সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় গণপরিবহন মালিকরা

13

কাজিরবাজার ডেস্ক :
শপিংমল খোলা, খোলা আছে দোকানপাট। এই পরিস্থিতে লকডাউনের মধ্যেই গণপরিবহন চালুর দাবি তুলছেন পরিবহন খাত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, সব কিছুই সীমিতকারে খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গণপরিবহনের নিষেধাজ্ঞা এখানো শিথিল করা হচ্ছে না। রোজা চলছে। সামনে ঈদ। এই সময় গণপরিবহন বন্ধ রাখায় এই খাত সংশ্লিষ্টরা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তারা আশা করছেন, সরকার বিষয়টি বিবেচনা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালুর ব্যাপারে অনুমতি দেবে।
জানতে চাইলে শুক্রবার সন্ধ্যায় সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, সরকার তো পরিবহন চালু করছে না। সেতুমন্ত্রী (ওবায়দুল কাদের), স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (আসাদুজ্জামান খান কামাল) সঙ্গে কথা বলেছি কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত পায়নি। আমরা স্ট্রেটমেন্ট দিয়েছি। ২৯ এপ্রিল ভোর থেকে পরিবহন চালুর আশা করেছিলাম, তবে এখন পর্যন্ত কোন খবর নেই।
শ্রমিক সংগঠনগুলো আন্দোলন করছে, তারা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই পরিবহন নিয়ে রাস্তায় নামবে বলছে। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত নেই।
এদিকে আগামী ২ মে সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা জানায়, দ্রুত স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহন চালু করতে হবে। অন্যথায় ২ মে সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল এবং ৪ মে সারাদেশে জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে। এর আগে গতকাল তারা গাবতলীতে মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। এসময় তারা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই গণপরিবহন নিয়ে সড়কে নামার ঘোষণা দিয়েছিল।
এর আগে দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে এক বিবৃতি দিয়েছেন সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা ও মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। তারা বলেন, লকডাউনে বাস ছাড়া সবই চলছে। বাস চালু না থাকায় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বিকল্পভাবে সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, টেম্পু, থ্রি-হুইলার, মাইক্রোবাস, স্টাফ বাস, এমনকি এ্যাম্বুলেন্সেও গাদাগাদি করে যাত্রী বহন করা হচ্ছে। এতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। বরং স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়ছে। লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাসে সিটের অর্ধেক যাত্রী, তথা ২ সিটে ১ জন যাত্রী নিয়ে বাস চালু থাকলে করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা থাকবে না।
তারা আরও বলেন, বাস চালুর ব্যাপারে সারাদেশের পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বাস চালুর দাবিতে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সড়ক-মহাসড়কে অবরোধ ও বিক্ষোভ চলছে। লাখ লাখ শ্রমিক কর্মহীন অবস্থায় পড়ে আছে। বহু গরীব মালিক ব্যাংক ঋণের কিস্তিসহ অসহায় জীবন-যাপন করছে।
এসব দিক বিবেচনা করে কর্মহীন শ্রমিকদের মাঝে খাদ্য সহযোগিতা প্রদানসহ বাস চালু করার জন্য সারাদেশের মালিকদের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান তারা।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ৫ এপ্রিল থেকে চতুর্থবারের মতো লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সবশেষ ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে পাঁচই মে মধ্যরাত পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। তবে প্রথমদিকে কড়াকড়ি থাকলেও এখন অনেকটাই ঢিলেঢালাভাবে বিধিনিষেধ চলছে। ঢাকাসহ বড় শহরগুলোয় গণপরিবহন ছাড়া সব ধরণের যানবাহন চলছে। জরুরি সেবার বাইরেও ব্যাংক, কারখানা, বেসরকারি অনেক অফিস আগে থেকেই খোলা ছিল, ২৫ এপ্রিল থেকে শপিংমলও খুলে দেওয়া হয়েছে।