ভিয়েতনামে কারখানা বন্ধ, সুযোগ দেখছে বাংলাদেশ!

16

কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব প্রথম ধরা পড়ে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে। তারপর থেকেই একের পর এক দেশে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। তবে করোনা মহামারির শুরু থেকেই কঠোর বিধিনিষেধের মাধ্যমে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এনে পুরো বিশ্বের নজর কেড়েছিল ভিয়েতনাম। সেই দেশটিই এখন ধুঁকছে করোনা সংক্রমণে।
চীনের সঙ্গে সীমান্তবর্তী এই দেশটিতে করোনার সংক্রমণ প্রথম ধরা পড়ে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। তবে আশ্চর্যজনকভাবে সেখানে সংক্রমণ ছিল একেবারেই কম। এমনকী প্রায় এক বছর সেখানে করোনা সংক্রমণে একজনেরও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। শুরু থেকেই সংক্রমণ রোধে গণহারে করোনা পরীক্ষা, বিভিন্ন জায়গায় মাস্কের ‘ফ্রি বুথ’ চালু করা, ঝুঁকিপূর্ণ মনে হলেই কোয়ারেন্টাইনে রাখাসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ দেশটিকে করোনা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করেছে।
কিন্তু করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু নিয়ন্ত্রণ করে বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দেওয়া সেই ভিয়েতনামের পরিস্থিতিই এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে। ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ৩২ হাজার ৯৩৭। এর মধ্যে মারা গেছেন ৪ হাজার ১৪৫ জন। সুস্থ হয়েছেন ৮০ হাজার ৩৪৮ জন।
অপরদিকে দেশটিতে বর্তমানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৪৮ হাজার ৪৪৪, যা বেশ উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। প্রতিদিন নতুন করে রেকর্ডসংখ্যক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে বিভিন্ন কলকারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে বিশ্বের অন্যতম পোশাক ও জুতা উৎপাদনকারী দেশটিকে বেশ বিপাকে পড়তে হচ্ছে। একই সঙ্গে ভিয়েতনাম থেকে পণ্য নেয়া বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডও খুঁজতে শুরু করেছে বিকল্প পথ।
এক সময় করোনা সংক্রমণ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারা এমন একটি দেশের জন্য সাপ্লাই চেন ব্যাহত হওয়ার বিষয়টি একটি বড় ধাক্কা হিসেবেই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে গত বছর করোনা মহামারির মধ্যেও এশিয়ার অল্পকিছু দেশের মধ্যে ভিয়েতনাম ছিল অন্যতম যারা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছিল। এমনকী পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশকে পেছনে ফেলে সাফল্য দেখিয়েছে ভিয়েতনাম।
সম্প্রতি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এই তালিকায় প্রথম অবস্থান ধরে রেখেছে চীন। আর তৃতীয় অবস্থানে নেমেছে বাংলাদেশ। বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা চলছিল। ৯ কোটি ৬৪ লাখ ৬০ হাজার জনসংখ্যার এই দেশটি যেভাবে করোনা মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশকে টপকে গেছে তা নিয়ে বেশ আলোচনাও হয়েছে। ২০২০ সালে ২ হাজার ৯শ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করে ভিয়েতনাম। এসময় বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল দুই হাজার ৮শ কোটি ডলার। আগের বছর ছিল তিন হাজার ৪শ কোটি ডলার। সেবছর বাংলাদেশের তুলনায় ৩শ কোটি ডলার কম রপ্তানি করেছিল ভিয়েতনাম।