শ্রমিকদের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ

2

কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে খুলছে গার্মেন্টসসহ রফতানিমুখী শিল্প-কারখানা। বিকল্প ব্যবস্থা থাকলেও কাজে যোগ দিতে ভোগান্তি সঙ্গী করে কর্মস্থলে ফিরেছেন শ্রমিকরা। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য কারখানা মালিকদের অনুরোধেই সরকার এই ছাড় দিয়েছে। রফতানিকারক শিল্প-কারখানার মালিকরা এই ছাড়ের জন্য একাধিকবার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, কারখানায় উৎপাদন চালু রাখতে না পারলে সময়মতো ক্রেতাদের পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। সময়মতো পণ্য না পেলে ক্রেতারা চলতি অর্ডার বাতিলের পাশাপাশি আগামী দিনের অর্ডারও বাতিল করে দেবে। খুঁজে নেবে বিকল্প বাজার। মারাত্মক ক্ষতির মুখোমুখি হবে দেশের রফতানি খাত। সব দিক বিবেচনা করে সরকার করোনার বিস্তারে কিছুটা ঝুঁকি নিয়েও শুধু রফতানিমুখী শিল্প-কারখানার জন্য ছাড় দিয়েছে। সরকারের ছাড়ের ঘোষণায় শ্রমিকরা ছুটেছেন স্রোতের মতো। লঙ্ঘিত হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, শ্রমিকদের এই কর্মস্থলমুখী স্রোতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে। চাকরি হারানোর ঝুঁকি কমানো জন্য শ্রমিকরা করোনার ঝুঁকি নিয়ে কাজে যোগদান করেছেন। যদিও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন শ্রমিকদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন, রফতানিমুখী শিল্প-কারখানা খুললেও আপাতত কেউ কাজে যোগ না দিলে চাকরি যাবে না। বিজিএমইএর বক্তব্য উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘যারা ঢাকা বা আশপাশে অবস্থান করছেন তাদের নিয়েই কারখানা পরিচালনা করবেন। এই পাঁচদিন যারা কাজ করবেন না তাদের চাকরিতে কোন সমস্যা হবে না। তারা ৫ তারিখের পর ধাপে ধাপে আসবেন। এর ভিত্তিতেই রফতানিমুখী কারখানার জন্য ছাড় দেয়া হয়েছে।’
কঠোর বিধিনিষেধে শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে যাবার পর মালিকরা এই খাতে সম্ভাব্য ক্ষতির কথা তুলে ধরে সরকারের সঙ্গে নানাভাবে দেন দরবার করেছেন। এ নিয়ে মালিকদের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে সরকার পক্ষের বৈঠক হয়েছে। করোনার ঝুঁকি না বাড়িয়ে কিভাবে কারখানা খোলা যায় এ নিয়ে এসব বৈঠকে আলোচনা হয়। কারখানার মালিকরা আশ্বাস দিয়েছেন, আশপাশের শ্রমিকদের নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা পরিচালনা করবেন। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ছাড় দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরই প্রেক্ষিতেই সংস্থাপন প্রতিমন্ত্রী কিংবা বিজিএমইএ সভাপতি দূর-দূরান্ত থেকে শ্রমিকদের না আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবু শ্রমিকরা এসেছেন, কাজে যোগ দিয়েছেন। এখন কারখানা মালিকদের উচিত হবে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে কর্মস্থলে এসব শ্রমিকের করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে রাখা। একই সঙ্গে যদি কেউ আক্রান্ত হয়ে যায় তাহলে তাদের দায়িত্ব নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।