ঝিমাই চা বাগান নিয়ে খাসিয়াদের অপতৎপরতা বন্ধ হচ্ছে না

7

কুলাউড়া থেকে সংবাদদাতা :
কুলাউড়া উপজেলার ঝিমাই চা বাগানের ভূমিতে বসবাসরত কতিপয় খাসিয়ারা নতুন করে নাটকীয়তার আশ্রয় নিয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে বিনা বাধায় ঝিমাই চা বাগানের রাস্তা দিয়ে রোগী পরিবহনের গাড়ী ব্যবহার করে আসলেও সম্প্রতি আশ্রয় নিয়েছে নানা নাটকীয়তার। আসলে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষনের কৌশল হিসাবে খাসিয়ারা গাড়ী যোগে রোগী পরিবহন না করে কাঁধে করে রোগী পরিবহন করে নাটকীয়তা করায় বিস্নিত হয়েছেন সচেতনমহল।
ঝিমাই চা বাগান কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের বাগানের জায়গায় বসবাসরত খাসিয়ারা সবসময়ই বাগানের প্রবেশের রাস্তা দিয়ে বাগানের অনুমতি নিয়ে গাড়ী পুঞ্জিতে নিয়ে যেতো। বিশেষ করে রোগী পরিবহনের ক্ষেত্রে খাসিয়ারা গেইটম্যানকে বললেই গেইট খুলে দিত এবং দীর্ঘদিন থেকে বিনা বাধায় গাড়ীযোগে রোগী পরিবহন করে আসছে তারা। যদিও অবাধ চলাচলের সুযোগে ঝিমাই চা বাগানে বারবার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে। প্রায় ১ যুগ পূর্বে বাগানের নাইড গার্ড খুনের ঘটনাও বাগানে ঘটেছে। আজ অবধি সেই খুনের রহস্য উদঘাটিত হয়নি। তাছাড়া বাগানের অভ্যন্তরের শত শত গাছ,চা পাতাসহ সরাঞ্জামানাদি এবং সর্বোপরি শত শত চা শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিরাপত্তা বেষ্টনীর চেষ্টা হিসাবে বাগানের প্রবেশদ্বারে গেইট এবং গেইটম্যান পাহারার দায়িত্বে থাকায় ঝিমাই পুঞ্জির খাসিয়াদের যেনো তাও সহ্য হচ্ছেনা। তারা চায় অবাধ চলাচল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝিমাই পুঞ্জির যে জায়গায় তারা বসবাস করছে সে জায়গার মালিক হলেন সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক। আর জেলা প্রশাসক চা চাষের জন্য ঝিমাই চা বাগান কর্তৃপক্ষকে লিজ প্রদান করেছেন। চা বোর্ডের নীতিমালার আলোকে বৈদেশিক রপ্তানিকারন চা শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে লিজকৃত জায়গায় কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে বাগান কর্তৃপক্ষ চা চাষ এবং চা পাতা দেশ বিদেশে বিক্রি করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। যথা নিয়মে সরকারের সকল ট্যাক্স ভ্যাট পরিশোধ সাপেক্ষে চা শিল্পের যন্ত্রপাতি ক্রয়, চা চাষ ও বিক্রি তথা শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন ভাতা পরিশোধ করে আসছে। কিন্তু বাগানের লিজকৃত একটি বিশাল জায়গায় ৪০/৪৫ টি খাসিয়া পরিবার বসতি স্থাপন করে কয়েকশ একর জায়গায় পান ঝুম প্রতিষ্টা করে তাদের দখলে নিয়ে যাওয়ায় এবং চা বাগানের জায়গায় চা সম্প্রসারণে বাধা দেওয়ার কারণে ঝিমাই বাগানটি প্রতিবছর আশাতীত লাভের মুখ দেখতে পারছে না।
অথচ বাগানের লিজকৃত জায়গার মধ্যে বিনা খাজনা, বিনা ট্যাক্স, বিনা দলিল তথা কোন ধরনের বৈধ কাগজপত্র না থাকার পরও ঝিমাইতে বসবাসরত খাসিয়াদের আগ্রাসী তৎপরতায় হুমকির মুখে পড়েছে চা বাগানের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন। সচেতন মহলের মতে ঝিমাই বাগানের অভ্যন্তরের খাসিয়াদের আগ্রাসী তৎপরতা রোধ করা সম্ভব না হলে চা শিল্পের জন্য হবে এটা একটা অশনি সংকেত।
এদিকে কুলাউড়ার কর্মধায় বনবিভাগের সামাজিক বনায়ন খাসিয়া কর্তৃক জ্বালিয়ে দেওয়া, বাঙালিদের মারধর এবং পরবর্তীতে খাসিয়াদেরকে পাকড়াও করার ঘটনায় মামলা পাল্টা মামলার বিষয়ে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এক সম্প্রীতি সমাবেশে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেছিলেন, ভূমির অধিকারের কথা বলে রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। সরকারের নিয়মনীতি বিধি বিধান সবাইকে মেনে চলতে হবে। তিনি হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেছিলেন, বন বিভাগ সরকারের কোটি কোটি রাজস্ব আয়ের একটি বিভাগ। তারা তাদের কাজ করবে। কেউ বাধা দিলে তা হবে রাষ্ট্রের কর্মকান্ডে বাধা।