং মাছের দাম। এর প্রভাব পড়েছে রমজানের বাজারেও। এমন পরিস্থিতিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এসব পণ্য সুলভ মূল্যে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে পাস্তুরিত তরল দুধ পাওয়া যাচ্ছে প্রতি লিটার ৬০ টাকা, গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫৫০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৮০০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার প্রতি কেজি ২০০ টাকা এবং ডিম প্রতি হালি ৩০ টাকায়। বাজারের দামের চেয়ে এই মূল্য অনেকটাই কম। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস এ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল এই কাজে সহায়তা করছে মন্ত্রণালয়কে। রাষ্ট্রের যে কোন সমস্যায় নিজ নিজ অবস্থানে থেকে দায়িত্ব পালন করা সকলের কর্তব্য। রমজানে মনুষকে স্বস্তি দিতে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।