সার্চ কমিটি গঠন, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সভাপতি ॥ ছয় সদস্যের কমিটিতে রাষ্ট্রপতি মনোনীত ২ বিশিষ্ট ব্যক্তি হচ্ছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন এবং কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক

5

কাজিরবাজার ডেস্ক :
অবশেষে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য নাম সুপারিশ করতে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’ অনুসারে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ শনিবার ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এ কমিটির সভাপতি করা হয়েছে আপীল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে। কমিটির অন্য ৫ সদস্য হলেন- হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মুসলিম চৌধুরী, সরকারী কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন এবং কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক। আইন অনুযায়ী কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ পেশ করতে হবে।
মন্ত্রীপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জাতীয় সংসদ প্রণীত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’ এর বিধান অনুযায়ী এ সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই আইন মোতাবেক কমিটি দায়িত্ব ও কার্যপ্রণালী সম্পন্ন করবে। মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ সার্চ কমিটির কার্য সম্পাদনের প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবে।
এদিকে সার্চ কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য ১০ জনের নাম সুপারিশ করতে বলা হলেও তার আগেই যে কোনদিন এ কমিটি সুপারিশ পেশ করতে পারবেন। আবার ইচ্ছে করলে তারা পুরোপুরি ১৫ কার্যদিবসই সময় নিতে পারবেন। আর রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটির কাছ থেকে সুপারিশ পাওয়ার পর ১ জনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ৪ জনকে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেবেন। সার্চ কমিটি আগে নাম দিলে রাষ্ট্রপতি দ্রুতই নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগ করতে পারবেন। তবে ১৪ ফেব্রুয়ারি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হলেও তার কিছুদিন পর নতুন কমিশন নিয়োগ দিলে তাতে আইনের কোন ব্যত্যয় হবে না। এ ছাড়া দেশে এর আগেও নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কিছুদিন পর নতুন কমিশনের দায়িত্ব নেয়ার রেয়াজ আছে।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে কেউ কেউ বলছেন, নতুন আইন অনুসারে এখনও সার্চ কমিটির সুপারিশকৃত নাম থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাষ্ট্রপতির নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগের সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সার্চ কমিটিকে অতিদ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে সুপারিশকৃত নামের তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে দিতে হবে। কারণ, আইনে সার্চ কমিটি গঠনের ১৫ দিনের মধ্যে নামের তালিকা চূড়ান্ত করার কথা থাকলেও ১৫ দিনের আগে যে কোনদিন কমিটি তাদের কাজ শেষ করতে পারবেন। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যেই সার্চ কমিটি বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারির আগেই ১০ জনের নামের তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে দিতে পারবেন। আর রাষ্ট্রপতিও সার্চ কমিটির কাছ থেকে নামের তালিকা পাওয়ার পর ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দিতে পারবেন।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব না নিতে পারলেও কোন সমস্যা নেই। যেদিন থেকে নতুন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেবে সেদিন থেকে তাদের কার্যকাল শুরু হবে। আর নতুন ইসি দায়িত্ব নেয়ার আগ পর্যন্ত কমিশন সচিবের নেতৃত্বে স্থায়ী কর্মচারীরা রুটিন কাজ চালিয়ে যাবেন। তবে তারা কোন নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এই প্রথম আইন প্রণয়ন করে সেই আইনের বলে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হচ্ছে। তাই বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন সার্চ কমিটিকে স্বাগত জানিয়েছে। আবার বিএনপিসহ কোন কোন রাজনৈতিক দল সমালোচনাও করেছে। এর আগে সার্চ কমিটির সুপারিশ অনুসারে ২০১৭ সালে ৫ বছরের জন্য গঠন করা হয়েছিল বর্তমান নির্বাচন কমিশন। ওই নির্বাচন কমিশন ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। উল্লেখ্য, এবারের সার্চ কমিটির সভাপতি পদে দায়িত্ব পাওয়া আপীল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটিরও সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সার্চ কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতি আমার এবং সার্চ কমিটির সদস্যদের ওপর যে আস্থা রেখেছেন সেজন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমরা সংবিধান ও আইন অনুযায়ী নিষ্ঠার সঙ্গে আমাদের দায়িত্ব পালন করব। শীঘ্রই কমিটির অন্য সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করব।
‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’ অনুসারে সার্চ কমিটি স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করবে। আইনে বেঁধে দেয়া যোগ্যতা, অযোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সুনাম বিবেচনা করে সিইসি ও ইসি পদে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে। কমিটি গঠনের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিতে হবে। তবে হাতে সময় কম থাকায় এবারের সার্চ কমিটি ইচ্ছে করলে ১৫ দিনের আগেই কাজ শেষ করতে পারবে। মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ সার্চ কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবে।
৬ সদস্যের সার্চ কমিটির মধ্যে কমপক্ষে ৩ জনের উপস্থিতিতে সভার কোরাম হবে। উপস্থিত সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। সভায় সভাপতিত্বকারী সদস্যের দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকবে। সার্চ কমিটি যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের অনুসন্ধান করার উদ্দেশে রাজনৈতিক দল এবং পেশাজীবী সংগঠনের নিকট হতে নাম আহ্বান করতে পারবে। সার্চ কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিযোগদানের উদ্দেশে প্রতিটি শূন্য পদের জন্য ২ জনের নাম সুপারিশ করবে।
সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার পরও আগের কোন সরকারই নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ন করেনি। বর্তমান সরকারের আমলে আইন প্রণয়ন করে সেই আইন অনুসারে নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জোরদার হয়। তাই একটি আইন করার বিষয়ে আগে থেকেই এ সরকার প্রস্তুতি শুরু করে। কিন্তু বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র ২ মাস আগেও আইন প্রণয়নের বিষয়ে সরকারের জোরালো কোন পদক্ষেপ না দেখে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও বিদেশী কূটনীতিকরা অধিকতর তৎপর হয়। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়েও ২৪টি রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশন নিয়োগে আইন প্রণয়নের জোর দাবি জানায়। ২০ ডিসেম্বর জাতীয় পার্টিকে দিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপ শুরু ও ১৭ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে শেষ হয়। এ পরিস্থিতিতে সরকার আগে থেকে ফাইল ওয়ার্ক করে রাখা আইন প্রণয়নের জন্য কাজের গতি বাড়ায়। অবশেষে সকল প্রক্রিয়া শেষ করে স্বাধীনতার ৫০ বছর পর নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার নিযোগ আইন-২০২২’ প্রণয়ন করে।
১৭ জানুয়ারি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’ এর খসড়া মন্ত্রীসভায় উত্থাপন ও অনুমোদন করা হয়। এ আইন পাসের উদ্দেশে ২৩ জানুয়ারি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জাতীয় সংসদে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ উত্থাপন করেন। ওইদিনই বিলটি যাচাই-বাছাই করে রিপোর্ট পেশ করার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে প্রেরণ করেন স্পীকার। এর পর ওই কমিটি বিলটি রিপোর্ট আকারে সংসদে উপস্থাপনের পর এর ওপর ১২ বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য ছাঁটাই ও সংশোধনী প্রস্তাব দেন। এর পর কিছু সংশোধনীসহ ২৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিলের শিরোনামেও সামান্য সংশোধন হয়। সংশোধনীসহ বিলটি পাস হয় ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ শিরোনামে। ২৯ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি এ বিলে স্বাক্ষরের মাধ্যমে এটি আইনে পরিণত হয়। ওইদিনই জাতীয় সংসদ থেকে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’ এর গেজেট প্রকাশ করা হয়।
সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে ১১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, দেশে একটি নির্বাচন কমিশন থাকিবে এবং উক্ত বিষয়ে প্রণীত কোন আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগদান করবেন। সংবিধানের ১১৮(৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকবেন এবং কেবল এই সংবিধান ও আইনের অধীন হবেন। তাই সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল ২০২২’ সংসদে উত্থাপন করেন। পরে এটি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ শিরোনামে পাস হয়।
‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’ এ উল্লেখ করা হয়েছেÑ রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারের শূন্য পদে নিয়োগদানের জন্য এ আইনে বর্ণিত যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করার জন্য ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করবেন। এর মধ্যে একজন নারী সদস্য থাকবেন। এই ৬ সদস্যের মধ্যে এক নম্বরে থাকবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগের একজন বিচারপতি, তিনি কমিটির সভাপতি হবেন। এরপর থাকবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারক এবং বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রপতি মনোনীত ২ বিশিষ্ট নাগরিক, যার মধ্যে একজন নারী।
নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার কারা হতে পারবেন এবং তাদের যোগ্যতা কি হবে সেক্ষেত্রে বলা হয়েছে, তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। বয়স কমপক্ষে ৫০ বছর হতে হবে। কোন গুরুত্বপূর্ণ সরকারী, আধা-সরকারী,স্বায়ত্ত্বশাসিত, বেসরকারী বা বিচার বিভাগীয় পদে কমপক্ষে ২০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার হওয়ার অযোগ্যতার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, আদালতের মাধ্যমে যদি কেউ অপ্রকৃতিস্থ হিসেবে ঘোষিত হন, দেউলিয়া ঘোষণার পর দেউলিয়া অবস্থা থেকে মুক্ত না হন, অন্য কোন দেশের নাগরিকত্ব অর্জন করেন বা কোন বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করেন, নৈতিক স্খলন এবং সেক্ষেত্রে যদি ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাদ-ে দ-িত হন, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) এ্যাক্ট-১৯৭৩ বা বাংলাদেশ কোলাবরেটরস (স্পেশাল ট্রাইব্যুনালস) অর্ডার-১৯৭২ এর অধীনে কোন অপরাধের জন্য দ-িত হন এবং আইনের দ্বারা পদাধিকারীকে অযোগ্য ঘোষণা করছে না, এমন পদ ব্যতীত প্রজাতন্ত্রের কর্মে লাভজনক পদে কেউ অধিষ্ঠিত থাকলে তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনার হতে পারবেন না।
‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’ এর বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগদানের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি কতৃক ইতোপূর্বে গঠিত সার্চ কমিটি ও এই কমিটি সম্পাদিত কার্যাবলী এবং এ উক্ত সার্চ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বৈধ ছিল বলে গণ্য হবে এবং উক্ত বিষয়ে কোন আদালতে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না।
দেশে এ পর্যন্ত সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে দুবার নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। ২০১২ সালে জিল্লুর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকাকালে সার্চ কমিটির মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো প্রধান নির্বাচন কমিশনসহ অন্য কমিশনারদের নিয়োগ দেয়া হয়। ২০১৭ সালে বর্তমান নির্বাচন কমিশনও সার্চ কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। আর স্বাধীনতার ৫০ বছর পর সংবিধান নির্দেশিতভাবে এবারই প্রথম জাতীয় সংসদে আইন পাস করে সে আইনের আলোকে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির সুপারিশ অনুসারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করবেন রাষ্ট্রপতি।
‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’ সম্পর্কে আইনমন্ত্রী আনিসুল বলেছেন, ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যখন রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ হয়, তখনই নির্বাচন কমিশন গঠনে আইনের বিষয়ে কথা হয়েছিল। এবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে যেসব রাজনৈতিক দল সংলাপ করতে গেছেন এবং যারা যাননি তারা সবাই নতুন আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এরপর আইন পাসের জন্য সংসদে বিল উত্থাপন করা হয় এবং সকল প্রক্রিয়া শেষ করে আইন পাস করা হয়। এ আইনের বলে ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে নাম সুপারিশ করবে। এর পর রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন।