বিজয় দিবসে সুবর্ণজয়ন্তী

7

করোনা অতিমারীর তীব্র সংক্রমণজনিত কারণে স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিধিসহ লকডাউন পরিস্থিতিতে দেশে এবার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী তথা ৫০ বছর উদযাপন তেমন জাঁকমকপূর্ণ, বর্ণাঢ্য ও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সমৃদ্ধ ও পরিপূর্ণ হতে পারেনি। সত্যি বলতে কি এবারে স্বাধীনতা দিবস তথা সুবর্ণজয়ন্তী এবং একই সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী প্রায় জৌলুসহীন ও অনাম্বড়রভাবে পালিত হয়েছে। সেই ঘাটতি পুষিয়ে নিতে আসন্ন বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর যথাযথ আড়ম্বর ও জাঁকজমকের সঙ্গে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে উদ্যাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য ইতোমধ্যে জাতীয় কর্মসূচী প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর সভাপতিত্বে সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক। সব কিছু স্বাভাবিক ও ঠিকঠাক থাকলে এবার বিজয় দিবসে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হবে সেনা-নৌ ও বিমান বাহিনীর সম্মিলিত জমকালো কুচকাওয়াজ। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ভিত্তিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের যান্ত্রিক বহরের চলমান প্রদর্শনীও থাকবে। সর্বোপরি থাকবে দেশের আবহমান কৃষ্টি সংস্কৃতি চারু ও কারুশিল্পসহ লোক সংস্কৃতির ব্যাপক আয়োজন। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে পারেন ভারত, রাশিয়া, মেক্সিকো, ভুটানসহ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রীয় ও সরকার প্রধানগণ, যা বিজয় দিবসের মর্যাদাকে করবে মহিমান্বিত। উল্লেখ্য, ভারত ও রাশিয়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অকৃত্রিম বন্ধু ও সহায়তাকারী।
১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এই দিন বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা হয়। বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারের ধারাবাহিকতায় যে অর্জনগুলো ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম- স্বপ্নের পদ্মা সেতু, যেটি নিজস্ব অর্থে চীনের সহায়তায় নির্মিত হয়েছে। এর বাইরেও রাশিয়া ও ভারতের সহায়তায় বাস্তবায়ন হচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্প। জাপানের সহায়তায় মেট্রোরেল। দেশ এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে এলএনজি যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ।
বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী নানা আনুষ্ঠানিকতা, নানা আয়োজনে সম্পন্ন হবে। আমরা এই মহান দিনটিতে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর সহকর্মী মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদানকারী সকল নেতাকে। শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করব সকল শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও নির্যাতিত মা-বোনদের। যে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন নিয়ে এ দেশের সাধারণ মানুষ অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিল, জীবনপণ শপথ নিয়েছিল, তা বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব আমাদের সবার। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে সেটাই হবে আমাদের স্বতঃস্ফূর্ত অঙ্গীকার।