শান্তিগঞ্জে পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগে লাশ নিয়ে তিন ঘণ্টা সড়ক অবরোধ

9

শান্তিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
পুলিশের নির্যাতনে উজির মিয়া নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তির দাবিতে লাশ নিয়ে সোমবার তিন ঘণ্টা সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ক অবরোধ করেছেন এলাকাবাসী। পরে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় এলাকাবাসী।
মৃত উজির মিয়ার বাড়ী জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিমা পাগলা ইউনিয়নের শত্রুমর্দন গ্রামে। সোমবার বেলা ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলাবাজার এলাকায় সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে এই অবরোধ হয়। এতে সড়কের দুই দিকে শতশত যানবাহন আটকা পড়ে।
মৃত উজির মিয়ার ছোট ভাই ডালিম মিয়া জানান, উজির মিয়া ব্যবসা করেন। গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে বাড়ি থেকে উজির মিয়াকে ধরে নিয়ে যায় শান্তিগঞ্জ থানার কয়েকজন পুলিশ। তাকে থানায় নিয়ে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়। পরিদন তাকে একটি চুরির মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। ওইদিনই আদালত থেকে উজির মিয়াকে তারা জামিনে মুক্ত করে নিযে আসেন। বাড়িতে নিয়ে আসার পর উজির মিয়ার পুরো শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখতে পান তারা। এরপর উজির মিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পাঁচদিন চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হলে তাকে আবার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সোমবার সকালে তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্থানীয় কৈতক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর লাশ নিয়ে পাগলাবাজার এলাকায় এলে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পরে সড়কের ওপর লাশ রেখেই সড়ক অবরোধ করেন লোকজন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও তাতে যোগ দেন। এ সময় দোষী পুলিশ সদস্যদের বিচারের দাবিতে বক্তব্য ও স্লোগান দেন তারা। অবরোধ চলাকালীন সময়ে হঠাৎ করে শান্তিগঞ্জ উপজেলার ইউএনও মোঃ আনোয়ার উজ জামান এসিল্যান্ড অফিসের গাড়ী নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তখন বিক্ষুব্ধ জনতা গাড়ীতে পুলিশের লোক আছে মনে করে গাড়ীটিকে আটকাতে চাইলে মৃত লাশের উপর দিয়ে গাড়ী চালিয়ে যান ইউএনও।
ডালিম মিয়া বলেন, পুলিশ থানায় আমার ভাইকে নির্যাতনের পর বলেছিল সে নাকি এক সপ্তাহ বাঁচবে। পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পুলিশ আমার নিরিহ ভাইকে নির্যাতন করে মেরেছে। এতে শান্তিগঞ্জ থানার তিনজন এসআই জড়িত।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষেদর চেয়ারম্যান মো. ফারুক আহমদ বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয় বিদারক। পুরো এলাকার মানুষ ক্ষোব্ধ। আমরা অবশ্যই এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি চাই।
অবরোধ চলাকালে বিকেল সাড়ে চারটায় ঘটনাস্থলে যান সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার উল হালিম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ। এই দুজন এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং আইনি প্রক্রিয়ায় দোষীদের বিচারের আশ্বাস দিলে বিকেল পাঁচটায় অবরোধ তুলে নেন লোকজন