সুনামগঞ্জের ২১ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ১৬ চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচিত

13

আল-হেলাল সুনামগঞ্জ থেকে :
সুনামগঞ্জের তিন উপজেলার ২১ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে দলীয় ও বিদ্রোহী হিসেবে অধিকাংশ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরাই বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচিতদের ২১ জনের মধ্যে ১৬ জন প্রার্থীই সরাসরি আওয়ামী লীগ রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত। রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু ও শান্তির্পূণভাবে এই নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। দুয়েকটি বিছিন্ন ঘটনা ছাড়া প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রচন্ড শীত ও বৈরী আবহাওয়ার জন্য সকালে ভোটারদের উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। প্রতিটি কেন্দ্রে পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটারদের সংখ্যা ছিল উল্লেখযোগ্য। ৩ উপজেলার মধ্যে জগন্নাথপুর উপজেলায় অভিজ্ঞ ও প্রবীণ প্রার্থীরা নির্বাচিত হলেও দিরাই ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় নবীন ও তরুণ প্রার্থীরাই নির্বাচিত হয়েছেন।
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৩ জন দলীয় ও ৪ জন বিদ্রোহীসহ আওয়ামী লীগের ৭জন প্রার্থী বেসরকারীভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বিজয়ী নির্বাচিত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হচ্ছেন করিমপুর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী লিটন কুমার দাস (লিটু), রফিনগর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী শৈলেন্দ্র কুমার তালুকদার, ভাটিপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের (বিদ্রোহী) আনারস প্রতীকের বদরুল ইসলাম চৌধুরী মিফতাহ, জগদল ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী হুমায়ূন রশিদ লাভলু, রাজারনগর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের (বিদ্রোহী) চশমা প্রতিকের প্রার্থী জহিরুল ইসলাম জুয়েল, সরমঙ্গল ইউনিয়নে বিএনপির সমর্থিত (চশমা প্রতীকের) মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েল, চরনারচর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের (বিদ্রোহী) আনারস প্রতীকের প্রার্থী পরিতোষ রায়, তাড়ল ইউনিয়নে বিএনপির সমর্থিত ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি চশমা প্রতীকের মোঃ আলী আহমদ এবং কুলঞ্জ ইউনিয়নে (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) মোটর সাইকেল প্রতীকে মোঃ একরার হোসেন বিজয়ী হয়েছেন।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একজন দলীয় ও ২ জন বিদ্রোহী মিলিয়ে আওয়ামী লীগের ৩ জন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। বিজয়ীরা হচ্ছেন সলুকাবাদ ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ মনোনিত নুরে আলম সিদ্দিকী তপন, পলাশ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (মোটর সাইকেল) প্রতীকে যুবলীগ নেতা মোঃ সুহেল আহমদ সুহেল, ধনপুর ইউনিয়নে (আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী) ঘোড়া প্রতিকের মোঃ মিলন মিয়া, দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নে (মোটর সাইকেল) প্রতীকে বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী এডভোকেট ছবাব মিয়া ও ফতেপুর ইউনিয়নে (লাঙ্গল) প্রতীকে জাতীয় পার্টির মনোনিত প্রার্থী মোঃ ফারুক মিয়া। নির্বাচিতদের মধ্যে অধিকাংশ প্রার্থীরাই তরুণ।
প্রবাসী অধ্যুষিত জগন্নাথপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে দলীয় ৩ জন ও বিদ্রোহী ৩ জনসহ আওয়ামী লীগের ৬ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বিজয়ী চেয়ারম্যানগণ হচ্ছেন-কলকলিয়া ইউনিয়নে (স্বতন্ত্র) প্রার্থী লন্ডন প্রবাসী মোঃ রফিক মিয়া, পাটলী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোঃ আংগুর মিয়া, চিলাউরা হলদিপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের (বিদ্রোহী) প্রার্থী মোঃ শহিদুল ইসলাম, রানীগঞ্জ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শেখ ছদরুল ইসলাম, সৈয়দপুর সাহারপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী মোঃ আবুল হাসান, আশারকান্দি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের (বিদ্রোহী) প্রার্থী মোঃ আয়ূব খান ও পাইলগাঁও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের (বিদ্রোহী) প্রার্থী মোঃ মখলুস মিয়া। সুনামগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুরাদ উদ্দিন হাওলাদার বলেন, চতুর্থ ধাপেও জেলার তিনটি উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অত্যন্ত সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ভোটারগণ নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। প্রতিটি কেন্দ্রে বিপুল সংখ্যক আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এক বিবৃতিতে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক এমপি আলহাজ্ব মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবীর ইমন নির্বাচিত সকল চেয়ারম্যান ও তাদের পরিষদের ইউপি সদস্যা ও সদস্যদেরকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।