দলীয় নেতাকর্মীদের মেজর (অব.) হাফিজ ॥ শুধু তোষামোদ করে দায়িত্ব শেষ করবেন না

9

কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিএনপি নেতা-কর্মীদের চিন্তা করতে বলি, দেশের জনপ্রিয় দল বিএনপি কেন আজকে ক্ষমতার বাইরে? কারা এর জন্য দায়ী? চিন্তা করেন, মুক ও বধির না হয়ে চিন্তা করেন। দলকে ভালোর জন্য কনট্রিবিউট করেন। দলকে সাজেশন দেন, কী করা উচিত। কেবলমাত্র তোষামোদ করে দায়িত্ব শেষ করবেন না।
শনিবার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিজের জবাব পাঠিয়ে দেওয়ার পর বনানীতে নিজের বাসায় সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
এর আগে বিএনপির পক্ষ থেকে দুই ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন ও শওকত মাহমুদকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণ দর্শাতে বলা হয়। শওকত মাহমুদ জবাব দেওয়ার দুদিন পর সংবাদ সম্মেলনে আসেন মেজর (অব) হাফিজ উদ্দিন।
তিনি বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমার নেতা জিয়াউর রহমান বলে গিয়েছেন, দলের চেয়ে দেশ বড়। আমার কাছেও আমার দেশ সবচাইতে বড়। এদেশে গণতন্ত্র আসুক আমি চাই। গণতন্ত্র ও সুশাসনের জন্য, মানবিক মর্যাদা পুনরুদ্ধারের জন্যে, জনগনের ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাবার জন্যে, বাক স্বাধীনতা ফিরে পাবার জন্যে এবং এই অবৈধ সরকারকে বিদায় করার জন্যে যে কোনো সংগ্রামে আমি সব সময় প্রস্তুত থাকব।
মেজর হাফিজ বলেন, আমি একজন ক্ষুদ্র রাজনৈতিক কর্মী। যদি বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিশেষ করে ছাত্র যুবকেরা রাজপথে নামে, কালকে এদলের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল। তারা রাজপথে নামে না কেন? অনেক চিন্তা করেছি। দলীয় নেতৃবৃন্দের উচিত এটা পর্যালোচনা করা যে, এত জনপ্রিয় দল বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শতকরা ৮০টা ভোট পায়, কিন্তু রাস্তায় কেন ১০০ লোক নামে না। এটা চিন্তা করা উচিৎ। অনেক কর্মীকে আমিও জিজ্ঞাসা করেছি। তারা বলে যে, আমি যদি নামি, গুলিটা খাই আমার পরিবারকে কে দেখবে? আমরা লাভটা কী? আমি জীবন দেব, অন্যরা সুবিধা হবে- এসব কারণে হয়ত নামে না। তবুও আমি বিএনপির সকল নেতা-কর্মীকে আহ্বান জানাব, আগামী দিনে সরকারবিরোধী আন্দোলনে ডাক দিলে, যেই ডাক দেয়, আপনারা এসে এই সরকারকে উৎখাত করবেন।
৫ পৃষ্ঠার জবাবে হাফিজ লিখেছেন, বিএনপির সর্বোচ্চ নেতৃবৃন্দকে উদ্দেশ্য করে কোনো অসম্মানজনক, অসৌজন্যমূলক বক্তব্য রাখিনি। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সততা ও দেশপ্রেমের মূর্ত প্রতীক। আমি মুক্তিযুদ্ধে তার অধীনস্থ সেনা কর্মকর্তারূপে জীবনবাজী রেখে যুদ্ধ করেছি, সম্মুখ সমরে আহত হয়েছি। ১৪ ডিসেম্বর তারিখে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে দিনব্যাপী মরণপণ যুদ্ধের পর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে সিলেট শহর দখল করেছিলাম। ২০২০ সালের এদিনেই আমার দল আমাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। আমাকে নোটিস পাঠানোর আগে চিঠির বিষয়বস্তু ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে আমার কর্মীরা মর্মাহত হয়েছে।
অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন দাবি করে হাফিজ লিখেছেন, দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অসম্মান করার কোনো প্রশ্নই উঠে না। জিয়া পরিবারের কোনো সদস্যের প্রতি কখনোই কটুক্তি করিনি, ভবিষ্যতেও করব না। রাজনীতি ছেড়ে দিলেও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের আদর্শ হৃদয়ে লালন করব।