১২০ টাকার নতুন মজুরি চুক্তি চা-শ্রমিক সংঘের প্রত্যাখ্যান

8

১৫ অক্টোবর বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশীয় চা-সংসদের মধ্যে স্বাক্ষরিত এক সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী চা-শ্রমিকদের মজুরি এ ক্লাস বাগানে দৈনিক ১২০ টাকা, বি ও সি ক্লাস বাগানে যথাক্রমে ১১৮ টাকা ও ১১৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে দৈনিক ১২০ টাকা মজুরির নতুন চুক্তিকে চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির আহবায়ক রাজদেও কৈরী ও যুগ্ম-আহবায়ক হরিনারায়ন হাজরা প্রত্যাখ্যান করেন। নেতৃবৃন্দ বলেন যখন মোটা চালের কেজি ৪০/৪৫ টাকা, আলু ৫০/৫৫ টাকা, পিঁয়াজ ১০০ টাকা, ডাল ১০০/১১০ টাকা, বাজারে ৬০/৭০ টাকার নিচে কোন সবজি মিলছে না সেই সময়ে দৈনিক মাত্র ১২০ টাকা মজুরিতে কি করে একজন চা-শ্রমিক ৬/৭ জনের পরিবার চালাবে? নির্ধারিত সময়ে ২২ মাস পর যে চুক্তি করা হলো তার মেয়াদ ২০১৯ সালের ১ জানুযারি থেকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন যখন চা-সেক্টরে সরকার গঠিত নিম্নতম মজুরি বোর্ড মজুরি নির্ধারণের কাজ অগ্রসর করে চলেছেন, ইতোমধ্যে মজুরি বোর্ড ৫টি সভা করেছে এবং আগামী ২২ অক্টোবর মজুরি বোর্ডের ৬ষ্ঠ সভা আহবান করা হয়েছে। সে রকম সময়ে কোন স্বার্থে মজুরি বোর্ডের কার্যক্রমকে কার্যত নিষ্ক্রিয় করে অতীতের ধারায় দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি করা হলো? চা-শ্রমিক সংঘের পক্ষ থেকে মজুরি বোর্ডের নিকট দৈনিক ৬৭০ টাকা মজুরির দাবিতে গণস্বাক্ষরে আবেদন করা হয়েছে, এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ৪০০ টাকা, ৫০০ টাকা, ৫৫০ টাকার আবেদন করা হয়েছে। এমন কি চা-শ্রমিক ইউনিয়নও দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে চা-শ্রমিকদের আন্দোলনে নামিয়ে ছিল। গত ৮ দিন চা-শ্রমিকরা সেই আন্দোলন চালিয়েছেন, অথচ চা-শ্রমিকদের অবগত না করেই দালাল নেতারা তলে তলে দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি করে মালিকদের স্বার্থ রক্ষা করলেন। ক্ষুব্ধ চা-শ্রমিকরা জানান তারা প্রয়োজনে আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে রাজি ছিলেন, কিন্তু কেন নেতারা আপোস করলেন? উল্লেখ্য বাংলাদেশে সবচেয়ে কম মজুরি পান চা-শ্রমিকরা। এমন কি প্রতিবেশি দেশের চা-শ্রমিকদের তুলনায়ও বাংলাদেশের চা-শ্রমিকদের মজুরি অনেক কম? ১৫ অক্টোবর স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকে মজুরি ১০২ টাকা থেকে মাত্র ১৮ টাকা বৃদ্ধি করে ১২০ টাকা নির্ধারণ করার পাশাপাশি চা-শ্রমিকদের পরিমান বাড়ানোর জন্য প্রত্যেকটি বাগানে উৎপাদনশীলতা কমিটি গঠন করার বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নেতৃবৃন্দ এই মজুরি চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে সরকার গঠিত নিম্নতম মজুরি বোর্ডের মাধ্যমে বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণভাবে ৬/৭ জনের পরিবারের ভরণপোষণের জন্য দৈনিক ৬৭০ টাকাসহ ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান। বিজ্ঞপ্তি