গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট, চিকিৎসা সেবা ব্যাহত

5

চোখের সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা নিতে গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি আনোয়ার মিয়া। চোখের ডাক্তার না পেয়ে নিরাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। প্রতিবেদকের সাথে কথা হলে এমনটাই জানালেন তিনি। কথা হয় হাতে আঘাত পেয়ে চিকিৎসা নিতে আসা গৃহবধূ আমেনা বেগমের সাথে। তিনি বলেন, এক্স-রে করাতে এসে জানলাম হাসপাতালে মেশিন আছে কিন্তু অপারেটর নেই। কথা গুলো শুধু আনোয়ার মিয়া ও আমেনা বেগমের নয়! এভাবেই প্রতিদিন চিকিৎসক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা।
এতে ভোগান্তিতে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার প্রায় ৪লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবার একমাত্র মাধ্যম এ হাসপাতাল। প্রতিদিন সাড়ে ৪শ থেকে ৫শ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন এখানে।
৫০ শয্যার এ হাসপাতালে চিকিৎসক ও জনবল সংকট থাকায় অতিরিক্ত চাপ নিয়ে সেবা দিচ্ছেন কর্মরত চিকিৎসকরা। এছাড়াও ল্যাব টেকনোলজিষ্ট, মেশিন অপারেটরসহ বিভিন্ন পদে জনবল না থাকায় ভোগান্তিতে রয়েছেন এ উপজেলার সাধারণ মানুষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন পদে ২১জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ১২জন চিকিৎসক। শুধু গাইনী বিভাগ ছাড়া শূন্য রয়েছে শিশু ও মেডিসিন, ডেন্টাল সার্জন, চর্ম ও যৌন, চক্ষু, কার্ডিওলজি, সার্জারি, এ্যানেস্থেসিয়া, অর্থপেডিক্স, নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ৯টি পদ।
জানা যায়, সম্প্রতি করোনাকালীন সময় হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের টেকনোলজিষ্টকে জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে বদলি করায় শূন্য রয়েছে এ পদটি। এতে হাসপাতালের অভ্যন্তরে পরীক্ষা করতে পারছেন না রোগীরা। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার ব্যয়ভার তুলনামূলক বেশি হওয়ায় দুর্ভোগে রয়েছেন মধ্যবিত্তসহ নিম্নবিত্তরা।
এছাড়াও পদশূন্য রয়েছে ডেন্টাল টেকনোলজিস্ট, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্যাথলজী, এক্স-রে, ফার্মাসিষ্টের পদও। হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাফি, ই.সি.জি ও চক্ষু পরীক্ষার মেশিন থাকলেও অপারেটর না থাকায় ভোগান্তিতে রয়েছেন সেবাগ্রহীতারা।
এদিকে হাসপাতালে গাইনী ডাক্তার থাকলেও এ্যানেস্থেসিয়া পদায়ন না হওয়ায় প্রসূতি মায়েদের অপরেশন করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানা যায়।
এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন, আমরা যারা কর্মরত আছি যথাসম্ভব রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। তবে শূন্য পদগুলোতে চিকিৎসক পদায়ন হলে শতভাগ চিকিৎসা সেবা প্রদান সম্ভব। তিনি বলেন, সরকার এ বিষয়ে যথেষ্ট আন্তরিক। আশা করছি এ বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের শুরুর দিকে শূন্য পদ পূরণ হবে। (খবর সংবাদদাতার)