সুনামগঞ্জের আদালতের ব্যতিক্রমী রায় ॥ অভিযুক্ত ১৪ শিশুকে পারিবারিক বন্ধনে রাখার আদেশ

53

একে কুদরত পাশা সুনামগঞ্জ থেকে :
সুনামগঞ্জে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত একযোগে পৃথক ১০ মামলায় অভিযুক্ত ১৪ শিশুকে ব্যতিক্রমী রায় দিয়েছেন সুনামগঞ্জ শিশু আদালত। শিশুদের সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সংশোধনাগারে অন্যান্য অপরাধীদের সংস্পর্শে না রেখে এই সময়ে শিশুরা মা-বাবার সেবা করা ও নির্দেশ মেনে চলা, নিয়মিত ধর্মীয় অনুশাসন, নিয়মিত ধর্মগ্রন্থ পাঠ, ২০টি গাছ লাগানো ও পরিচর্যা, অসৎ সঙ্গ ত্যাগ এবং মাদক সেবন না করাসহ ৭ প্রবেশন শর্ত মেনে পারিবারিক বন্ধনে রাখার আদেশ দেয়া হয়।
বুধবার সকালে সুনামগঞ্জ শিশু আদালতের বিচারক জাকির হোসেন প্রবেশন অপেন্ডারস অরডিন্যান্স ১৯৬০ এর ৫ ধারা ও শিশু আইন ২০১৩এর ৩৪(৬) ধারায় ১৪ শিশুর প্রত্যেককে এক বছর করে প্রবেশন কর্মকর্তা ও পরিবারের অধীনে রাখার নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, এসব শিশুরা মাদক, জুয়া, মারপিট, দলবদ্ধ সংঘর্ষ, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, ধর্ষণের চেষ্টাসহ নানা অপরাধে অভিযুক্ত। দীর্ঘদিন বিচারকার্য শেষে এ দশটি মামলায় রায়ের জন্য তারিখ ধার্য ছিল এদিন।
আদালত রায়ে শিশুদের প্রবেশন দেওয়ার উদ্দেশ্য হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘পারিবারিক বন্ধনে রেখে শিশুদের সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা এবং প্রবেশন কর্মকর্তা ও অভিভাবকদের তত্ত্বাবধানে রেখে শিশুদের তাদের ভবিষ্যৎ অপরাধে না জড়ায় এবং জীবনের শুরুতেই যাতে তাদের অপরাধের কালিমা স্পর্শ না করে সে জন্য শাস্তি না দেয়া। এবং সংশোধনাগারে অন্যান্য অপরাধীদের সংস্পর্শ থেকে দূরে রেখে পরিবারের তত্ত্বাবধানে তাদের যাতে মানসিক বিকাশ ঘটে এবং শিশুদের সার্বিক কল্যাণ সাধন হয়’।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এর পিপি নান্টু রায় জানান, দশটি পৃথক মামলায় ১৪ জনকে এ প্রবেশন শর্তে একজন প্রবেশন কর্মকর্তা ও পরিবারের তত্ত্বাবধানে দেয়া হয়েছে।
প্রতি ৩ মাস পর পর আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার শর্তে এ রায় দেয়া হয়েছে। শিশুদের সুস্থ স্বাভাবিক জীবনের ফেরানোর নজির হয়ে থাকবে এ রায়। এ রায়ের মাধ্যমে শিশুরা তাদের সংশোধনেরও সুযোগ পাবে।