সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ॥ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ আখালিয়ার তিন এলাকার বাসিন্দাদের

10
সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করছেন আখালিয়ার মোহাম্মদী আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মো: আলম মিয়া।

স্টাফ রিপোর্টার :
একটি দখলদার ও দুষ্কৃতিকারী চক্র নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন মিথ্যা মামালা দিয়ে হয়রানি করছে সিলেটের আখালিয়ার তিনটি আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের। মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন আখালিয়ার জালালী আবাসিক এলাকা, মোহাম্মদী আবাসিক এলাকা ও উপরপাড়া এলাকার বাসিন্দারা। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. আলম মিয়া।
লিখিত বক্তব্যে আলম মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন দিন ধরে একটি দখলদার ও দুষ্কৃতিকারী চক্রের প্রতিহিংসার শিকার তারা। সত্য ঘটনার স্বাক্ষী হওয়ায় এ চক্রের সদস্যরা আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। তাদের সকল মামলা পুলিশ ও পিবিআইয়ের তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তারপরও এ চক্র থেমে নেই। সর্বশেষ তারা অত্র এলাকার সাধারণ মানুষদের আসামি করে আদালতে নারী নির্যাতন মামলা করেছে। এ চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে চুরি, ছিনতাই, শিশু অপহরণ, মাদক মামলাসহ ডজনখানেক মামলা রয়েছে। যার অধিকাংশই পুলিশি তদন্তে প্রমাণিত বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, বৃহত্তর আখালিয়া এলাকার জালালী আবাসিক এলাকা, মোহাম্মদী আবাসিক এলাকা দুসকী ও উপরপাড়াসহ আশপাশ এলাকার সাধারণ মানুষদের হয়রানি করছে রাবেয়া বেগম, তার স্বামী ইউসুফ আলী, ছেলে ইকরাম ও ইমন, মেয়ের জামাই ইমরান, রাবেয়ার সহযোগী মোহাম্মদী আবাসিক এলাকা দুসকীর বশির উদ্দিন, তার স্ত্রী ছালেহা, তাদের ২ ছেলে জাফর ও জায়েদ।
এ চক্রের সদস্যদের মধ্যে রাবেয়া সিলেট নগরীতে বিভিন্ন বাসার ঠিকানা ব্যবহার করে এসব এলাকার বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, চুরির মামলায় জেলখাটা আসামি রাবেয়া ও তার পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট ও জালালাবাদ থানায় চুরি, ছিনতাইসহ শিশু অপহরণের ডজন খানেক মামলা ও জিডি রয়েছে। এর সবগুলোই চার্জশিট ও প্রসিকিউশন দিয়েছে পুলিশ ও পিবিআই। এছাড়া রাবেয়ার সহযোগী মোহাম্মদী আবাসিক এলাকার বশির উদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে। সর্বশেষ টিলা কাটার অভিযোগে জালালাবাদ থানা পুলিশ তাকে আটক করে। পরে পরিবেশ অধিদপ্তর বড় অংকের জরিমানা করে তাকে।
তিনি বলেন, মোহাম্মদী আবাসিক এলাকা দুসকীতে সিলেট নগরীর সুবিদবাজারের সমাজসেবী ও রাজনীতিবিদ নাহিদা আক্তার চৌধুরীর বেশকিছু ভূমি রয়েছে। এ ভূমিতে ঘর তৈরি করে কিছু মানুষকে থাকতে দিয়েছেন তিনি। এদের মধ্যে অন্যতম বশির উদ্দিন ও রাবেয়ার পরিবার। পরে তারা বশির উদ্দিন ও রাবেয়া জোট বেঁধে জায়গা আত্মসাতের ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে। তারা অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার, ভূমি দখল করতে থাকে। এর জের ধরে নাহিদা আক্তার চৌধুরী নিজের ভূমিতে গেলে অপমান, অপদস্ত ও হামলার চেষ্টা করে। এ নিয়ে ভূমি মালিক নাহিদা আক্তার চৌধুরী থানায় একাধিক মামলা করেন। এ মামলাগুলোতে এলাকার যারা স্বাক্ষী হয়েছেন, তাদের আসামি করে রাবেয়া ও বশির উদ্দিনের স্ত্রী বাদী হয়ে স্বাক্ষীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
আলম মিয়া বলেন, গত বছর সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে তার পুত্র বধূ নির্যাতনের কথিত কাহিনী দিয়ে কয়েকজন সাক্ষীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় আমরা গত ৬ অক্টোবর আদালত থেকে জামিন নিয়েছি। এ চক্রের অপকর্মে বৃহত্তর আখালিয়া এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ জানিয়ে তিনি এই চক্রের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য মো. তারেক মিয়া বাবুল, লাহিনুর রহমান লাহিন, মুসলিম মিয়া, সুহেল আহমদ ও আশরাফ মিয়া প্রমুখ।