কামালবাজারে নির্বাচনী সহিংসতায় হামলায় নিহত যুবকের দাফন সম্পন্ন

4

স্টাফ রিপোর্টার :
৬ষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচনের দিন গত ৩১ জানুয়ারি সোমবার দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কামালবাজার ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুবরণকারী যুবক মারুফ আহমদের জানাযা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার ৭ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০ টায় কামাল বাজারের গুপ্তরগাঁওস্থ বাড়ির পূর্বের মাঠে হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে জানাযা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
জানাযার পূর্বে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রখেন সিলেট ৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের পক্ষে তাঁর বড় ভাই গ্রেটার কামালবাজার ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট ইউকে’র চেয়ারপারসন এমদাদুর রহমান এমদাদ, সিলেট জেলা পরিষদের সদস্য মতিউর রহমান মতি, দক্ষিণ সুরমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল হাসান তালুকদার, কামালবাজার ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ইকরামুল হক, মরহুমের পরিবারের পক্ষে বক্তব্য রাখেন তার চাচা মাসিক বাসিয়া সম্পাদক গীতিকার মোহাম্মদ নওয়াব আলী। জানাযায় ইমামতি করেন মাওলানা আব্দুল মতিন।
এর আগে ৩১ জানুয়ারি সোমবার দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কামালবাজার ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে ৫ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ঢাকার একটি বেসরকারী হাসপাতালে গত শনিবার দুপুর আড়াইটায় মারুফ আহমদ মৃত্যুবরণ করেন। তিনি গুপ্তরগাঁও গ্রামের মোঃ ছোয়াব আলীর ছোট পুত্র।
জানা যায়, ৬ষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচনের দিন গত ৩১ জানুয়ারি সোমবার দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কামালবাজার ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্য পদে মোঃ ছোয়াব আলীর বাড়িতে অতর্কিত ভাবে হামলা চালিয়ে মারুফ আহমদসহ ৫/৬ জনকে গুরুতর আহত করেন অপর প্রার্থী রাজু আহমদের সমর্থকেরা। পরবর্তীতে মোঃ ছোয়াব আলীর পক্ষ থেকে এই হামলাকে পরিকল্পিত বলে দাবী করা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ৩১ জানুয়ারি কামালবাজার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন সুষ্টু ভাবে সম্পন্ন হয়। নির্বাচনে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্য পদে মোঃ ছোয়াব আলী ফুটবল প্রতিকে নির্বাচন করে ১১২ ভোট পান। অপর দিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমির আলী তালা প্রতিকে সমান সংখক ভোট পান। একই ওয়ার্ডে রাজু আহমদ আপেল প্রতিকে ১১০ ভোট পান।
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর সুফি আহমদ, ফয়জুল হক, মাহমুদুল হাসান রাজু, জহুর আলী ও নুরুল আমিনের নেতৃত্বে মোঃ ছোয়াব আলীর বাড়িতে হামলা করা হয়। এতে মোঃ ছোয়াব আলীর পুত্র মারুফ আহমদসহ পরিবারের ৫/৬ জন গুরুতর আহত হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত মারুফ আহমদকে প্রথমে সিলেটে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। এখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়াতে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়।
আহত মারুফ আহমদের চাচা মোহাম্মদ নওয়াব আলী জানান, তাদের সাথে হামলাকারীদের পূর্বের বিরোধ রয়েছে। হামলাকারীরা পূর্বে দিনে-দুপুরে তাদের বাড়ির সীমানা পিলার তুলে নেয়। তাছাড়া, তারা কবরস্থানের জায়গার মাঠ জরিপের কাগজ থেকে মোঃ ছোয়াব আলী তার চাচার পরিবারের নাম কেটে দেয়। এছাড়াও মোঃ ছোয়াব আলীদের মৌরশি জায়গা তাদের নামে করে নেয়। তিনি জানান, হামলাকারী সুফি আহমদ ছাত্রলীগ ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের ভাগনে পরিচয় দিয়ে এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করে বেড়ায়। এদিকে, হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়। মঙ্গলবার ১ ফেব্রুয়ারি মামলাটি দায়ের করেন কামালবাজার ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী মোঃ ছোয়াব আলী। এই মামলায় তালিকাভুক্ত ৩ আসামীকে গ্রেফতার করা হলেও পরে ২ জন জামিনে বেড়িয়ে আসে।
এ বিষয়ে দক্ষিণ সুরমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল হাসান তালুকদার বলেন, এই মামলায় তালিকাভুক্ত প্রথমে ৩ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং পরে আরও একজনকে সন্দেজনক ভাবে গ্রেফতার করা হয়। তালিকাভুক্ত ২জন জামিনে আছে শুনলেও এরকম কোন কাগজ এখনো আমাদের কাছে আসেনি।