রমজানের অজুহাতে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধের প্রতিবাদে সিলেটে সমাবেশ

8
রমজানের অজুহাতে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ এবং বেতন বোনাসের দাবিতে সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের বিক্ষোভ মিছিল।

আসন্ন সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান মাস। রমজান মাস আসলেই হোটেল রেস্টুরেন্টে কর্মরত শ্রমিকদের দুঃখের সীমা থাকে না। রমজানের পবিত্রতার নামে হোটেল রেস্টুরেন্টে শ্রমিক ছাঁটাই করে শ্রমিকদের বিনা বেতনে বেআইনিভাবে ছাঁটাই করা হয়। রমজানের অজুহাতে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ এবং বেতন বোনাসের দাবিতে সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন এর এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার (২৩ মার্চ) বিকেল ৪টায় ক্বীন ব্রিজের (উত্তর পার) মুখ হতে শুরু করে মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিলেট ঐতিহাসিক কোর্ট পয়েন্টে এক সমাবেশে মিলিত হয়।
সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন এর সহ-সভাপতি মোঃ মনির মিয়ার সভাপতিত্বে এবং দপ্তর সম্পাদক বদরুল আজাদ এর পরিচালনায় সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহীন আলম।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক রমজান আলী পটু, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ খোকন আহমদ, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনছার আলী, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ইমান আলী, শাহপরান থানা কমিটির সভাপতি মোঃ জয়নাল মিয়া, বন্দর বাজার আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মোঃ আনোয়ার হোসেন, আম্বরখানা আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি রাশেদ আহমদ ভূঁইয়া, জিন্দাবাজার আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনোয়ার হোসেন, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কমিটির প্রচার সম্পাদক সুনু মিয়া, চন্ডিপুল আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমদ, কদমতলী আঞ্চলিক কমিটির প্রচার সম্পাদক এনাম আহমদ, তালতলা আঞ্চলিক কমিটির সহ-সভাপতি সাহাব উদ্দিন সহ প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, হোটেল শ্রমিকরা বছরের ১১ মাস হোটেল রেস্টুরেন্টে কাজ করলেও রমজান মাস আসলে রমজানের পবিত্রতা রক্ষার নামে অমানবিক এবং বেআইনি ভাবে হোটেল শ্রমিকদের ছাঁটাই করে দেওয়া হয়। সারা বছর শ্রমিকরা মালিকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করে তাদের মুনাফা বানিয়ে দিলেও রমজান মাস আসলে মালিকরা শ্রমিকদের বিদায় করে দেন। মানবিক, ধর্মীয়, আইনী যেইভাবেই দেখা হউক না কেনো হোটেল মালিকদের এধরনের আচরণ অসধাচরণ এর শামিল। যে শ্রমিক সারা বছর উনার প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন সেখানে মালিক রমজানের বেতন এবং ঈদ বোনাস দেওয়ার কথা থাকলেও মালিক তা দেন না। বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে যেখানে একজন শ্রমিকের চাকরি করে পরিবার চালানো কষ্টসাধ্য সেখানে একজন হোটেল শ্রমিক দীর্ঘ এক মাস কিভাবে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে চলবে? প্রতিনিয়ত লাগামহীন ভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যে মূল্যের লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে চলছে। সেখানে শ্রমিক ছাঁটাই করলে হোটেল শ্রমিকদের উপর ‘মরার উপর খাঁড়া ঘাঁ’ হয়ে দাঁড়াবে। তাই বক্তারা সকল হোটেল মালিকদের আসন্ন রমজান মাসে বেতন এবং রমজান পরবর্তী ঈদ বোনাস প্রদানের দাবি জানিয়ে আরো বলেন, করোনা মহামারীর কারণে হোটেল সেক্টরে এমনিতেই শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে সেখানে আবার আসন্ন রমজানে যারা চাকরিতে নিয়োজিত তাদেরকে আরেক দফা ছাঁটাই করা হলে এই শ্রমিকরা কোথায় যাবে? এ অবস্থায় ছাঁটাই-নির্যাতন বন্ধ, সকল বকেয়া মজুরি পরিশোধ, উৎসব বোনাস ও সবেতনে ছুটি প্রদানের জন্য মালিকদের প্রতি আহবান জানান। একই সাথে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বাজারদরের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ মজুরি নির্ধারণ, সর্বাত্মক রেশনিং ব্যবস্থা চালু, বেকার শ্রমিকদের বেকার ভাতা ইত্যাদি দাবিতে আরো জোরদার সংগঠন-সংগ্রাম গড়ে তোলার আহবান জানান। বিজ্ঞপ্তি