বিশেষ সিম ব্যবহার করে মোটরসাইকেল চুরি, চোর চক্রের ৩ সদস্য গ্রেফতার

14
আটক দুই চোর ও উদ্ধারকৃত মালামাল।

স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেটে কিছুদিন পরপরই শোনা যায়, এ জায়গা- ও জায়গা থেকে চুরি হয়েছে মোটরসাইকেল। পরে কোনোটির হদিস মিলে, কোনোটির মিলে না। এভাবেই গত বুধবার ১৬ মার্চ সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলা কমপ্লেক্সের সামনে থেকে এক সরকারি কর্মকর্তার মোটরসাইকেল চুরি হয়।
সেই মোটরসাইকেল ও চোরদের খুঁজতে গিয়ে পুলিশ পায় চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ জানতে পারে, সিলেটজুড়ে সক্রিয় থাকা চোর চক্রের সদস্যরা মোটরসাইকেলের তালা খুলতে ব্যবহার করেন বিশেষ এক ধরনের চাবি। সে চাবিকে চোরেরা তাদের সাংকেতিক ভাষায় ডাকে ‘সিম’ নামে। এই বিশেষ ‘সিম’র মাধ্যমে তারা যে কোনো ধরনের মোটরসাইকেলের লক খুলে ফেলতে পারে।
সিলেট জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্ ও মিডিয়া অফিসার) মো. লুৎফর রহমান জানান, গত বুধবার বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৪টার মধ্যবর্তী সময়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তার অফিসের নামে বরাদ্দকৃত হিরো হাংক মডেলের লাল রংয়ের ১টি মোটরসাইকেল উপজেলা কমপ্লেক্সের সামন থেকে চুরি হয়। এ ঘটনায় পরবর্তীতে বিয়ানীবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ঘটনার পর সিলেট জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম-এর নির্দেশে জকিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসাইনের তত্ত্বাবধানে এবং বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ হিল্লোল রায়ের নেতৃত্বে থানার একদল পুলিশ অভিযান চালায়। অভিযানের এক পর্যায়ে গত শুক্রবার ১৮ মার্চ রাত ৮টার দিকে সিলেট নগরীর চৌহাট্টা থেকে দুইজন মোটরসাইকেল চোর গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন=- সুনামগঞ্জ জেলার আনোয়ারপুর গ্রামের ইসলাম উদ্দিন তালুকদারের পুত্র মো. ফয়েজ তালুকদার (৩০) ও সিলেটের জালালাবাদ থানার কুমারগাঁও এলাকার শেখপাড়া গ্রামের তরান মিয়ার পুত্র শুক্কুর মিয়া (২৫)। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বালাগঞ্জ থানার পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের আজিজপুর বাজার থেকে আলী হাসান নামের আরেক মোটরসাইকেল চোরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আলী হাসান বালাগঞ্জের তালতলা গ্রামের নেওয়াজ মিয়ার পুত্র। গ্রেফতারকৃতদের মধ্য থেকে ফয়েজ তালুকদারের বিরুদ্ধে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ ও মৌলভীবাজার এবং সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় মোট ৮টি ও শুক্কুরের বিরুদ্ধে ৩ টি চুরির মামলা রয়েছে। ফয়েজ ও শুক্কুর আন্তঃবিভাগীয় মোটরসাইকেল চোর দলের সক্রিয় সদস্য।
চোরদের আটক করার সময় তাদের কাছ থেকে কয়েকটি বিশেষ চাবি পাওয়া যায়। যেসব চাবি দিয়ে যে কোনো মোটরসাইকেলের লক খুলে ফেলে চোরেরা। মোটরসাইকেল চোর চক্রের কাছে এটা ‘সিম’ নামে পরিচিত। এই ‘সিম’ সিলেটেরই এক ব্যক্তি চোরদের কাছে সরবরাহ করে বলে জানা গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এ মুহুর্তে তার নাম প্রকাশ করছে না পুলিশ।
সিলেট জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার মো. লুৎফর রহমান বলেন, গ্রেফতারকৃতদের গতকাল শনিবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আর যে ব্যক্তি চোরদের চাবি সরবরাহ করে তাকে ঘিরে জাল গুটিয়ে আনছে পুলিশ। যে কোনো সময় গ্রেফতার করা হবে তাকে।