১৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে দোয়ারাবাজারবাসীর স্বপ্নের সেতুর উদ্বোধন ডিসেম্বরে

8

দোয়ারাবাজার থেকে সংবাদদাতা :
বিভাগীয় শহর সিলেটের সাথে দোয়ারাবাজার উপজেলাবাসীর যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা সুরমা নদী ও ছাতক শহর হয়ে। ছাতকের সেই সুরমা নদীর যোগাযোগ ব্যাবস্থা ভালো না থাকায় অনেক কষ্ট পোহাতে হয়েছিলো দোয়ারাবাজার উপজেলাবাসীকে। ছাতকের এ সুরমা নদীর ব্রীজ উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে দীর্ঘদিনের কষ্ট দূর করে স্বপ্ন পূরণ হতে পারে দোয়ারাবাজার উপজেলাবাসীর।
প্রায় শেষ পর্যায়ে সুরমা নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ। সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে ১৫ বছর আগে নির্মাণ শুরু হওয়া সেতুটি সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী ডিসেম্বরে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। এই সেতু নির্মাণের মধ্যদিয়ে বিভাগীয় শহর সিলেটের সাথে -দোয়ারাবাজারবাসীর যোগাযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, আর্থসামাজিকসহ সকল ক্ষেত্রে সুফল বয়ে আনবে। ফলে ছাতক- দোয়ারাবাজার দুইপাড়ের মানুষের সার্বিক জীবন মানের পরিবর্তনে মাইলফলক হবে। সরাসরি যানাবাহন চলাচলের মধ্যদিয়ে উন্নত যোগাযোগ সৃষ্টি হবে দুই উপজেলাবাসীর মধ্যে।
সুরমা নদীর দক্ষিণ পারে অবস্থিত ছাতক ও উত্তর পারে অবস্থিত দোয়রাবাজার এ দুই উপজেলাকে একসূত্রে বাঁধার লক্ষ্য নিয়ে ২৩ (আগষ্ট) ২০০৬ সালে সুরমা নদীর উপর সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়। বিভিন্ন জটিলতার সংকুলান করতে না পারায় বছরের পর বছর বন্ধ ছিল সেতুটির নির্মাণ কাজ। ১৫ বছরের অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে ১১৩ কোটি টাকার নতুন একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয় একনেক। পরবর্তীতে আরও ২৭ কোটি টাকা বাড়িয়ে ১৪০ কোটি টাকা নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় সেতুটি নির্মানে।
বর্তমানে মূল সেতুর কাজ ৯০ ভাগ শেষ হয়ে যাওয়ায় এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন এখন বাস্তবায়ন হতে চলেছে। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা এই সেতুটি স্থানীয় মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে ।
সেতুর নির্মান কাজ সর্ম্পূণ হলে ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে, দোয়ারাবাজারে ভারত থেকে আসা আমদানিকৃত চুনাপাথর সহ ছাতকের শিল্পকারখানায় উৎপাদিত পণ্য সড়কপথে পরিবহন সহজ হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ, আর্থসামাজিকভাবে নানা সুফল ভোগ করবেন দুই উপজেলার বাসিন্দারা। সময় কমে আসবে চলার পথেও।
দোয়ারাবাজারে ভারত থেকে আমদানিকৃত চুনাপাথর ব্যবসায়ী আলিম উদ্দিন বলেন, আমি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সপ্তাহে ২-৩ বার আমাকে ছাতক ও সিলেটে যেতে হয় ব্যাবসার কাজে। সেতুর অভাবে সীমাহীন কষ্ট করেছি। ফেরি ঘাটে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর অনেক দিন সঠিক সময়ে গন্তব্যস্থানে গিয়ে পৌছিতে পারিনি। সেতুটি চালু হওয়ার খবরে সুরমার উত্তরপাড়ের মানুষদের খুশির সীমা নেই।
দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক গণমাধ্যমকর্মী তাজুল ইসলাম ও নরসিংপুর ইউপি চেয়ারম্যান নূর উদ্দিন আহমদ বলেন, দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ছাতকে রয়েছে। তাছাড়া ছাতক একটি শিল্পনগরী এলাকা। ছাতকের এই সুরমা নদীর সেতু চালু হলে ছাতক ও সিলেট শহরের সাথে দোয়ারাবাজার উপজেলাবাসীর সড়ক যোগাযোগে নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচিত হবে।