বিজয়ের মাস ডিসেম্বর

28

জেড এম শামসুল :
বিজয়ের মাসের প্রথম দিন আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধা গেরিলা বাহিনী ও ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সহযোগিতায় বীর বিক্রমে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র অবস্থায় যুদ্ধ করছে। ২১ নভেম্বর থেকে মুক্তিযোদ্ধারা একের পর এক এলাকা শত্র“মুক্ত করে চলেছে। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী সীমান্ত এলাকা ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্যে শহরমুখী হয়ে পালাচ্ছে। ফলে মুক্তিবাহিনীর সাহস বাড়তে থাকে। এদিন সিলেটের শমসেরনগর, রংপুরের নামেশ্বরী থানা, দিনাজপুরের পঞ্চাগড় মহকুমা, টাঙ্গাইলের কয়েকটি থানায় নোয়াখালীর বরজরায় ছাগল নাইয়া থেকে হানাদার বাহিনীকে হটিয়ে দেয়। এদিন সিলেটের শমসেরনগরে হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচন্ড যুদ্ধ হয়। ছাতকে মরণপণ যুদ্ধে প্রায় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা হতাহত হন। কানাইঘাটে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে এ যুদ্ধেও শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা হতাহত হয়। এই যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন গঠিত জেড ফোর্স। জেড ফোর্স অক্টোবর মাস থেকে এক নাগারে হানাদার বাহিনীর উপর হামলা চালিয়ে যায়। এ সময় প্রথম ব্যাটালিয়ন শ্রীমঙ্গল, তৃতীয় ব্যাটালিয়ন কুলাউড়ায় যুদ্ধ করে। চারদিক থেকে অব্যাহত হামলায় হানাদার বাহিনী ছাতক ও গোয়াইনঘাট অঞ্চল ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। চারমুখী হামলায় ঘাতক হানাদার বাহিনী প্রাণভয়ে সিলেট শহরের দিকে পলায়ন করতে থাকে।
১লা ডিসেম্বর ১৬ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল জাতিসংঘের ১৩১টি সদস্য দেশের প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাৎ করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এদিন প্রতিনিধি দলের নেতা বিচারপতি আবু সাইদ একটি বিবৃতির মাধ্যমে জাতিসংঘে উত্তোলন করেন যে ইয়াহিয়া সরকার বাংলার নিরস্ত্র মানুষের উপর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া উচিত। প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ভারতীয় পালার্মেন্টে বক্তৃতাকালে ইয়াহিয়া খানের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানী সেনা অপসারণই সমস্যার শ্রেষ্ঠ সমাধান। আগামী যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।