ফল ও সবজি রফতানি বাড়–ক

7

বাংলাদেশকে ঘিরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আম কূটনীতি বেশ জমজমাট হয়ে উঠেছে বলেই প্রতীয়মান হয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, নেপালের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী, ভুটানের রাজা ও প্রধানমন্ত্রী, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীকে কয়েক শ’ কেজি আম পাঠিয়েছেন। ভারতের কয়েকটি রাজ্য যেমন- পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীদেরও আম পাঠানো হয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে। অধিকাংশই রংপুরের বিখ্যাত সুস্বাদু হাঁড়িভাঙ্গা আম। কিছু ফজলি, ল্যাংড়া, হিমসাগরও আছে। কোন কোন দেশে পাঠানো হয়েছে জাতীয় ফল কাঁঠালও। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশেও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। ভারতের কয়েকটি রাজ্য থেকেও প্রধানমন্ত্রীকে উপহার পাঠানো হয়েছে চা, মধু, আনারস, অর্গানিক মসলা ইত্যাদি। করোনা মহামারীর এই ভয়ঙ্কর দুঃসময়েও আম কূটনীতির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন, সংহতি-সহযোগিতা সৃষ্টি সর্বোপরি যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে অত্যন্ত ইতিবাচক ও সুদূরপ্রসারী অবদান রাখতে সহায়ক হবে নিশ্চিতভাবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী চিঠির মাধ্যমে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার অর্থায়নে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট আয়োজিত এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় শেরেবাংলা নগরে কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে। কর্মশালার বিষয় হলো- ফল ও শাকসবজি রফতানি আরও বাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রার আয়ের সম্ভাবনা। উদ্যান ফসলের রফতানির প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ, প্রযুক্তির উন্নয়ন ও প্রয়োগ বিষয়ক কর্মশালায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের ফল ও শাকসবজি রফতানির ক্ষেত্রে ২০ ধরনের প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করা হয়। সেসব দূরীকরণে সুপারিশ করা হয় ১৬টি। সর্বোপরি প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু হয় ৭ ধরনের ফল ও সবজি নিয়ে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে দুটো ফল- আম ও লেবু। আর ৫টি সবজি হলো- দেশীয় শিম, বেগুন, শশা, পটোল ও করোলা। আশা করা যায় পর্যায়ক্রমে প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করে বিদেশে ফল ও সবজি রফতানি আরও বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে অচিরেই। এক্ষেত্রে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোকে কার্যকর ভূমিকা ও উদ্যোগ রাখতে হবে। সর্বোপরি বিমানের পরিবর্তে জাহাজ ও নৌপথে রফতানির ব্যবস্থা করতে হবে ফল ও সবজির। তাহলে তা হবে মূল্য সাশ্রয়ী ও বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতামূলক।
এ অবস্থায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফলমূল শাকসবজি রফতানি বাড়ানো ছাড়া গত্যন্তর নেই।