ফেঞ্চুগঞ্জে তজমুল আলী চত্বরের নামফলক উন্মোচন করলেন এমপি হাবিব

6
ফেঞ্চুগঞ্জে তজমুল আলী চত্বরের নামফলক উন্মোচন শেষে মোনাজাত করছেন সিলেট-৩ আসনের এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব।

মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শেখ তজমুল আলী চেয়ারম্যানের নামে ফেঞ্চুগঞ্জের কচুয়াবহর পালবাড়ি এলাকায় ‘তজমুল আলী চত্বর’ এর নামফলক উন্মোচন করেছেন সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব। রবিবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে তিনি নামফলকটি উন্মোচন করেন।
হাবিব বলেন, মরহুম তজমুল আলী চেয়ারম্যান ছিলেন একজন সৎ ও আদর্শবান নেতা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য ও তাঁর চিন্তা চেতনাকে বুকে ধারণ করে আমৃত্যু জনকল্যাণে নিবেদিত থাকা একজন নিবেদিতপ্রাণ মুজিব সৈনিক। যিনি তাঁর জীবনের প্রত্যেকটা মুহূর্ত মানুষের কল্যাণে ব্যয় করেছেন, মানুষের জন্য চিন্তা করেছেন। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কান্ডারি মরহুম এই জননেতার স্মৃতিগুলোকে আমাদের মধ্যে ধরে রাখা অত্যন্ত জরুরি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত আলী, সহ সভাপতি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছিত টুটুল, জেলা পরিষদ সদস্য মতিউর রহমান মতি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাখি আহমেদ, জেলা আ’লীগের সদস্য ও ঘিলাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী লেইস চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিব উদ্দিন বাদল, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল হোসেন খোকন, প্রচার সম্পাদক হাজী এনামুল হক, শিক্ষা ও মানব বিষয়ক জুবেদ আহমদ চৌধুরী শিপু, ২নং মাইজগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মঈন উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক শাইস্তা, তজমুল আলী চেয়ারম্যানের ছোট ভাই শেখ মোজাহিদ আলী, শহীদুজ্জামান ছুটু, বিজয় রঞ্জন দে, হেলাল উদ্দিন শামীম, মনসুর আলী মাস্টার, মুজিবুর রহমান, জিএস আব্দুল মতিন, নজমুল ইসলাম, শেখ হাবিবুর রহমান, আব্দুস শহীদ, লীলবণি বিশ্বাস, সুশান্ত বিশ্বাস, তজমুল আলী বড় ছেলে শ্রমিক নেতা দিদারুল হাসান শিহাব, পারভেজ আহমদ, লিয়াকত হাসান, আছাব আলী, বাউল শিল্পী কালা মিয়া, মশিউর করিম কামাল, লিমন আহমদ, শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড ও ফেঞ্চুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সমূহের প্রশাসনিক কর্মকর্তাবৃন্দ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ সহ এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণ।
তজমুল আলী ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আস্থাভাজন নেতাদের একজন। তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গঠনে বিভিন্ন সময়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার পাশাপাশি স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময় থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির ক্রান্তিলগ্নে নীতি ও দৃঢ়তায় অটল থেকে অগ্রসারি থেকে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন ফেঞ্চুগঞ্জের জননন্দিত এই আওয়ামী লীগ নেতা। ২৩ মার্চ ১৯৭১ সালে ফেঞ্চুগঞ্জ সারকারখানা পুলিশ ক্যাম্প এলাকায় তাঁর নেতৃত্বে পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়িয়ে দেয়া হয়। পঁচাত্তর এর পনেরো আগষ্ট স্বপরিবারে জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের পর তিনিই থানা আওয়ামী লীগের প্রথম প্রতিবাদ সভা আহবান করেছিলেন। ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে তাঁর নিরাপত্তায় তজমুল আলীর সূক্ষ্ম ও কৌশলী নেতৃত্ব প্রশংসা কুড়িয়ে ছিলো সর্বমহলে। দল-মত নির্বিশেষে এলাকার মানুষের কল্যাণে রাজনৈতিক জীবনের বেশিরভাগ সময়ই জনপ্রতিনিধি হিসেবে অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সহীত দায়িত্ব পালন করেছেন। সমাজসেবায় অসামান্য অবদান রাখা এই জননেতা নেতা ১৯৯৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাইজগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান থাকাকালীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
২০০০ সালে তাঁর স্মৃতি রক্ষায় সর্বপ্রথম ‘তজমুল আলী চত্বর’ নামে কচুয়াবহর পালবাড়ি চৌরাস্তার নামকরণ করা হয়। তবে পর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেটি হেলে পড়লে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে ও সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিবের প্রচেষ্টায় পুনরায় নামফলকটির উন্মোচন করা হয়েছে। এসময় তজমুল আলী চত্বর থেকে জেটিঘাট পর্যন্ত রাস্তা পুনঃনির্মাণ কাজেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। বিজ্ঞপ্তি