জকিগঞ্জে আবিষ্কার হলো দেশের ২৮তম গ্যাসক্ষেত্র ॥ উত্তোলন করা যাবে ১২ থেকে ১৩ বছর পর্যন্ত

6

কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশে আরও একটি নতুন গ্যাসক্ষেত্র পেয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স)। সিলেটের জকিগঞ্জে আবিষ্কৃত দেশের ২৮তম এই গ্যাসক্ষেত্রটি থেকে প্রায় ১২ থেকে ১৩ বছর পর্যন্ত গ্যাস উত্তোলন করা যাবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
সোমবার জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে ‘এনার্জি সিকিউরিটি: মডার্ন কনটেক্সট, চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড ওয়ে ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী একথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন করে গ্যাস এক্সপ্লোরেশনের বিষয়ে আজ আমি বিশেষভাবে জানাতে চাই- জকিগঞ্জে আমরা ইতিমধ্যে প্রায় ৬৮ বিসিএফ (৬৮ বিলিয়ন ঘনফুট) গ্যাসের সন্ধান আমরা পেয়েছি। প্রতিদিন প্রায় ১০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উত্তোলন করতে পারব। যেখান থেকে প্রায় ১২ থেকে ১৩ বছর পর্যন্ত গ্যাস উত্তোলন করতে পারব। যার মূল্য প্রায় এক হাজার ২৭৬ কোটি টাকা।’
এ সময় জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘সেখানে থ্রিডি সার্ভে করব এবং সেটার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সেখানে আরও তিনটি কূপ খনন করতে যাচ্ছি।’
নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের জন্য বাপেক্সকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা দেশের ২৮তম গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করতে পেরেছে। এরসঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আমি ধন্যবাদ জানাই। সিনিয়র সচিবের নেতৃত্বে জ্বালানি বিভাগের যে টিম এই কাজ করেছে তাদেরও ধন্যবাদ জানাই।
করোনার প্রথমদিকে গ্যাস ও তেলের দাম কমে গিয়েছিল জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এরপরই কিন্তু দাম ঊর্ধ্বমুখী, অর্থাৎ বোঝা যাচ্ছে গ্যাসের ব্যবহার সারাবিশ্বে বেড়ে গেছে। সে জন্য আমরা চেষ্টা করছি তেল ও গ্যাস কীভাবে মোর অ্যাফোর্ডেবল করা যায়, সাসটেইনেবিলিটি আরও বাড়ানো যায়। নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি কীভাবে দেওয়া যায়। এরমধ্যে কিন্তু আমাদের ইন্ডাস্ট্রি গ্রোথ বেড়েছে। প্রতি বছরই পাঁচ থেকে ছয় শতাংশ ইন্ডাস্ট্রি গ্রোথ কন্টিনিউ হচ্ছে। বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে।’
করোনাকালে সর্বপ্রথম জ্বালানি বিভাগে ১০৫ শতাংশ এডিপি অগ্রগতি হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শক্তিশালী নেতৃত্ব ও টিমওয়ার্ক থাকলে সবকিছু সম্ভব। আমি আশাবাদী আগামী দিনগুলোতে আরও ভালো করবে।’
নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমাদের অনেকগুলো বড় বড় প্রজেক্ট আসছে। নিরবচ্ছিন্ন ও সাশ্রয়ীমূল্যে জ্বালানি দিতেই এগুলোর মাধ্যমে কাজ করা হবে। ঢাকা শহরসহ আশেপাশের এলাকায় পুরোনো পাইপলাইনগুলো উঠিয়ে ফেলব। আমরা ডিস্ট্রিবিউশনগুলো আরও আপডেট করতে চাই। আমরা কার্যক্রম অটোমেশনের আওতায় নিয়ে যেতে চাই। ইতিমধ্যে রংপুর, পটুয়াখালী, খুলনা, যশোর থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি বড় শহরে গ্যাস কানেকটিভি তৈরি করার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি।’
প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, ইতিমধ্যে পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট করার জন্য ২৫ একরের মতো জমি পাওয়া গেছে। এজন্য জাইকা, এডিবিসহ অনেকের সঙ্গে আলাপ চলছে।
অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাইড্রোকার্বন ইউনিটের মহাপরিচালক এ এস এম মঞ্জুরুল কাদের। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ওয়াসিকা আয়শা খান।