বিশ্ব ভালোবাসা দিবস আজ, ফুল কেনার ধুম

12

স্টাফ রিপোর্টার :
আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার ভালোবাসার দিন বা বিশ্ব ভ্যালেন্টাইনস ডে বা ভালোবাসা দিবস। ঋতুরাজ বসন্তের পহেলা ফাল্গুনে ভালোবাসা দিবসে বাঙালি মনের ভালোবাসাও হয় পবিত্র। ফুলে রাঙা আর বাসন্তী মোহে মুগ্ধ। এ উপলক্ষে প্রিয়জনকে ফুল উপহার দেয়ার জন্য সারাদেশের ন্যায় সিলেটের বিভিন্ন ফুলের দোকানগুলোতে ফুল কেনার ধূম পড়েছে।
ভালোবাসা দিবসে যুগলদের মনের এই উচ্ছ্বাসকে বাড়িয়ে দেবে কয়েকগুণ। শুধু তরুণ তরুণী নয়, নানা বয়সের মানুষই ভালোবাসার এই দিনে একসঙ্গে সময় কাটাবেন। দিনটি পশ্চিমা সংস্কৃতির অনুষঙ্গ হলেও ভ্যালেন্টাইনস ডে বা ভালোবাসা দিবসে বাঙালি মনের ভালোবাসাও যেন পায় নতুন রূপ।
এ ভালোবাসা শুধুই প্রেমিক আর প্রেমিকার জন্য নয়। মা-বাবা, স্বামী-স্ত্রী, ভাইবোন, প্রিয় সন্তান এমনকি বন্ধুর জন্যও ভালোবাসার জয়গানে আপ্লুত হতে পারে সবাই। চলবে উপহার দেয়ানেয়া।
সিলেটসহ সারাদেশে বিভিন্ন আয়োজন ও আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে সারা দিন ঘোরাঘুরি করে কাটাবে ভালোবাসার মানুষগুলো। তাদের পরনে লাল, নীল, সাদা, বেগুনি, গোলাপি বিভিন্ন রঙের পোশাক আর সাজসজ্জায় ভালোবাসার দিনটি যেন বর্ণিল রঙে রঙিন হয়ে উঠবে।
অনেকের মতে, ফেব্রুয়ারির এ সময়ে পাখিরা তাদের জুটি খুঁজে বাসা বাঁধে। নিরাভরণ বৃক্ষে কচি কিশলয় জেগে ওঠে। তীব্র সৌরভ ছড়িয়ে ফুল সৌন্দর্যবিভায়। পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হয়। এ দিনে চকোলেট, পারফিউম, গ্রিটিংস কার্ড, ইমেইল, মুঠোফোনের এসএমএসএমএমএসে প্রেমবার্তা, হীরার আংটি, প্রিয় পোশাক, জড়াজড়ি করা খেলনা মার্জার অথবা বই ইত্যাদি শৌখিন উপঢৌকন প্রিয়জনকে উপহার দেয়া হয়।
নীল খামে হালকা লিপস্টিকের দাগ, একটা গোলাপ ফুল, চকোলেট, ক্যান্ডি, ছোট্ট চিরকুট আর তাতে দুছত্র গদ্য অথবা পদ্য হয়ে উঠতে পারে উপহারের অনুষঙ্গ।
ইতিহাসবিদদের মতে, দুটি প্রাচীন রোমান প্রথা থেকে এ উৎসবের সূত্রপাত। এক খ্রিস্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ফাদার সেন্ট ভ্যালেনটাইনের নামানুসারে দিনটির নাম ‘ভ্যালেনটাইনস ডে’ করা হয়। ২৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি খ্রিস্টানবিরোধী রোমান সম্রাট গথিকাস আহত সেনাদের চিকিৎসার অপরাধে সেন্ট ভ্যালেনটাইনকে মৃদ্যুদণ্ড দেন।
মৃত্যুর আগে ফাদার ভ্যালেনটাইন তার আদরের একমাত্র মেয়েকে একটি ছোট্ট চিঠি লেখেন, যেখানে তিনি নাম সই করেছিলেন ‘ফ্রম ইওর ভ্যালেনটাইন’। সেন্ট ভ্যালেনটাইনের মেয়ে এবং তার প্রেমিক মিলে পরের বছর থেকে বাবার মৃত্যুর দিনটিকে ভ্যালেনটাইনস ডে হিসেবে পালন করা শুরু করেন। যুদ্ধে আহত মানুষকে সেবার অপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সেন্ট ভ্যালেনটাইনকে ভালোবেসে দিনটি বিশেষভাবে পালন করার রীতি ক্রমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
ভ্যালেনটাইনস ডে সার্বজনীন হয়ে ওঠে আরও পরে প্রায় ৪০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে। দিনটি বিশেষভাবে গুরুত্ব পাওয়ার পেছনে রয়েছে আরও একটি কারণ। সেন্ট ভ্যালেনটাইনের মৃত্যুর আগে প্রতি বছর রোমানরা ১৪ ফেব্রুয়ারি পালন করত ‘জুনো’ উৎসব। রোমান পুরানের বিয়ে ও সন্তানের দেবী জুনোর নামানুসারে এর নামকরণ। এ দিন অবিবাহিত তরুণরা কাগজে নাম লিখে লটারির মাধ্যমে তার নাচের সঙ্গীকে বেছে নিত।
৪০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে রোমানরা যখন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীতে পরিণত হয় তখন ‘জুনো’ উৎসব আর সেন্ট ভ্যালেনটাইনের আত্মত্যাগের দিনটিকে একই সূত্রে গেঁথে ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘ভ্যালেনটাইনস ডে’ হিসেবে উদযাপন শুরু হয়। কালক্রমে এটি সমগ্র ইউরোপ এবং ইউরোপ থেকে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।