৩৮তম স্প্যানে পদ্মা সেতুর ৫৭০০ মিটার দৃশ্যমান

45
মাওয়াপারের সঙ্গে যুক্ত হতে যাচ্ছে পদ্মা সেতু। ১ ও ২ নম্বর পিলারে বসানো শুরু হবে সেতুর ৩৮ নম্বর স্প্যান। এক সপ্তাহের ব্যবধানে যাওয়া এ স্প্যানের মাধ্যমে দৃশ্যমান হবে প্রায় পৌনে ৬ কিলোমিটার সেতু।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর ১ ও ২ নং পিলারে বসানো হয়েছে ৩৮তম স্প্যান ‘ওয়ান-এ’। এতে দৃশ্যমান হলো সেতুর পাঁচ হাজার ৭০০ মিটার অংশ।
শনিবার দুপুর আড়াইটায় স্প্যানটি বসানো হয়। ৩৭তম স্প্যান বসানোর নয়দিনের মাথায় ৩৮তম স্প্যানটি বসানো হলো।
সেতুর মোট ৪১টি স্প্যানের মধ্যে আর বাকি রইলো মাত্র তিনটি স্প্যান। এর মধ্যে একটি চলতি মাসে ও অপর দুটি ডিসেম্বরে বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, স্প্যানটি ১৬ নভেম্বর বসানোর পূর্ব সিডিউল থাকলেও নির্ধারিত পিলার দুটির এলাকায় ড্রেজিং ও কারিগরি অন্যান্য বিষয় প্রস্তুত করতে আরও কয়েকদিন সময় লেগে যায়। শনিবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ভাসমান ক্রেন তিয়াইন-ই ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে ৩৮তম স্প্যানটি নিয়ে রওনা করে ৯টা ৫০ মিনিটে নির্ধারিত পিলারে কাছে পৌঁছে। এরপর ক্রেনটি নোঙর ও অন্যান্য কারিগরি কাজ শেষ করতে আরও সময় লাগে কয়েক ঘণ্টা। পরে দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে স্প্যানটি নির্ধারিত পিলারের ওপর ভূমিকম্প সহনশীল বিয়ারিংয়ে বসানো সম্ভব হয়। চলতি নভেম্বর মাসে এনিয়ে সেতুতে মোট তিনটি স্প্যান বসানো সম্ভব হলো। আর এ মাসের মধ্যেই ১০ ও ১১নং পিলারে ৩৯তম স্প্যান ‘২-ডি’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
ডিসেম্বর মাসে ১১ ও ১২ নং পিলারে ৪০তম স্প্যান ‘২-ই’ ও ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারে ৪১তম স্প্যান স্প্যান ‘২-এফ’ বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সেতু মন্ত্রণালয়।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হলো ৩৮টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর পাঁচ হাজার ৭০০ মিটার অংশ। ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে সবকটি পিলার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।