পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় জি কে গউছ ৪০ নেতাকর্মী কারাগারে

2

হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হবিগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জি কে গউছসহ ৪০ নেতা-কর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এমএলবি মেজবাহ্ উদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার ১ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আসামিরা ৬ সপ্তাহের আগাম জামিনে ছিলেন। মঙ্গলবার তারা আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক তা বাতিল করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জি কে গউছ ছাড়াও কারাগারে পাঠানো আসামিরা হলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কাউন্সিলর আবুল হাসিম, যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট এনামুল হক সেলিম, জেলা বিএনপির সদস্য মহিবুল ইসলাম শাহীন, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি এমজি মুহিত, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল হক হেলাল, বাহুবল উপজেলা বিএনপির সভাপতি তুষার চৌধুরী।
এ ছাড়া রয়েছেন জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জালাল আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান সিতু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জহিরুল ইসলাম শরিফ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দপুর মুশফিক আহমেদ, ছাত্রদল সভাপতি এমরান আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক রুবেল আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব আহমেদ রিংগন, ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম, গোলাম মহবুব, সাইদুর রহমান, বৃন্দাবন কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম রুয়েল, সদস্য সচিব আবিদুর রহমান রাকিব, সদর থানা ছাত্রদলের সদস্যসচিব নাজমুল হোসেন অনি, চুনারুঘাট উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব মারুফ আহমেদ। চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়া এবং তার মুক্তির দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর হবিগঞ্জে বিএনপির প্রতিবাদ সভাকে কেন্দ্র করে দলটির নেতা-কর্মী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে এ সময় রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছোড়ে পুলিশ। এতে পুলিশসহ শতাধিক আহত মানুষ হন।
এদিন শহরের শায়েস্তানগরে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে সকাল থেকে জড়ো হতে থাকেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। সমাবেশে যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরাও সমবেত হন। শহরের প্রবেশমুখের সড়কে সমাবেশ করতে চাওয়ায় বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় নেতা-কর্মীদের ব্যারিকেড দিয়ে রাখে পুলিশ। দুপুর দেড়টার দিকে ব্যারিকেড ভেঙে যুবদল নেতা-কর্মীরা প্রধান সড়কে আসতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে হাতাহাতির একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তারা। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুটতে থাকেন নেতা-কর্মীরা। এতে শায়েস্তানগর পয়েন্ট রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুড়লে পিছু হটে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। কিছুক্ষণ পরে আবারও এগিয়ে এসে ইট-পাটকেল ছুড়লে দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষ বাধে। পরে বেলা আড়াইটার দিকে রাস্তা ছেড়ে চলে যান নেতা-কর্মীরা। ওই ঘটনায় পরদিন সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হাসান মামলা করেন। এতে ৭০ জনের নাম উল্লেখসহ ২০ হাজার জনকে আসামি করা হয়।