সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আর নেই ॥ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক

8

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ আর নেই। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি …..রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
নব্বইয়ের গণআন্দোলনের পর বাংলাদেশের গণতন্ত্রে ফেরার প্রক্রিয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনকারী সাহাবুদ্দীন আহমদ পরে ১৯৯৬ সালে পুনরায় রাষ্ট্রপ্রধানের পদে ফিরেছিলেন। ২০০১ সালে বঙ্গভবন থেকে বিদায় নেয়ার পর ঢাকার গুলশানের বাড়িতে অনেকটা নিভৃত জীবনযাপন করছিলেন সাহাবুদ্দীন আহমদ। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন অসুস্থতায় ভুগছিলেন। মাসখানেক আগে তাকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। সেখানেই শনিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে সাহাবুদ্দীনের মৃত্যু হয় বলে তার জামাতা অধ্যাপক আহাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী জানিয়েছেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সাবেক রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের দাফন হবে আজ রবিবার। তাকে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে। সাহাবুদ্দীন আহমদের প্রথম জানাযা শনিবার বিকেলে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় নিজ গ্রাম পেমইতে অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হেলিকপ্টারে সাহাবুদ্দীন আহমদের মরদেহ কেন্দুয়া হেলিপ্যাড মাঠে নেয়া হয়। পরে সেখান থেকে এ্যাম্বুলেন্সে মরদেহ নিজ গ্রামে নেয়া হয়। বিকেল চারটায় সেখানে প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। হাজার হাজার শোকার্ত মানুষ জানাযায় অংশ নেন। সেখানে গার্ড অব অনার প্রদান শেষে নামাজে জানাযায় ইমামতি করেন স্থানীয় মসজিদের খতিব মাওলানা শহিদুল ইসলাম।
প্রথম নামাজে জানাযা শেষে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় মরদেহ ফিরিয়ে এনে রাতে সিএমএইচের মরচ্যুয়ারিতে রাখা হয়। আজ রবিবার সকাল ১০টায় বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট প্রাঙ্গণস্থ জাতীয় ঈদগাহ মাঠে তার দ্বিতীয় নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। জানাযা শেষে সাবেক এই রাষ্ট্রপ্রধানকে বনানীর কবরস্থানে তার স্ত্রীর কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।
সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের, আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
প্রয়াত প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আজ রবিবার সুপ্রীমকোর্টের বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদেশে এ বিষয়ে শনিবার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সুপ্রীমকোর্ট প্রশাসন।
দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগে ২০১৮ সালে ৮০ বছর বয়সে মারা যান সাহাবুদ্দীন আহমদের সহধর্মিণী আনোয়ারা আহমদ। পাঁচ সন্তানের মধ্যে সাহাবুদ্দীন আহমদের দুই ছেলে গুলশানের বাসায় বাবার সঙ্গেই থাকেন। তার দুই মেয়ে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার বড় ড. সীতারা পারভীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। তিনি ২০০৫ সালের ২৩ জুন যুক্তরাষ্ট্রে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।
নব্বইয়ের আন্দোলনে স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদ সরকারের পতনের নাটকীয়তার মধ্যে আকস্মিকভাবে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে আসেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ। এরশাদ পদত্যাগ করার পর রাষ্ট্রপতির পদে কে আসবে, নির্বাচন পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান কে থাকবেন- সেই প্রশ্নে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেয়া দলগুলো (তিন জোট) একমত হতে পারছিল না। পরে প্রধান বিচারপতিকে সেই দায়িত্ব দেয়ার বিষয়ে সমঝোতা হয়। আবার সুপ্রীমকোর্টে ফেরার শর্ত দিয়ে সাহাবুদ্দীন আহমদ তাতে রাজি হন।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ উপ-রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলে সেই দায়িত্বে আসেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ। ৬ ডিসেম্বর এরশাদ ক্ষমতা ছাড়লে সাহাবুদ্দীন আহমদ হন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি। পরে তার নেতৃত্বাধীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। নির্বাচনের পর আবার প্রধান বিচারপতির পদে ফেরেন তিনি। তার সেই ফেরার জন্য দেশের সংবিধানেও পরিবর্তন আনতে হয়েছিল। চাকরির মেয়াদ শেষে ওই পদ থেকেই অবসরে যান তিনি।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই দলের প্রার্থী হিসেবে সংসদীয় সরকার পদ্ধতিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সাহাবুদ্দীন আহমদ। ২০০১ সালের ১৪ নবেম্বর পর্যন্ত তিনি সেই দায়িত্বে ছিলেন। জানা গেছে, বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজের পরিবারের প্রতিদিনকার বাজারের খরচ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে নিতেন না প্রয়াত সাহাবুদ্দীন আহমদ। বঙ্গভবনের মার্কেট ম্যান বা পরিবারের কারও মাধ্যমে নিজের পকেট থেকে বাজারের টাকা দিতেন তিনি। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে ১১ মাস দায়িত্ব পালন করলেও বঙ্গভবনে ছিলেন না সাহাবুদ্দীন আহমদ।
বাংলাদেশের ষষ্ঠ প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীনের জন্ম ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার পেমই গ্রামে। তার বাবার নাম তালুকদার রিসাত আহমেদ। সাহাবুদ্দীন আহমদ ১৯৪৫ সালে নান্দাইলের চন্ডীপাশা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৪৮ সালে কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল কলেজ থেকে আইএ পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫১ সালে অর্থনীতিতে বিএ (অনার্স) এবং ১৯৫২ সালে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নেন তিনি। ১৯৫৪ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের (সিএসপি) প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কর্মজীবন শুরু হয় সাহাবুদ্দীন আহমদের। ম্যাজিস্ট্রেট, মহুকুমা প্রশাসক এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৬০ সালে প্রশাসন থেকে বিচার বিভাগে বদলি হন তিনি। তিনি ঢাকা ও বরিশালে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৬৭ সালে ঢাকা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ পান সাহাবুদ্দীন আহমদ। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে হাইকোর্টের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। ১৯৮০ সালে আপীল বিভাগে বিচারকের দায়িত্ব পান তিনি। বিচারপতি হিসেবে তার প্রদত্ত বহু সংখ্যক রায় প্রশংসিত। বাংলাদেশ সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর ওপর তার প্রদত্ত রায় দেশের শাসনতান্ত্রিক বিকাশের ক্ষেত্রে এক অনন্য ঘটনা হিসেবে স্বীকৃত।
এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮৩ সালের মধ্য ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে হতাহতের ঘটনা তদন্তে যে কমিটি হয়েছিল, বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ সেই কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৭৮ সালের আগস্ট থেকে ১৯৮২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ রেড ক্রস সোসাইটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা হয়।
সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান সাহাবুদ্দীন আহমদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, বিদ্যুত ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের প্রধান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডাঃ একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
নেত্রকোনায় হাজারো মানুষের ঢল : নেত্রকোনার কেন্দুয়ার পাইকুরা ইউনিয়নের পেমই গ্রামে শনিবার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের সময় সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমেদের প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাযায় পেমই ছাড়াও বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার লোক অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে বিকেল তিনটায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে সাবেক রাষ্ট্রপতির মরদেহ কেন্দুয়া উপজেলা সদরের আদমপুর এলাকার হেলিপ্যাডে আনা হয়। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক জিয়া আহমেদ সুমন এবং পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী ছাড়াও কেন্দুয়া উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা সাবেক রাষ্ট্রপতির মরদেহ গ্রহণ করেন। এরপর স্বাস্থ্য বিভাগের একটি এ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহটি সাত কিলোমিটার দূরের পেমই গ্রামে সাবেক রাষ্ট্রপতির বাড়িতে নেয়া হয়। সেখানে আগে থেকেই জড়ো হয়েছিলেন অন্তত তিন-চার হাজার মানুষ। এ্যাম্বুলেন্স থেকে বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটের সময় মরদেহের কফিনটি তার গ্রামের বাড়ির সামনে নামানো হয়।
এরপর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক জিয়া আহমেদ সুমন, পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী, কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মঈনউদ্দিন খন্দকার, কেন্দুয়া পৌরসভার মেয়র আসাদুল হক ভূঁইয়াসহ এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে জেলা পুলিশের একটি দল সাবেক রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার প্রদর্শন করেন। বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে মুফতি শহিদুল ইসলামের পরিচালনায় ওই বাড়িতেই (সাবেক রাষ্ট্রপতির) অনুষ্ঠিত হয় প্রথম জানাযা। জানাযার আগে সাবেক রাষ্ট্রপতির ছোট ছেলে সোহেল আহমেদ তার বাবার জন্য এলাকাবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘বাবা সারাজীবন সাদামাটা জীবনযাপন করেছেন। তার কোন রকম উচ্চাকাক্সক্ষা ছিল না। নীতি-আদর্শের বাইরে তিনি কোনকিছু করেননি। তিনি আমাদেরও সে শিক্ষাই দিয়ে গেছেন। দোয়া করবেন যাতে আমরাও বাবার আদর্শকে ধারণ করেই চলতে পারি।’ সোহেল আরও বলেন, ‘বাবার শেষ ইচ্ছা ছিল একবার গ্রামের বাড়িতে আসার। কিন্তু আমরা তার শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে পারিনি।’ সোহেল আহমেদ ছাড়াও তার স্ত্রী আমিনা ইশরাত ও তাদের ছেলে এজাজ আহমেদ মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন।
পেমই গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক খোরশেদ আলী জানান, সাহাবুদ্দীন সাহেব বাড়িতে এসেও খুব সাধারণভাবে চলাফেরা করতেন। তাকে দেখে কখনও মনে হতো না তিনি এতবড় মানুষ ছিলেন। সাধারণ পোশাক পরিচ্ছেদ পরেই তিনি সবার সঙ্গে মিশতেন, খেত-খলা দেখতেন। বাল্যবেলার বন্ধুদের খোঁজখবর নিতেন। কেউ তার সাহায্য চাইলে তিনি নৈতিকভাবে যদি সম্ভব হতো তবেই করতেন। কোনরূপ অন্যায় আবদার গ্রহণ করতেন না। তাকে নিয়ে আমরা সবসময় গর্ব করি।
খোরশেদ আলী বলেন, ‘সাহাবুদ্দীন সাহেব বলতেন আমি সারা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রতি। কোন নির্দিষ্ট এলাকার নই। তাই রাষ্ট্রের সামর্থ্য অনুযায়ী সারাদেশের মানুষের কথাই আমাকে ভাবতে হবে।’