বিশ্ব শান্তি সম্মেলনের সমাপনীতে প্রধানমন্ত্রী ॥ অস্ত্র প্রতিযোগিতা নয়, সর্বজনীন টেকসই উন্নয়ন অর্জনে সম্পদ কাজে লাগানোর আহ্বান

10

কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলার পাশাপাশি অস্ত্র প্রতিযোগিতায় সম্পদ ব্যয় না করে তা সর্বজনীন টেকসই উন্নয়ন অর্জনে ব্যবহার করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়ে তোলার প্রয়োজনের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের এই চরম সঙ্কটময় সময়ে আমি অস্ত্র প্রতিযোগিতায় সম্পদ ব্যয় না করে তা সর্বজনীন টেকসই উন্নয়ন অর্জনে ব্যবহার করার আহ্বান জানাই। আসুন, আমরা সর্বজনীন শান্তির জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে কর্মযজ্ঞে নেমে পড়ি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী প্রজন্মের জন্য জাতির পিতার স্বপ্নের আত্মমর্যাদাশীল, উন্নত এবং সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ঢাকায় আয়োজিত ‘বিশ্ব শান্তি সম্মেলন-২০২১’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত দু’দিনব্যাপী শান্তি সম্মেলনে সমাপনী ভাষণ দেন।
গত দুই বছরে করোনা মহামারী গোটা বিশ্ব ব্যবস্থাকে যে নতুন সঙ্কটের মুখোমুখি করেছে তা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সঙ্কট প্রমাণ করেছে, আমরা কেউই আলাদা নই। কাজেই শান্তিপূর্ণভাবে এই পৃথিবীতে বসবাস করতে হলে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি জবাবদিহিতামূলক বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শান্তির আদর্শকে পুরোপুরি ধারণ করে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সমঝোতার ভিত্তিতে সকলের সঙ্গে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ সদা প্রস্তুত রয়েছে।
স্বাধীনতার জন্য জাতির সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন সরকারপ্রধান এর মধ্য দিয়ে শান্তির মূল্য এবং সমগ্র মানব জাতির গভীরতম আকাক্সক্ষাসমূহ অনুধাবন করেছি। ফিলিস্তিনের ভাতৃপ্রতীম জনগণের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বরাবরের মতো ফিলিস্তিনের জনগণের ন্যায্য দাবির পক্ষে আমাদের অবিচল সমর্থন রয়েছে। সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা ১১ লাখের বেশি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সাময়িক আশ্রয় দিয়েছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর ফলে এই অঞ্চলে একটি বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে। তাদের নিজ মাতৃভূমিতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য তাঁর সরকার শান্তিপূর্ণ কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
বিশ্ব শান্তি সম্মেলন-২০২১-এর আয়োজক কমিটির সভাপতি জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের মূল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। এছাড়া সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জেমস গর্ডন ব্রাউনের একটি ভিডিও বার্তা অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয়। সিঙ্গাপুরের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গোহ চোক টং, ইউনেস্কোর সাবেক মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা এবং হাডসন ইনস্টিটিউটের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার পরিচালক হোসেন হাক্কানি সমাপনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন। এর আগে বিশ্ব শান্তি সম্মেলন-২০২১-এর থিম সং পরিবেশিত হয় এবং একটি অডিও-ভিডিও প্রেজেন্টেশন প্রদর্শন করা হয়।
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গ্র্যাজুয়েশন প্রাপ্তির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, আমরা ‘এসডিজি প্রোগ্রেস এ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছি। বিদ্যুত, যোগাযোগ, তথ্য-প্রযুক্তি ও কৃষিক্ষেত্রে দেশে বিপ্লব ঘটিয়েছি। দেশের অর্থনীতিকে শক্ত ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠিত করেছি। করোনা মহামারীর প্রতিঘাত নিরসনে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা প্রণোদনা দিয়েছি।
তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতির আকার এখন ৪১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৫৫৪ মার্কিন ডলার। রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এসডিজি-২০৩০’র সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা ২০ বছর মেয়াদী দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। সে লক্ষ্য সামনে রেখে আমরা ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করেছি। আমরা ‘বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ বাস্তবায়ন করছি।
জাতির পিতার শান্তির দর্শন ‘অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী’ ছিল উল্লেখ করে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা প্রমাণ করেছেন সকল বঞ্চনা-বৈষম্য-শোষণের শৃঙ্খল তথা পরাধীনতা থেকে মুক্তি, ক্ষুধা-দারিদ্র্যের অবসানপূর্বক সমৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমেই অর্জন করা সম্ভব। তাছাড়াও তিনি বিশ্ব শান্তি অটুট রাখতে যুদ্ধ-বিগ্রহের পরিসমাপ্তি এবং অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করে জোটনিরপেক্ষ নীতি গ্রহণ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার শান্তি স্থাপনের প্রয়াস সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর পূর্ব বাংলার জনগণের ওপর উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেয়া হলে তরুণ ছাত্রনেতা শেখ মুজিব এর প্রতিবাদ করেন এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সংঘটিত করতে গিয়ে বারবার কারাবরণ করেন। দীর্ঘ কারাবাসের পর তিনি ১৯৫২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পান। একই বছর তিনি বেজিংয়ে অনুষ্ঠিত এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় শান্তি সম্মেলনে যোগ দেন এবং প্রথম বাঙালি হিসেবে বিদেশের মাটিতে বাংলায় বক্তৃতা করেন।
‘আমার দেখা নয়াচীন’ গ্রন্থে জাতির পিতার সেই সম্মেলনে যোগদানের বর্ণনা রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা জাতির পিতার সেই গ্রন্থের প্রথম পাতার একটি উদ্ধৃতি তুলে ধরেন। জাতির পিতা কমিউনিস্টদের শান্তি সম্মেলনে যোগদানের ব্যাখ্যা দিয়েছেন এভাবে- ‘দুনিয়ায় আজ যারাই শান্তি চায় তাদের শান্তি সম্মেলনে আমরা যোগদান করতে রাজি। রাশিয়া হউক, আমেরিকা হউক, ব্রিটেন হউক, চীন হউক- যে-ই শান্তির জন্য সংগ্রাম করবে তাদের সঙ্গে আমরা সহস্র কণ্ঠে আওয়াজ তুলতে রাজি আছি- আমরা শান্তি চাই।’
প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা অর্জন এবং পরবর্তীতে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে বলিষ্ঠ ভূমিকার কথা স্মরণ করে বলেন, দুর্ভাগ্য, স্বাধীনতার পর তিনি মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন। ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের খুনীরা জাতির পিতাকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সংবিধান লংঘন করে ক্ষমতায় বসে খুনীদের রক্ষায় ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারির মতো ঘটনার মধ্য দিয়ে এদেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু করেছিল।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা অর্জনের পর মাত্র নয় মাসেই একটি সংবিধান প্রণয়ন করে সেই সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদে ‘আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও সংহতির উন্নয়ন’-এর ক্ষেত্রে বন্ধুত্বকে রেখেছেন আমাদের পররাষ্ট্র নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে। সেই সঙ্গে শক্তি প্রয়োগ পরিহার, সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ, নিজ নিজ আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক ব্যবস্থা নির্ধারণ এবং সাম্রাজ্যবাদ, ঔপনিবেশিকতাবাদ বা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বের সর্বত্র নিপীড়িত জনগণের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামকে সমর্থন দিয়েছেন।
জাতির পিতার জুলিওকুরি পদক প্রাপ্তি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দেশের নিপীড়িত, নির্যাতিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিশ^ শান্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর ফিনল্যান্ডের হেলসিংকিতে এক ঘোষণার মাধ্যমে জুলিও কুরি পদকের জন্য মনোনীত হন। ১৯৭৩ সালের ২৩ মে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সেই পদক গ্রহণ অনুষ্ঠানে জাতির পিতার ভাষণের উল্লেখযোগ্য অংশের উদ্ধৃতি তুলে ধরে বিশ^ শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতার আকাক্সক্ষাও অনুষ্ঠানে ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতির পিতা বলেন, বিশ্ব শান্তি আমার জীবন দর্শনের অন্যতম মূলনীতি। আমি সব সময় পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে নিপীড়িত, শোষিত, শান্তিকামী ও মুক্তিকামী মানুষের পাশে ছিলাম। আমরা বিশ্বের সর্বত্রই শান্তি স্থাপন করতে চাই। আমরা বিশ্ব শান্তিকে একটি মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে চাই। সাম্প্রদায়িকতা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধেও সোচ্চার ছিলেন বঙ্গবন্ধু এবং এই দেশে সম্প্রদায়িকতার কোন স্থান নেই বলেও তিনি উল্লেখ করে যান, বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশের সমুদ্র সীমানা নির্ধারণ এবং এর সম্পদের শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য ‘দি টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস এ্যান্ড মেরিটাইম জোনস এ্যাক্ট’ও প্রণয়ন করেন।
দীর্ঘ ২১ বছরের সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, একই বছর ১২ নবেম্বর দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিচারহীনতার সংস্কৃতি নিরসন করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করি। জাতির পিতার হত্যার বিচার শুরু করি।
শান্তি প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী উপজাতিদের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান ঘটিয়ে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করি। ১৯৯৭ সালে আমরাই প্রথম জাতিসংঘে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ বিকাশে কর্মসূচী গ্রহণের লক্ষ্যে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করি, যা ১৯৯৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর গৃহীত হয়। সে অনুযায়ী জাতিসংঘ ২০০০ সালকে ‘শান্তির সংস্কৃতির আন্তর্জাতিক বছর’ এবং ‘২০০১-২০১০ কে ‘শান্তির সংস্কৃতি ও অহিংস দশক’ হিসেবে ঘোষণা করে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়লাভের পর জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচারের রায় কার্যকর করি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করি। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে মীমাংসা করি। জাতিসংঘে সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে আমরা গর্ববোধ করি। তাঁর সরকার জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতি গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে আমরা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছি।
বিকেলের সেশনে সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরী বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সামাজিক বৈষম্য রোধে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। তিনি জানান, দু’দিনব্যাপী বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে রোহিঙ্গা সঙ্কট ইস্যুটিও উঠে এসেছে।
সিঙ্গাপুরের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গোহ চোক টং বলেন, বাংলাদেশকে প্রথমদিকে স্বীকৃতিদানকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম সিঙ্গাপুর। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরে দুই দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন। এর আগে সকালের অধিবেশনের সূচনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ শান্তির পথিকৃৎ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শান্তির সংস্কৃতির সূচনা করেছেন। আগামীতে আমরা সারাবিশ্বেই শান্তির বার্তা দিতে চাই।
অধিবেশনে প্যানেল আলোচনায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন বিশ্ব শান্তি সম্মেলনের আয়োজক কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি সায়মা ওয়াজেদ। এরপর প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন- হন ফিলিপ রুডক, আরব আমিরাতের বিশিষ্ট শান্তি বিশেষজ্ঞ আহমেদ মোহাম্মদ রশিদ আল জারওয়ান আল শামসি, যুক্তরাষ্ট্রের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মিস. কারেন জং ব্লুট, এথেন্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. ডিমিট্রিওস ভ্যাসিলিয়াডিস, ওয়ারস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মাইকেল পানাসিউক,কলম্বো ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক চন্দ্রিকা এন উইজি রত্না ও অধ্যাপক গ্রেগরি স্টানটন।
শনিবার ঢাকায় শুরু হয় দুই দিনব্যাপী বিশ্ব শান্তি সম্মেলন। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এ সম্মেলনে বিশ্বের ৫০টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৫৯ প্রতিনিধি সশরীরে যোগ দেন। আর ৪০ প্রতিনিধি ভাচুয়ালি অংশ নেন। রবিবার এ সম্মেলন সম্পন্ন হয়। শনিবার সম্মেলনের উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ।