রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টের টিকিট কার্যক্রমের উদ্বোধন, সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি ট্যুরিজম ক্লাবের

15

কে.এম লিমন গোয়াইনঘাট থেকে :
দেশের একমাত্র স্বীকৃত সোয়াম্প ফরেষ্ট বা জলার বন রাতারগুলে প্রবেশের ক্ষেত্রে টিকিট কার্যক্রম চালু করা হয়েছ। শুক্রবার (১২ মার্চ) সকালে সিলেট বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন রাতারগুল বিশেষ জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকায় দর্শণার্থীদের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুসারে প্রবেশের জন্য টিকিট কাউন্টারের উদ্বোধন করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সি এম সি সভাপতি মাহবুব আলম, সারি রেঞ্জ কর্মকর্তা ও সি এম সির সদস্য সচিব সাদ উদ্দিন আহমদ, সহ সভাপতি এডভোকেট শাহজাহান সিদ্দিকী এবং সিএম সি সদস্যবৃন্দ।
এদিকে এ সীদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছে সিলেট ট্যুরিজম ক্লাব।
কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, অপরূপ রাতারগুল প্রবেশমূল্য প্রাপ্তবয়স্ক: ৫০ টাকা, ১২ বছরের নিচে: ২৫ টাকা, আইডি কার্ডধারী শিক্ষার্থী: ২৫ টাকা, বিদেশি পর্যটক: ৫০০ টাকা, মিঠাপানির বনাঞ্চল রাতারগুলে দেখা যায় অসাধারণ আলোছায়ার খেলাইঞ্জিনবিহীন নৌকা ভাড়া করার ফি, প্রতিবার: ১০০ টাকা, বিদেশিদের পর্যটক: ১০০০ টাকা, পার্কিং ফি বাস বা ট্রাক: ২০০ টাকা, পিকআপ/জিপ/কার/মাইক্রোবাস: ১০০ টাকা, মোটরসাইকেল/সিএনজি: ২৫ টাকা।
স্থানীয় ও কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আরও জানা যায়, দেশের একমাত্র স্বীকৃত সোয়াম্প ফরেষ্ট বা জলার বন রাতারগুল সিলেটের গোয়াইনঘাট এলাকায় অবস্থিত। উত্তরে গোয়াইন নদী, দক্ষিণে বিশাল হাওর। মাঝখানে ‘জলার বন’ রাতারগুল যা বাংলার অ্যামাজন নামে পরিচিত।
সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর ইউনিয়নে রাতারগুলের অবস্থান। সিলেট নগরী থেকে দেশের একমাত্র স্বীকৃত রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টের দূরত্ব প্রায় ২৬ কিলোমিটার। অনিন্দ্য সুন্দর বিশাল এ বনের গাছ-গাছালির বেশিরভাগ অংশই বছরে চার থেকে সাত মাস থাকে পানির নিচে। ওয়াচ টাওয়ার থেকে দেখা যায় পাহাড়ের সারিসবুজ জলের ওপর নীল আকাশ। চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে করচসহ জালিবেত, কদম, হিজল, মূর্তাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টে এই নয়নাভিরাম দৃশ্যের দেখা মেলে। মিঠা পানির অপরূপ জলাবনটির ওয়াচ টাওয়ারে দাঁড়িয়ে মেঘালয়ের পাহাড় চমৎকার লাগে
অপরূপ জলাবনের সৌন্দর্য দেখতে ভিড় করেন পর্যটকরা। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে রাতারগুলে দর্শনার্থীদের প্রবেশ প্রায় বন্ধই ছিল। কিছু পর্যটক কড়া শর্তসাপেক্ষে বনে প্রবেশ করতে পারতেন। ১ নভেম্বর থেকে আবারও পর্যটকদের জন্য ফের উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে এই জলাবন। এটি নিয়ন্ত্রণ করে সিলেট বন বিভাগ।
জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যটিতে বেড়াতে যাওয়া ভ্রমণপিপাসুদের জন্য নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। এখন থেকে রাতারগুলে পেশাদার ক্যামেরায় শুটিং করলে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা গুনতে হবে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এতে আরও জানানো হয়, রাতারগুলে প্রবেশের ক্ষেত্রে পর্যটকদের এখন থেকে সরকারকে ফি দিতে হবে। এছাড়া যুক্ত হয়েছে নৌকা ভ্রমণ ও পার্কিং ফি।
এ বিষয়ে সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ উদ্দিন বলেন, আমারা নোটিশবোর্ড টাঙ্গিয়ে টিকেট কাউন্টার এর শুভ উদ্বোধন করি, সকাল থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সারিবদ্ধ ভাবে পর্যটকরা টিকেট নিচ্ছেন, কোন অসুবিধা হচ্ছে না। টিকেটের মাধ্যমে প্রবেশে পর্যটকদের কোনো আপত্তি নেই বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে সিলেট ট্যুরিজম ক্লাবের সভাপতি হুমায়ুন কবির লিটন বলেন এটা সিলেটের পর্যটন শিল্প বিকাশের অন্তরায় হবে। অচিরেই এই সীদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছি। প্রবেশ ফি নেওয়া হোক আমরাও চাই কিন্তু সেটা পর্যটন বিকাশে যেন বাঁধা না হয়। সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের প্রতি আহবান ট্যুরিজম খ্যাতকে শক্তিশালী ও মজবুত কাঠামোর উপর দাঁড় করিয়ে সুখী সমৃদ্ধি বাংলাদেশ গড়তে সহযোগিতা করুন।