সিলেটে বামজোটের স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল পালন

3
চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা আধাবেলা হরতালে রাস্তাঘাট ফাঁকা।

চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা আধাবেলা হরতাল সিলেটে স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালিত হয়েছে।
২৮ মার্চ সোমবার সকাল ৬টা থেকেই নগরে প্রধান প্রধান সড়কে অবস্থান নেন বাম জোটের নেতাকর্মীরা। এ সময় খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে নগরের বিভিন্ন পয়েন্টে তারা পিকেটিং করেন। পিকেটিংকালে সড়কে বের হওয়া যানবাহন আটকে দেন বাম নেতাকর্মীরা। বেলা ১২টা পর্যন্ত নগরের কোর্ট পয়েন্টসহ বিভিন্ন পয়েন্টে বাম নেতাকর্মীদের অবস্থান ছিল। এদিকে সকাল ১১ টায় নগরের কোর্ট পয়েন্টে হরতালের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বাম গণতান্ত্রিক জোট সিলেট জেলার সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাছানের সভাপতিত্বে ও বাসদ জেলা সদস্য প্রণব জ্যোতি পালের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন, সিপিবি সিলেট বিভাগের সমন্বয়ক এডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমন, সিপিবি সিলেট জেলার সভাপতি সৈয়দ ফরহাদ হোসেন, বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা আহ্বায়ক উজ্জ্বল রায়, বাসদ জেলা সমন্বয়ক আবু জাফর, ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী) জেলা সভাপতি সিরাজ আহমদ, বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার নেতা অ্যাডভোকেট হুমায়ুন রশিদ সোয়েব, ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক ডা. হরিধন দাস, যুব ইউনিয়ন সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক নিরঞ্জন দাস খোকন, মহিলা ফোরামের জেলা সভাপতি মাসুমা খানম, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোখলেসুর রহমান, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নেতা মামুন বেপারি, ছাত্র ফ্রন্ট নগরের সভাপতি সঞ্জয় কান্ত দাস, ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক নাহিদ হাসান প্রান্তিক, ছাত্র ইউনিয়ন আহ্বায়ক মনীষা ওয়াহিদ প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, এই হরতাল ছিল জান বাঁচানোর হরতাল। মানুষ বিভিন্ন ভাবে আমাদের এই হরতালে স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করে হরতাল সফল করেছেন। তাই আমরা সিলেটবাসীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
তারা আরও বলেন, ‘চাল-ডাল-পিঁয়াজ-সিলিন্ডার গ্যাসসহ অতি জরুরি খাদ্যদ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের যা দাম বেড়েছে; দেশে তার তুলনায় অনেক বেশি দাম বাড়ানো হয়েছে। আর গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির দাম বাড়ানো হচ্ছে পুরোপুরি খামখেয়ালিভাবে। এসব খাতের চুরি, দুর্নীতি, লুটপাট আর অব্যবস্থাপনার দায় চাপানো হচ্ছে ভোক্তাদের ওপর। আসলে সরকার ও অসৎ ব্যবসায়ীরা এক মহাসিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। কথিত উন্নয়নের কথা বলে নিজেদের চুরি, দুর্নীতি ও লুটপাটকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। এভাবে সঙ্কীর্ণ স্বার্থে দেশ ও জনগণকে তারা অনিশ্চিত অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। এ অবস্থায় আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া এ থেকে মুক্তি নেই।’
দেশের বিভিন্ন স্থানে হরতালে পুলিশি হামলার নিন্দা জানিয়ে বক্তারা বলেন, ”সরকার গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করছে। হরতালের মতো একটি গণতান্ত্রিক কর্মসূচি সারাদেশে বাম জোটের নেতাকর্মীদের ওপর ন্যাক্কারজনকভাবে হামলা করেছে। কিন্তু সিলেটসহ সারা দেশেই বাম নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ ভাবে হরতাল পালন করেছন।
নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘সরকার যদি মনে করে হামলা করে, মামল দিয়ে, আটক করে আমাদের আন্দোলন বন্ধ করে দিবে তাহলে তারা ভুল করছে। যতদিন পর্যন্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে আসছে না, দেশে গণতন্ত্র ফিরছে না বামজোট রাস্তা থাকবে।’ বিজ্ঞপ্তি