ওমিক্রনের আঘাত থেকে বাঁচতে সচেতনতা

4

বিশ্বব্যাপী নতুন স্বাস্থ্যগত বিপদ ঘণ্টা বেজে উঠেছে। ২০১৯ এর ডিসেম্বরে চীনের উহানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগীর সন্ধান পাওয়ার পর করোনার সবচেয়ে বিপজ্জনক ধরন ছিল ডেল্টা, যা বাংলাদেশে জুলাই মাসে চালায় ভয়ঙ্কর তান্ডব। দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হয়েছে করোনাভাইরাসের এ যাবত কালের সর্বোচ্চ শক্তিসম্পন্ন ধরন ওমিক্রন। ধরনটিকে ‘উদ্বেগজনক’ বলে আখ্যায়িত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। কারণ হিসেবে সংস্থাটি ওমিক্রনের বার বার জিনগত রূপ বদল এবং করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের আবারও এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিকে সামনে তুলে ধরেছে। গত দুই সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকার গৌতেং প্রদেশে করোনার উর্ধমুখী সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। ধরনটি বার বার জিনগত রূপ বদল এবং মানুষের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম বলে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিভাগের প্রধান চিকিৎসা পরামর্শক নতুন এ ধরনকে ‘ভয়াবহ’ ও ‘এখন পর্যন্ত পাওয়া সবচেয়ে খারাপ ধরন’ বলে বর্ণনা করেছেন। খুব দ্রুত এটি আধিপত্যশীল ধরন হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এতে আগাম সতর্কতা জরুরী হয়ে পড়েছে। করোনা রোধে আফ্রিকার দেশগুলো থেকে বিমান উড্ডয়ন বন্ধের প্রস্তাব করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইতোমধ্যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে জার্মানিতে। টিকা নেয়া থাকলেও ন্যূনতম ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ব্রিটেনও শুক্রবার মধ্যরাত থেকে দেশগুলো থেকে বিমান ভ্রমণ বাতিল করেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী শনিবার এক অডিও বার্তায় বলেন, আফ্রিকার সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ স্থগিত করা হচ্ছে। সব বিমানবন্দর, স্থলবন্দরসহ দেশের সব প্রবেশপথে স্ক্রিনিং আরও জোরদার করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সারা দেশেই স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে ও মাস্ক পরতে উদ্বুদ্ধ করতে সব জেলা শহরের প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অবশ্য করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্যে দেশের প্রতিটি নাগরিককেই সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে সর্বদাই।
বাংলাদেশের জন্য বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন জরুরী হয়ে পেড়েছে। বর্তমানে জনজীবনে সবকিছু স্বাভাবিক বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। করোনাভাইরাসের মতো ঘাতক ব্যাধির ক্ষেত্রে বার বার বলা হয়েছে, আতঙ্কিত হবেন না, সতর্ক ও সচেতন থাকুন। সুরক্ষিত থাকুন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। মাস্ক পরা এবং একে অপর থেকে কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতেই হবে। অন্তত কুড়ি সেকেন্ড ধরে দুই হাত সাবান দিয়ে ভাল করে ধুতে হবে। এর অন্যথা হলে হবে ভয়ঙ্কর। নিজের ও নিজের পরিবারের কল্যাণ চাইলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে পালনের বিকল্প নেই। দেশে ওমিক্রনের আঘাত থেকে বাঁচতে হলে প্রত্যেককেই সচেতন ও সক্রিয় উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারকেও অবলম্বন করতে হবে কঠোরতা।