আজ থেকে তিনদিনের সীমিত লকডাউন ॥ বৃহস্পতিবার থেকে সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউন ॥ পণ্যবাহী যান ও রিক্সা ছাড়া সব গণপরিবহন বন্ধ ॥ সরকারী-বেসরকারী অফিস প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মচারী দিয়ে চালু রাখার নির্দেশ

12

কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে তিনদিনের সীমিত লকডাউনের (বিধিনিষেধ) ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এই লকডাউন চলবে সোমবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত। লকডাউনকালে পণ্যবাহী যান ও রিক্সা ছাড়া সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারী-বেসরকারী অফিস শুধু প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী দিয়ে চালু রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সীমিত আকারে লকডাউনের পর শুরু হবে দেশব্যাপী সর্বাত্মক লকডাউন। সর্বাত্মক লকডাউন ও ঈদুল আযহাকে ঘিরে ঢাকা ছাড়তে চাওয়া মানুষের চাপে রাজধানীতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
রবিবার মন্ত্রী পরিষদ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বর্তমানে চালু থাকা বিধিনিষেধের সঙ্গে আরও কয়েকটি শর্ত যোগ করে সীমিত আকারে লকডাউনের ঘোষণা দেয়া হয়। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ৫ এপ্রিল শুরু হওয়া সরকারের বিধিনিষেধ থেকে রবিবার পর্যন্ত বহাল রয়েছে। এখন সেই বিধিনিষেধের সঙ্গে আরও কয়েকটি নতুন শর্ত যোগ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসজনিত রোগ (কোভিড-১৯) সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে আগের সব বিধিনিষেধ ও কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় কিছু শর্ত যোগ করে আজ সোমবার সকাল ৬টা থেকে ১ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। সরকারের জারি করা নতুন বিধিনিষেধগুলো হলো : সারাদেশে পণ্যবাহী যানবাহন ও রিক্সা ছাড়া সব গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। এটি বাস্তবায়নে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে নিয়মিত টহলের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করবে। এছাড়া আজ থেকেই সব শপিংমল, মার্কেট, পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। তবে খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তরোঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার বিক্রয় (শুধু অনলাইন/টেকওয়ে) করতে পারবে। হোটেলে বসে কোন খাবার পরিবেশন করা যাবে না।
সরকারী-বেসরকারী অফিস প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নিজ নিজ অফিসের ব্যবস্থাপনায় তাদের আনা-নেয়া করতে হবে। জনসাধারণকে মাস্ক পরার জন্য আরও প্রচার চালাতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সীমিত ও কঠোর লকডাউনের আগে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও হেঁটে, মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কারে যে যেভাবে পারছে শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব কোনটাই মানছে না বাড়ি ফিরতে চাওয়া মানুষজন। দেশের করোনার ইতিহাসে শনাক্তের হার বিবেচনায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত হলেও মানুষের মধ্যে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে। গ্রামে যেতে গণপরিবহনে তোয়াক্কা করছেন না অনেকেই। তাদের কাছে কোনভাবেই ঢাকার বাইরে বেরোতে পারলেই হতো। আবার বাইর থেকে ঢাকামুখী মানুষের সংখ্যাও কম নয়। জরুরী প্রয়োজনে ও চিকিৎসাসেবা নিতে অনেকেই রাজধানীতে ছুটছেন। ঢাকার প্রবেশমুখে রবিবার ছিল শুধু মানুষ আর মানুষ।