গ্যাসের অপচয় রোধে সিলেটে ৫০ হাজার গ্রাহক পাচ্ছেন প্রিপেইড মিটার

9

কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রাকৃতিক গ্যাসের অপচয়রোধ, সাশ্রয়ী দক্ষ ও টেকসই ব্যবহার নিশ্চিতের লক্ষ্যে সিলেটে আগামী মার্চ থেকে গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করা হবে। প্রাথমিকভাবে সিলেট সিটি করপোরেশন ও আশপাশ এলাকায় ৫০ হাজার প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন জালালাবাদ গ্যাসের আওতাভুক্ত আবাসিক গ্রাহকদের প্রি-পেইড মিটার সার্ভিস চালু করতে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে জালালাবাদ গ্যাস। এ জন্য ব্যয় ধরা হয় ১১৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রাথমিকভাবে সিলেট নগরের ৫০ হাজার গ্রাহক প্রিপেইড গ্যাস মিটার পাবেন। এ প্রকল্প সফল হলে আরও ৫০ হাজার গ্রাহককে গ্যাসের প্রিপেইড মিটার দেওয়া হবে। প্রকল্পের আওতায় তথ্যকেন্দ্র, হারানো তথ্য পুনরুদ্ধার কেন্দ্র ও অনলাইন সিস্টেমের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এবং সফটওয়ার স্থাপন করা হবে।
জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মূল্যবান জাতীয় সম্পদ প্রাকৃতিক গ্যাসের অপচয়রোধ, সাশ্রয়ী দক্ষ ও টেকসই ব্যবহার নিশ্চিতের লক্ষে সিলেট সিটি করপোরেশন ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সংযোগকৃত আবাসিক গ্রাহকদের প্রি-পেইড গ্যাস মিটার স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে শীঘ্রই মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় জরিপ কাজ শুরু হবে। আগামী বছরের মার্চ মাস থেকে পর্যায়ক্রমে প্রি-পেইড মিটার স্থাপন শুরু হবে।
জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সাশ্রয়কৃত গ্যাস নতুন শিল্প কারখানায় ব্যবহার করা যাবে। এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও বাড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
জালালাবাদ গ্যাস অফিস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে জালালাবাদ গ্যাসের প্রায় দুই লাখ আবাসিক গ্রাহক রয়েছেন। বর্তমানে একজন আবাসিক গ্রাহক মাসে গড়ে ৬৬ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করেন। প্রি-পেইড মিটার স্থাপন হলে একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ৪০ ঘন মিটার গ্যাস ব্যবহার করবেন। এর ফলে অনায়াসেই ২৬ ঘনমিটার গ্যাস সাশ্রয় হবে। এছাড়া সরবরাহ লাইনের ত্রুটির কারণে গ্যাসের প্রচুর অপচয় হয়। অনেক সময় লিকেজ লাইনে আগুন লাগার ঘটনাও ঘটে। প্রিপেইড মিটার চালু হলে গ্যাসের অপচয় অনেকাংশেই কমে যাবে।
সূত্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে একজন গ্রাহক দ্বৈত চুলার জন্য বিল দেন ৯৭৫ টাকা। প্রিপেইড মিটার স্থাপন করলে একজন গ্রাহক মাসে মাত্র ৩০০ টাকার গ্যাস ব্যবহার করতে পারবেন। এর ফলে একজন গ্রাহকের মাসে প্রায় ৬০০ টাকা সাশ্রয় হবে।
এ বিষয়ে জালালাবাদ গ্যাস টি অ্যান্ড ডি সিস্টেম লিমিটেডের প্রকল্প পরিচালক (প্রি-পেইড গ্যাস মিটার স্থাপন প্রকল্প) প্রকৌশলী লিটন নন্দী বলেন, ‘আগামী মার্চ থেকে সিলেটে প্রি-পেইড গ্যাস মিটার স্থাপন শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে সিটি করপোরেশন ও তার আশাপাশ এলাকায় ৫০ হাজার মিটার স্থাপন করা হবে। গ্যাসের অপচয়রোধ, সাশ্রয়ী, দক্ষ ও টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গ্রাহকদের বাসায় যতটি চুলা রয়েছে প্রতিটির জন্য একটি মিটার স্থাপন করা হবে। বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটারের ক্ষেত্রে যেমনটি হয়েছে ঠিক তেমন। এতে করে গ্রাহকদের ব্যয় অনেকটাই সাশ্রয় হবে।’
মিটার স্থাপনে গ্রাহকদের কোনো ফি দিতে হবে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ধারণা করছি মিটার স্থাপনে কোনো ফি দিতে হবে না। তবে গ্রাহকের লাইনে কোনো লিকেজ থাকলে সংস্কারের ব্যয় গ্রাহককে দিতে হবে।’