কোম্পানীগঞ্জ থেকে মোটরসাইকেল ছিনতাইকারী চক্রের ৭ সদস্য গ্রেফতার, ২টি মোটরসাইকেল উদ্ধার

13
কোম্পানীগঞ্জে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের ঘটনায় আটক ছিনকাইকারী চক্রের ৭ সদস্য ও উদ্ধারকৃত মোটরসাইকেল।

লবীব আহমদ কোম্পানীগঞ্জ থেকে :
কোম্পানীগঞ্জ থেকে মোটরসাইকেল ছিনতাই এর ঘটনায় ২টি মোটরসাইকেল সহ ৭ ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাইফুর রহমান ডিগ্রী কলেজের সামনে থেকে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের মূল ছিনতাইকারীসহ এ চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
রবিবার (৩০ মে) ও সোমবার (৩১ মে) পৃথক পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- কোম্পানীগঞ্জ থানার দক্ষিন বুড়দেও গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে সজল আহমদ (২৪), এসএমপি শাহপরান থানার ইসলামপুর এলাকার মৃত বদরুল ইসলামের ছেলে খায়রুল ইসলাম রায়হান (২০), এসএমপি শাহপরান থানাধীন সুরমা গেট এলাকার বশির আহমদের ছেলে আল আমিন হোসেন শিমুল (২০), একই এলাকার আব্দুল মোতালেবের ছেলে জিহাদ (২০), কানাইঘাট থানাধীন ঢালাইচর গ্রামের হারুনুর রশিদ এর ছেলে আলী হোসেন জনি (২৪), শিবনগর গ্রামের এবাদত রহমানের ছেলে মারুফ আহমদ (২৭), শ্রীপুর গ্রামের মৃত কুতুব আলীর ছেলে দেলোয়ার হোসেন দুলাল।
পুলিশ জানায়, গত ১০ মে সন্ধ্যার সময় কোম্পানীগঞ্জ থানাধীন দয়ারবাজার পয়েন্ট হতে ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালক কোম্পানীগঞ্জ কালিবাড়ী গ্রামের বিলাল আহমদকে এক ছদ্মবেশী ছিনতাইকারী বুড়িডহর গ্রামে যাওয়ার জন্য ৩৫০ টাকায় চুক্তি করে। রাত সাড়ে সাত টার সময় সাইফুর রহমান ডিগ্রী কলেজের সামনে পূর্বের পরিকল্পনা অনুযায়ী অজ্ঞাত দুইজন ছিনতাইকারী রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়, পরে যাত্রীবেশী ছিনতাইকারীসহ অজ্ঞাত দুইজন ছুরি দিয়ে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে বিলাল আহমদের মোটরসাইকেল ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
সাম্প্রতিককালে কোম্পানীগঞ্জে এরকম যাত্রীবেশী কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম উদ্বেগ প্রকাশ করে ছিনতাইকারী চক্রকে গ্রেফতারের জন্য বিশেষ নির্দেশনা দেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশে থানা পুলিশের পাশাপাশি জেলা গোয়েন্দা শাখা ছিনতাইকারী চক্রকে চিহ্নিত করে গ্রেফতারের অভিযানে নামে।
এরই ধারাবাহিকতায় ৩০ থেকে ৩১ মে সোমবার দুপুর দুই টা পর্যন্ত জেলা গোয়েন্দা শাখা (উত্তর), কোম্পানীগঞ্জ থানা এবং কানাইঘাট থানার কয়েকটি টিম কানাইঘাট থানা, এসএমপি এবং কোম্পানীগঞ্জ থানার বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক অভিযানে উল্লেখিত আসামীদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে সজল আহমদ ঘটনার সময় সরাসরি ছিনতাইকাজে অংশ গ্রহন করে। অপর আসামীরা পরস্পর যোগসাজশে ছিনতাইকৃত মোটর সাইকেল একে অপরের নিকট বিক্রি করেছে। সর্বশেষ বিবাদী মারুফের হেফাজত থেকে ভিকটিমের ছিনতাইকৃত মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়।
আসামী আল আমিন শিমুলের তথ্যের ভিত্তিতে অপর একটি মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে যেটি আপাতত চোরাই মোটর সাইকেল মর্মে মনে হচ্ছে।
ভিকটিম বিলালে অভিযোগের ভিত্তিতে কোম্পানীগঞ্জ থানায় দন্ড বিধি ৩৯৪,৪১১,৪১৪,৩৪ ধারার মামলা রুজু হয়েছে।
এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামী সজলের বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ থানা, এসএমপি কোতয়ালী এবং এয়ারপোর্ট থানায় ইতিপূর্বে ছিনতাই (দ্রুত বিচার) সহ মোট ৮ টি মামলা রয়েছে। আসামী রায়হানের বিরুদ্ধে এসএমপি শাহপরান থানায় ২ টি দ্রুত বিচার এবং অপর একটি হত্যা চেষ্টা মামলা রয়েছে। আসামী দুলাল এর বিরুদ্ধে পুলিশ এসল্ট,হত্যা চেষ্টাসহ মোট ৪ টি মামলা রয়েছে। আসামীদের ইতিমধ্যে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে এম নজরুল বলেন, “ইদানীং কোম্পানীগঞ্জসহ সিলেটে মোটরসাইকেল চুরি বেড়ে গেছে। ভিক্টিমের অভিযোগের ভিত্তিতে ও পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন পিপিএম স্যারের নির্দেশে আমরা মোটরসাইকেল চোরদের ধরতে অভিযানে নামি। যার ফলে সিলেট জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের মাধ্যমে মোটরসাইকেল সহ এই ৭ জনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে এবং আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। সকল প্রকার অপরাধী, চোরদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।