ওসমানীনগরে শিশুর লাশ উদ্ধার, পরিবারের দাবী পরিকল্পিত হত্যা

3

ওসমানীনগর থেকে সংবাদাদাতা :
ওসমানীনগরে দশ বছরের শিশুর লাশ উদ্ধার নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। নিহত ফাইজা বেগম (১০) উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের পশ্চিম ব্রাহ্মণগ্রামের তুরণ মিয়ার মেয়ে। ফাইজার মা-বাবার দাবি পরিকল্পিত ভাবে তাদের মেয়েকে হত্যা করে লাশ ঝুঁলিয়ে রাখা হয়েছিল। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে থানা পুলিশ।
জানা যায়, সোমবার তুরণ মিয়া কাজে থাকাবস্থায় বিকেলে মা লায়লা বেগম মেয়েকে ঘরে রেখে ছোট ছেলেকে নিয়ে বাজারে যান। সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাড়িতে ফিরে বসত ঘরের বাঁশের তীরের সাথে মেয়েকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাৎক্ষণিক লায়লা বেগম চিৎকার শুরু করলে পাশর্^বর্তী কয়েকজন ছুটে এসে ঘরের লাইট নিভিয়ে ফাইজার দেহ নামিয়ে আনে। এ সময় লায়লা বেগম লাইট নিভানোর কারণ জানতে চেয়ে আরও জোরে চিৎকার শুরু করলেও তারা তাড়াতাড়ি করে ফাইজাকে নিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে নিহত শিশুর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে নারী পুরুষ কেউ নেই। উপস্থিত অনেক নারী দেখা গেলেও তারা নিজেদের মেহমান বলে পরিচয় দেন। এদিকে এ ঘটনায় শিশুর মা লায়লা বেগম মেয়েকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যার অভিযোগে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিলেও ওসমানীনগর থানা পুলিশ অপমৃত্যু মামলা দায়েরের জন্য শিশুর শোকে কাতর মাকে চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে বলে নিহতের পারিবারের লোকজন জানিয়েছেন।
কান্নাজনিত কন্ঠে শিশুর মা লায়লা বেগম বলেন, আমি বাজার থেকে ফিরতে দেখে দ্রুত বসতঘর থেকে আমার ভাসুর নুর মিয়া, তার স্ত্রী রায়না বেগম ও তার তিন ছেলে বের হয়ে যেতে দেখি। এসময় আমি ঘরে ঢুকে মেয়েকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করলে আমার ভাসুরের আরেক পুত্র উজ্জ্বল দৌড়ে এসে লাইট নিভিয়ে তড়িগড়ি করে লাশ নামিয়ে ফেলে। পরবর্তীতে অনান্য লোকজনের সহযোগিতায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। আমার মেয়ের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। থানা পুলিশ অনেকটা চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে ময়নাতদন্ত সম্পূন্ন হওয়ার পূর্বেই একটি কাগজে আমার স্বাক্ষর নিয়েছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
পিতা তুরণ মিয়া বলেন,আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমি থানায় হত্যা মামলা দায়েরের জন্য লিখিত অভিযোগ দিতে চাইলে পুলিশ বলছে অপমৃত্যুর মামলা দেয়ার জন্য।
ওসমানীনগর থানার ওসির দায়িত্বে থাকা অফিসার ইনচার্জ তদন্ত মাছুদুল আমিন বলেন, যেহেতু শিশুটিকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাই প্রাথমিক অবস্থায় অপমৃত্যুর রুজু করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।