মৌ’বাজারের রাজনগরে তিন ইউনিয়নে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস, কে জিতবে এনিয়ে জল্পনা-কল্পনা

1

মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
এই তিন ইউনিয়নের মধ্যে দুই ইউনিয়নে বর্তমান দুজন চেয়ারম্যান ও একটি ইউনিয়নে আওয়ামী বিদ্রোহী বর্তমান চেয়ারম্যান প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন। এই তিন ইউনিয়নে কে জিতবে তা নিয়ে ভোটারদের মাঝে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা চলছে।
রাজনগর উপজেলার এই তিন ইউনিয়ন হলো মনসুরনগর, মুন্সীবাজার ও টেংরা। মনসুরনগর ইউনিয়নে নৌকা মার্কা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, রাজনগর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও এই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মিলন বখত্। তাঁর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া মিলন। তিনিও আওয়ামী ঘরাণার রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। তবে তিনি যুক্তরাজ্য প্রবাসী। এছাড়াও এই ইউনিয়নে জাসদ সমর্থিত হুমায়ূন আহমদ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তবে ভোটারদের মুখে মুখে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মিলন বখত্ ও সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া মিলনের নামই শোনা যাচ্ছে। ভোটার ও এই ইউনিয়নের নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, মিলন বখত্ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে থাকায় তিনি প্রশাসনিক ও দলগতভাবে বিশেষ সুবিধা পাবেন। যা তাঁর ভোট পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
এছাড়া মিলন বখত্ বর্তমান চেয়ারম্যান থাকায় তাঁর একটা ভোট ব্যাংক ও দলীয় মানুষ ইউনিয়নে রয়েছে। সেই সুবিধাও তিনি ভোট পাওয়ার ক্ষেত্রে পাবেন। অন্যদিকে সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া মিলন একেবারে নতুন একজন প্রার্থী। তিনি জনসংযোগকালে বিপুল পরিমাণ মানুষের সমর্থন পেয়েছেন। তবে ভোটের দিন ভোট পাওয়ার ক্ষেত্রে কতোটা সফল হবেন তা দেখার বিষয়। তবে ভোটাররা মনে করছেন, যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে তিনি তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকবেন।
মুন্সীবাজার ইউনিয়নে নৌকা মার্কা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, বর্তমান চেয়ারম্যান ছালেক মিয়া। তিনি চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে বিভিন্ন কর্মকান্ডের কারণে সমালোচিত হয়েছেন। এর মধ্যে মুন্সীবাজার ইউনিয়ন পরিষদের অধিগ্রহণকৃত ভূমিতে সরকারী টাকা ব্যয়ে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ স্থানীয় তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের সুপারিশে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার, জন হয়রানিসহ অনেক অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এসব বিষয় এবারের নির্বাচনে ভোটারদের বিবেচনায় থাকবে বলে ভোটাররা মনে করছেন। অপরদিকে এই ইউনিয়নে তাঁর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছেন রাহেল হোসেন। রাহেল হোসেন নতুন হলেও তিনি ইতিমধ্যে ভোটারদের মাঝে শক্ত অবস্থান তৈরী করে ফেলেছেন। তিনি ভোট পাওয়ার ক্ষেত্রে বর্তমান চেয়ারম্যানের বিগত দিনের খারাপ কর্মকা-কে তুলে ধরে ভোট তাঁর পক্ষে নেওয়ার কৌশল অবলম্বন করেছেন। বর্তমানে মাঠে তাঁর পক্ষে সুর ওঠেছে। এখানেও শেষমেষ এই দুই প্রার্থীর মধ্যে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া গেছে।
টেংরা ইউনিয়নে নৌকা মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন মাহমুদ উদ্দিন। মাহমুদ উদ্দিন প্রার্থী হিসেবে নতুন হলেও ভোটের মাঠে দীর্ঘদিন ধরে তাঁর পদচারণা। সেই হিসেবে তিনি ভোটের মাঠে পাকা খেলোয়াড়। এখানে জেতার বিষয়ে ফ্যাক্টর হলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী বিদ্রোহী টিপু খাঁন। তিনি এই ইউনিয়নের দুইবারের চেয়ারম্যান। এছাড়া এখানে আওয়ামী সদ্য বহিষ্কৃত একজন প্রার্থী রয়েছেন আকমল হোসেন।
এই তিনজন প্রার্থী নিজ নিজ কেন্দ্রসহ চা শ্রমিকের ভোটের দিকে চেয়ে আছেন। নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এবার এই ইউনিয়নে ত্রিমুখী লড়াই হবে ও কম ভোটে বিজয় নিশ্চিত হবে। তবে টিপু খাঁন যেহেতু পুরনো ও অভিজ্ঞ চেয়ারম্যান এবং তাঁর পারিবারিকভাবে একটি অবস্থান রয়েছে। সে হিসেবে তাঁর বের হয়ে আসার সম্ভাবনা এবারও রয়েছে। তবে প্রশাসন যদি নিরপেক্ষ থাকে এবং সুষ্ঠু ভোট হয় তাহলে যে কেউই জিততে পারে বলে ভোটাররা মনে করছেন।
এই উপজেলায় ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ইতিমধ্যে কামারচাক ইউনিয়নে বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন আতাউর রহমান। ফলে আগামী আগামী ২৬ ডিসেম্বর রোববার বাকী সাত ইউনিয়নে নির্বান অনুষ্ঠিত হবে।