বিয়ের আনুষ্ঠানে যোগ দিতে কুলাউড়ায় পারাবত ট্রেনের ধাক্কায় একই পরিবাবের বাবা ও ছেলে শিশুর মৃত্যু, আহত ৬

9

মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ভাটেরা ইউনিয়নের হোসেনপুর এলাকায় রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) ১টার দিকে ঢাকা সিলেট রেল লাইনে সিলেটগামী আন্ত:নগর পারাবত ট্রেন মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে একই পরিবারের বাবা ও ছেলেসহ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত দু’জন হলেন ফরিদ উদ্দিন (৫২) ও আফিফ (৮)। তারা দুজন বাবা-ছেলে।
তাদের বাসা সিলেট নগরীর লোহারপাড়া এলাকার কাজী জালাল উদ্দিন ১২/১-এ। এ দুর্ঘটনায় আরও ৬ জন আহত হয়েছেন।
ঘটনাস্থলে জসিম উদ্দিন,রহিম মিয়াসহ বেশ কয়েকজন জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভাটেরা রেলস্টেশন অতিক্রম করার পর হোসেনপুর এলাকায় দুপুর ১টার দিকে একটি মাইক্রোবাস (নোহা) গাড়ি রেললাইন ক্রস করার সময় সজোরে ধাক্কা খায়। এ সময় ট্রেনটি প্রায় অর্ধকিলোমিটার দূরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় মাইক্রোবাসটিকে।
এ ঘটনায় ফরিদ উদ্দিন (৫২) ও আফিফ নামে ৮ বছরের এক শিশু মারা গেছে। গাড়িতে থাকা অন্য ৬ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
নিহতদের স্বজন ভাটেরা ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা রুনেল আহমদ জানান, রবিবার তাদের ভাতিজা সুহেল আহমদের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। বিয়েতে অংশ নেওয়ার জন্য সিলেটের আম্বরখানা লোহাপাড়া থেকে দুটি মাইক্রোবাস (নোহা) গাড়িতে তাদের আত্মীয়রা এসেছিলেন। পথিমধ্যে বাড়িতে আসার আগেই হোসেনপুর গ্রামে প্রবেশের সময়কালে প্রথমে একটি গাড়ি রেললাইন অতিক্রম করে ফেলে। এরপর দ্বিতীয় গাড়িটির দুটি চাকা রেললাইন অতিক্রম করার সময় রেললাইনের ওপর আটকা পড়ে। গাড়িতে মোট ৯ জন যাত্রী ছিলেন। তখন পারাবত ট্রেনটি গাড়িটিকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহতরা হলেন- কামাল মিয়া, লিলি বেগম, রিনু বেগম এবং রবু বেগম।
খবর পেয়ে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাদেক কাওসার দস্তগীর, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল মোল্লা, অফিসার্স ইনচার্জ বিনয় ভূষণ রায়, ওসি (তদন্ত) মো. আমিনুল ইসলামসহ ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
কুলাউড়া থানার ওসি বিনয় ভূষণ রায় স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বলেন, দুজন মারা গেছেন। ছয়জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সঠিক তথ্য জানার চেষ্টা করছি। দূর্ঘটনার পর সিলেটের সাথে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে দুপুর ২টা দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উপস্থিত নিহত ফরিদ মিয়ার ভাগ্নি তানজিনা বেগম বলেন, দুটি মাইক্রোবাস (নোহা) গাড়ি যোগে তারা সকালে কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা হোসেনপুর এক আত্মীয়ের বিয়েতে যাচ্ছিলেন। একটি মাইক্রোবাস আগে ছিলো। পেছনের মাইক্রোবাসটিকে ট্রেন ধাক্কা দেয়। এতে তার মামা ও মামাতো ভাই নিহত হন। এছাড়া তানজিনার মামি, মামাতো বোন, খালাসহ ৬ জন আহত হন।