করোনায় দিশাহারা নেপাল, অক্সিজেন সঙ্কট চরমে

16

কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনায় দিশাহারা হিমালয়কন্যা নেপাল। গত কয়েকদিন দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু হু হু করে বাড়ছে। এমতাবস্থায় জরুরী টিকা চেয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন নেপালী প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, যুক্তরাজ্যে নেপালের গোর্খা সেনারা নিজের জীবন বিপন্ন করে দায়িত্ব পালন করছেন। এ কারণে পুরনো বন্ধু হিসেবে যুক্তরাজ্যের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নেপালে টিকা সরবরাহ করা উচিত। এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১৭ কোটি ৩৩ লাখ ৭৪ হাজার ৫৮৪ জন। মৃত্যু ৩৭ লাখ ২৮ হাজার ৯২৭ জন। সুস্থ হয়েছে ১৫ কোটি ৬১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৮৪ জন।
মে মাস থেকে নেপালে করোনার সংক্রমণ বেড়েছে। দেশটিতে গড়ে একদিনে ৯ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় সংক্রমিত হচ্ছে। এ মাসে নেপালে চার হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। নেপালী প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে তিনি নেপালের পরিস্থিতি বোঝাতে চান। ভারতের মতো নেপালের হাসপাতালগুলোতে শয্যা ও অক্সিজেন সরবরাহের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। রাজধানী কাঠমান্ডুতে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও গ্রামাঞ্চলের পরিস্থিতি বেশি জটিল। ভারতের সঙ্গে সীমান্ত খোলা থাকায় করোনার ভারতীয় ধরন নেপালে দ্রুত ছড়িয়েছে। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ বলেছে, নেপালে তারাই প্রথম স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ পাঠিয়েছেন ও চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছেন। কোভ্যাক্স কর্মসূচীতে যুক্তরাজ্য টিকা সরবরাহ করেছে। এ বছর নেপালসহ কোভ্যাক্সের আওতায় থাকা দেশগুলোতে ১শ’ কোটির বেশি টিকা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ব্রিটেন।
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগ রয়েছে ওলির বিরুদ্ধে। তিনি বলেছিলেন, পেয়ারা পাতা ও হলুদে করোনা সেরে যায়। খাদ্যাভ্যাসের কারণে নেপালীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
চীনে শিশুদের জন্য টিকার অনুমোদন : সিনোভ্যাক বায়োটেকের তৈরি কোভিড টিকা ৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশু-কিশোরদের জন্য জরুরী ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে চীন। স্থানীয় সময় শুক্রবার সিনোভ্যাকের চেয়ারম্যান ইয়িন ওয়েইডং দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টিভিকে এই কথা জানান। ধীরে শুরু হলেও চীনে এখন প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক মানুষকে টিকা দেয়া হচ্ছে। গত ৩ জুন পর্যন্ত চীনে মোট ৭২ কোটি ৩৫ লাখ টিকার ডোজ দেয়া হয়েছে। এতদিন আঠারো থেকে তদুর্ধদের দেয়া হলেও এবার চীনে শিশু-কিশোরদের টিকা দেয়ার পথ উন্মুক্ত হলো।
সিনোভ্যাক বায়োটেকের চেয়ারম্যান ইয়িন ওয়েইডং রাষ্ট্রায়ত্ত টিভিতে প্রচারিত সাক্ষাতকারে বলেন, চীনের টিকাদান কর্মসূচীর আওতায় শিশু-কিশোরদের টিকা দেয়া শুরু হবে। তিনি বলেন, করোনা টিকার ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় ঝুঁকি কম বলে শিশু ও কিশোরদের টিকায় ততটা অগ্রাধিকার দেয়ার কথা না। কারণ প্রবীণরা করোনায় সংক্রমিত হলে তাদের উপসর্গগুলো মারাত্মক আকার ধারণ করায় তারা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।
কোভ্যাক্স টিকার ঘাটতি নিয়ে ডব্লিউএইচওর সতর্কতা : জুন-জুলাই মাসে কোভ্যাক্সের টিকার ঘাটতির বিষয়ে সতর্ক করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, এ কারণে টিকাদান কর্মসূচী বিঘ্নিত হবে। সংস্থার কোভ্যাক্সের দায়িত্ব পালনকারী ব্রুস আইলওয়ার্ড জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের আরও ২০ কোটি ডোজ প্রয়োজন। তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলো এ পর্যন্ত ১৫ কোটি ডোজ দেয়ার অঙ্গীকার করেছে। তবে এতে সঙ্কট কাটবে না। আইলওয়ার্ড বলেন, ‘আমরা ডোজগুলো তাড়াতাড়ি না পেলে টিকা দেয়ার কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হবো। কারণ, আমরা এখনও যথাযথ অবস্থায় নেই। আমাদের হাতে যথেষ্ট ডোজ নেই। দুটি সমস্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রথমত জুন-জুলাই মাসে টিকার দেয়ার জন্য খুব কম অঙ্গীকার করা হয়েছে। এর ফলে আমাদের ঘাটতি রয়ে যাচ্ছে।