সিলেট ওসমানী হাসপাতালে পড়ে আছে দেড় কোটি টাকার এ্যাম্বুলেন্স

7

কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রায় এক বছর ধরে পড়ে আছে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেড় কোটি টাকা দামের অত্যাধুনিক আইসিইউ এ্যাম্বুলেন্স। পরিচালনার জন্য দক্ষ কর্মী ও লোকবল না পাওয়ায় এ্যাম্বুলেন্সটি কোনো কাজে আসছে না।
সরেজমিন দেখা গেছে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগ প্রাঙ্গণের এক কোণে সারিবদ্ধ গাড়ি। এর মধ্যে দুটি এ্যাম্বুলেন্স একেবারেই অচল। খোলা আকাশের নিচে রোদ-বৃষ্টিতে পড়ে থাকতে থাকতে ওই দুটি গাড়ির রং উঠে গেছে। আইসিইউ সুবিধা সংবলিত এ্যাম্বুলেন্সটি জং ধরা ওই দুটি গাড়ির পাশে রাখা হয়েছে। এরপর রয়েছে হাসপাতালের নির্ধারিত সাতটি এ্যাম্বুলেন্স। সেগুলো অবশ্য চলাচলের উপযোগী। তবে গাড়িগুলোর ওপরে কোনো ছাউনি নেই। সবগুলোই পড়ে আছে খোলা আকাশের নিচে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এর আগে প্রশাসনিক দফতরের একটি কক্ষের পাশে খোলা আকাশের নিচে রাখা ছিল আইসিইউ এ্যাম্বুলেন্সটি। সেখানে নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হওয়ায় বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সেখান থেকে জরুরি বিভাগের প্রাঙ্গণে স্থানান্তর করা হয়।
হাসপাতালের একজন এ্যাম্বুলেন্স চালক বলেন, এটি হাসাপাতালের সবচেয়ে দামি এ্যাম্বুলেন্স। দক্ষ চালক নেই। তাই এক বছর ধরে এভাবেই অচল পড়ে আছে।
হাসপাতালের যান পরিচালনা শাখা সূত্রে জানা গেছে, আইসিইউ এ্যাম্বুলেন্সটি গত বছরের ১৭ অক্টোবর বরাদ্দ দেওয়া হয়। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) এ্যাম্বুলেন্সটির ভেতরে উন্নত প্রযুক্তির পালস অক্সিমিটার, ইসিজি মেশিন, সিরিঞ্জ পাম্প, ভেন্টিলেটর মেশিন, সাকার মেশিন, মনিটর, অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ জীবন রক্ষাকারী বিভিন্ন যন্ত্রপাতি রয়েছে। এক বছরে এটি মাত্র একবার চালানো হয়েছিল। এরপর লোকবলের অভাবে আর চালানো যায়নি।
খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকা প্রসঙ্গে যান পরিচালনা শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, হাসাপাতালের গ্যারেজ হিসেবে ব্যবহৃত হয় তিনটি কক্ষ। সেখানে কর্মকর্তাদের গাড়ি রাখা হয়। এ্যাম্বুলেন্স রাখার গ্যারেজ না থাকায় এটি খোলা আকাশের নিচে রাখা হয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এ্যাম্বুলেন্সটি অনেকেরই উপকারে আসত। তবে এটির বিষয়ে সিলেটের মানুষ জানেন না। তাদের উচিত ছিল এটি জানানো। পাশাপাশি এটিকে এভাবে খোলা জায়গায় ফেলে রাখা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এখানে ব্যর্থতার দায় তারা কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ব্রায়ান বঙ্কিম হালদার বলেন, এটি অচল না, এটি একটি বিশেষায়িত এ্যাম্বুলেন্স। এটি পরিচালনার জন্য একজন চিকিৎসক ও নার্স দরকার হয়। তবে জনবল ওই এ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে পাওয়া যায়নি। এমনকি এ্যাম্বুলেন্সটি এর আগে কেউ ব্যবহারের জন্য চাননি। দীর্ঘদিন হলেও এ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহারের জন্য কেউ আবেদনও করেননি। পাশাপাশি সরকার থেকে এটির ভাড়াও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ দিন আগে সরকারের পক্ষ থেকে এই এ্যাম্বুলেন্সটির ভাড়া নির্ধারণ করে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। প্রতি কিলোমিটার ১০ টাকা করে নির্ধারণ হয়েছে। তবে এ্যাম্বুলেন্সটি সচল আছে। এখন থেকে কেউ চাইলে এটি ভাড়া দেওয়া হবে।