টিকাদানে সাফল্য

6

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একেএম আবদুল মোমেন করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রাজনীতি-কূটনীতির কথা বললেও বাংলাদেশ সাফল্যের সঙ্গে এই বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। এটি মূলত সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং বিশ্বব্যাপী সমুজ্জ্বল ভাবমূর্তির কারণে। যে কারণে প্রায় আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর দ্বিতীয় দফা নিবন্ধন শুরুর পরদিন থেকেই সারা দেশে গণহারে করোনার টিকা প্রদান শুরু হয়েছে। রাজধানী ঢাকার সাতটি সরকারী মেডিক্যাল কলেজসহ ৬৭টি কেন্দ্রে চলমান রয়েছে গণটিকাদান কার্যক্রম। পরে এই কেন্দ্রের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। ইতোমধ্যেই চীনের সিনোফার্মের টিকার প্রথম ডোজ এবং মজুদ সাপেক্ষে এ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজের টিকা প্রয়োগ শুরু হয়েছে। কোভ্যাক্সের আওতায় পর্যায়ক্রমে আসতে শুরু করেছে ফাইজার, মডার্না এবং এ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা। রাশিয়ার সঙ্গে স্পুটনিক-ভি টিকা কেনাসহ দেশে প্রস্তুতের উদ্যোগও প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। আগামীতে জনসন এ্যান্ড জনসন থেকে অন্তত ৫ কোটি ডোজ টিকা কেনার প্রস্তুতি নিয়েও অগ্রসর হচ্ছে সরকার। বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের টিকাদানের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও টিকা দেয়া হচ্ছে নিবন্ধনের মাধ্যমে। এর পাশাপাশি পোশাক শ্রমিকদের টিকাদান কর্মসূচী কার্যক্রম শুরু হবে খুব শীঘ্রই। টিকা গ্রহণের বয়সসীমা করা হয়েছে ৩৫ বছর, যা ইতিবাচক নিঃসন্দেহে। পর্যায়ক্রমে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদেরও নিয়ে আসা হবে টিকাদানের আওতায়।
মহান জাতীয় সংসদের চলমান বাজেট অধিবেশনে সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও জোর দিয়ে বলেছেন, দেশের সব মানুষ বিনামূল্যে করোনার টিকা পাবে। দেশের অন্তত ১০ কোটি অর্থাৎ ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় এনে করোনার বিরুদ্ধে হার্ড ইমিউনিটি তথা শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সরকার বদ্ধপরিকর। টিকা কেনার জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় স্বাস্থ্য খাতের জরুরী চাহিদা মেটানোর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ। অর্থায়নে এগিয়ে এসেছে বিশ্বব্যাংক, এডিবিও। সুতরাং অর্থের কোন অভাব হবে না টিকা কেনার জন্য।
১০ হাজার চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম সংগ্রহ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। চলতি বছরও বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আত্মপ্রত্যয়ের সঙ্গে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন, দেশে কেউ না খেয়ে থাকবে না। তদুপরি বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাবে সবাই।
বাংলাদেশে টিকা সরবরাহ ও প্রয়োগ করা হচ্ছে সরকারী ব্যবস্থানায় সারা দেশে। এর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ২৬ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে। টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মোকাবেলার জন্য তৈরি হয়েছে নির্দেশিকা। উল্লেখ্য, এক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিশেষ সাফল্য রয়েছে, ইতোমধ্যে যার স্বীকৃতি মিলেছে জাতিসংঘ বিশ্বব্যাংক ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক।