তালতলায় নকল স্বর্ণ দিয়ে প্রতারণা চক্রের সদস্য মুরাদ গ্রেফতার

7

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর তালতলা এলাকা নকল স্বর্ণ দিয়ে প্রতারক চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত শনিবার দুপুরে দিলশাদ সিনেমা হলের সামন থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতের নাম, মুরাদ আহমদ মুরাদ (২৭)। সে সুনামগঞ্জের দিরাই থানার ভাটিপাড়া গ্রামের সমছুন নুরের পুত্র। এ সময় মুরাদের আরো ৩ সহযোগী প্রতারক পালিয়ে যায়।
ভয়ঙ্কর এই মুরাদ চক্রের প্রতারকরা সিএনজি অটোরিক্সা নিয়ে সিলেট শহর ঘুরে বেড়ায়। নকল স্বর্ণ দেখিয়ে টার্গেট করে সহজ-সরল মানুষকে। বিশেষ করে তাদের লক্ষ্য থাকে নারীদের দিকে। নকল স্বর্ণের বার বা অলঙ্কার দেখিয়ে প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় আসল স্বর্ণ বা টাকা।
সিলেটে মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া ও ডিবি) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের জানান, গত ৬ ফেব্রুয়ারী সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা থানার আনন্দপুর গ্রামের হরি মোহন রায়ের স্ত্রী জয়ন্তি রানী রায় (৫২) ও তার মেয়ে পপি রানী রায় (২১) সিলেট কুমারগাঁও বাস স্ট্যান্ড থেকে সিএনজি অটোরিক্সাযোগে তাদের ভাড়া বাসা নগরীর মির্জাজাঙ্গাল স্বপ্নীল-২৪-এ আসছিলেন। ওই গাড়িতে ছিলেন সুনামগঞ্জের দিরাই থানার ভাটিপাড়া গ্রামের সমছুন নুরের পুত্র মুরাদ আহমদ মুরাদ (২৭), নগরীর মজুমদারী এলাকার আরজু মিয়ার পুত্র অয়ন (২৭), হাউজিং এ্যাস্টেট এলাকার রবিউল ওরফে লেম্বু (২২) ও সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার বাদশাগঞ্জ গ্রামের নুর মিয়া (৩২)। তারা সবাই নকল স্বর্ণ দিয়ে প্রতারণা চক্রের সক্রিয় সদস্য।
এর মধ্যে ৬ ফেব্রুয়ারি মুরাদ নামের প্রতারক জয়ন্তি রানী ও তার মেয়ে পপি রানীকে একটি নকল স্বর্ণের বার দেখিয়ে আসল স্বর্ণ বলে দাবি করে। এক পর্যায়ে জয়ন্তি রানী ও তার মেয়েকে সেটি আসল স্বর্ণ বলে বিশ্বাস করিয়ে ফেলে। প্রতারকদের প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে এসময় জয়ন্তি রানী তার পরনে থাকা কানের দুল ও কানটানা স্বর্ণের (১ লক্ষ টাকা ৩ হাজার টাকা দামের) অলংকার প্রতারকদের দিয়ে দেন। বিনিময়ে প্রতারক মুরাদের কাছ থেকে নেন নকল স্বর্ণের ওই বার। বিষয়টি বাসায় এসে বুঝতে পারেন জয়ন্তি রানী। পরবর্তীতে শনিবার দুপুরে তিনি হঠাৎ মুরাদসহ তার সহযোগী প্রতারকদের আগের সেই সিএনজি অটোরিক্সাসহ নগরীর বাগবাড়ি এলাকার বর্ণমালা পয়েন্টে দেখতে পান। পরে জয়ন্তি রানী ধাওয়া করে নগরীর তালতলা পয়েন্টের কাছে দিলশাদ সিনেমা হলের সামনে এসে তাদের গ্রেফতার করেন। এ সময় তিনি ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশে খবর দিলে কোতয়ালি থানার টহলরত একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতারক মুরাদকে গ্রেফতার করে। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মুরাদের আরো ৩ সহযোগী পালিয়ে যায়। এ সময়র প্রতারক মুরাদের কাছ থেকে ১ পিস নকল স্বর্ণের বার জব্দ করে পুলিশ। ওই বারের মধ্যে ২২ক লেখা। এছাড়াও প্রতারকদের ব্যবহৃত সিএনজি অটোরিক্সাও জব্দ করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে কোতোয়ালি থানা পুলিশ জব্দকৃত গাড়ি ও নকল স্বর্ণসহ মুরাদকে জালালাবাদ থানায় হস্তান্তর করে। এ ঘটনায় জয়ন্তি রানী রায়ের মেয়ে পপি রানী রায় শনিবার রাতে জালালাবাদ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে গতকাল রবিবার প্রতারক মুরাদকে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ।