আগষ্ট ঘিরেই টার্গেট জঙ্গিদের, সতর্ক গোয়েন্দারা

4

কাজিরবাজার ডেস্ক :
শোকের মাস আগষ্ট এলেই পর্দার অন্তরালে সক্রিয় হয় দেশী-বিদেশী অশুভ শক্তি। নানামুখী ষড়যন্ত্রে অপতৎপরতায় মেতে উঠে এমন আশঙ্কা গোয়েন্দা সংস্থার। শোকের মাস আগষ্টে বার বার জঙ্গি হামলা চালিয়ে আসছে জঙ্গিগোষ্ঠী। জঙ্গি সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর নজরদারি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ষড়যন্ত্র বা চক্রান্ত শেষ হয়নি দাবি করে নেপথ্যের রাজনৈতিক ঘটনাবলীর ওপর প্রতিবেদন তৈরি করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, জঙ্গি সংগঠন জেএমবি এই শোকের মাসে ১৭ আগষ্ট ঘটিয়েছে দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলে থাকাকালে জঙ্গিগোষ্ঠী তাকে হত্যার জন্য ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে। এবারও যে শোকের মাস আগষ্টে জঙ্গি হামলা ও নাশকতার ঘটনা ঘটানো হতে পারে এমন আশঙ্কায় নজরদারি শুরু করা হয়েছে। ষড়যন্ত্র বা চক্রান্ত শেষ হয়নি দাবি করে নেপথ্যের রাজনৈতিক ঘটনাবলীর ওপর গোয়েন্দা সংস্থার তৈরি করা
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আগষ্ট মাসে বার বার জঙ্গি হামলার নেপথ্যের কারণ হচ্ছে, যারা জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোকে মদদদান, আর্থিক সহায়তা, পৃষ্ঠপোষকতা করছে তারা থেকে যাচ্ছে পর্দার অন্তরালে। পর্দার অন্তরাল থেকে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোকে জঙ্গি তৎপরতায় উৎসাহ যোগাচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধী ’৭১ ও ’৭৫’র পরাজিত শক্তি।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট সপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতার মসনদে বসে জামায়াত-শিবিরকে পুনর্বাসিত করেন। যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে জামায়াতের আমির গোলাম আযমসহ যারা পাকিস্তানে ছিলেন তাদের দেশে এনে এবং যারা দেশে ছিলেন তাদের প্রকাশ্যে রাজনীতি করার সুযোগ দান করেছেন জেনারেল জিয়া। তারপর তিনি রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের নিয়ে দল গঠন করেন। বিএনপি নামক দলের ব্যানারের আড়ালের এসব অপশক্তি সংগঠিত হয়েছে। সপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান বিএনপি-জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠী। বিএনপি-জামায়াত, যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠী ক্ষমতায় এলে ব্যাপকভাবে জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে যায় দেশব্যাপী। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের মধ্যে জঙ্গি হামলা, নাশকতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে ক্ষমতাচ্যুতি করার জন্য ছক কষে জঙ্গি হামলা ঘটানো হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের এই শোকের মাসে আবারও নতুন করে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটানোর জন্য বার বারই চেষ্টা করা হচ্ছে।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এবার শোকের মাস আগস্টে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে নাশকতা ও নৈরাজ্যের ছক কষে তৎপরতা শুরু করে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি জামায়াত-শিবির ও জঙ্গিগোষ্ঠী। নেপথ্য থেকে তাদের মদদ দিচ্ছে বিদেশে অবস্থানকারী বিএনপির মতাদর্শী উগ্রপন্থী যাদের বিদেশী অশুভ শক্তির সঙ্গে গোপন যোগাযোগ আছে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তাদের এ তৎপরতায় ইন্ধন যোগাচ্ছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটসহ উগ্র মৌলবাদী ধর্মান্ধ দল ও বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠী।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন বলা হয়েছে, রাজধানীর পান্থপথে নব্য জেএমবির আত্মঘাতী জঙ্গি সাইফুল ইসলামের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মহত্যা করা এবং ১৫ আগষ্টে ধানমণ্ডির ৩২নং বাড়িতে ও শোক র‌্যালিতে জঙ্গি হামলার ছক কষার ঘটনার আগাম আভাস দেয় গোয়েন্দা সংস্থা। এতে জঙ্গি হামলা ঠেকানো সম্ভবপর হয়। শোকের মাসে নতুন করে কোন ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা যাতে না ঘটতে পারে সে জন্য আগাম গোয়েন্দা নজরদারি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতিসহ নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। আগষ্ট মাস অত্যন্ত শোক ও বেদনাবিধুর হওয়ায় নানা ধরনের কর্মসূচী পালন করে আওয়ামী লীগসহ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। এই সুযোগটা নিতে পারে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বিশেষ করে জামায়াত-শিবির যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠী। এদের মদদ দিচ্ছে পাকিস্তানপন্থী উগ্র মৌলবাদী ধর্মান্ধ চক্রটি। এ জন্য পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই স্বাধীনতাযুদ্ধের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে ইতোপূর্বেই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ধ্বংসে ষড়যন্ত্রের নীলনকশা করেছে, যা বাস্তবায়নের চেষ্টা করতে পারে।