সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ॥ টাকার বিনিময়ে কমিটি অনুমোদন দেওয়ার অভিযোগ গোলাপগঞ্জ ছাত্রদলের

8
গোলাপগঞ্জ উপজেলা, পৌর ও ঢাকা দক্ষিণ সরকারি কলেজের তৃণমূল ছাত্রদলের উদ্যোগে সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন জাহেদ আহমদ মান্না।

স্টাফ রিপোর্টার :
বড় অংকের টাকার বিনিময়ে গোলাপগঞ্জ ছাত্রদলের তিন ইউনিটের কমিটি দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গোলাপগঞ্জ ছাত্র দলের নেতৃবৃন্দ। সোমবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা ছাত্রদলের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে গোলাপগঞ্জ ছাত্রদলের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্রদল নেতা জাহেদ আহমদ মান্না।
তিনি বলেন, ‘সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলা, পৌর ও ঢাকা দক্ষিণ সরকারি কলেজ ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটিতে অছাত্র, অযোগ্য, বহিরাগত, বিবাহিতদের দিয়ে বাণিজ্যের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এত ত্যাগী, শিক্ষিত ও মামলা-হামলার শিকার নির্যাতিতদের বঞ্চিত করা হয়েছে। সিলেট জেলা ছাত্রদলের ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ব্যক্তি গ্রুপ বড় করতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন। যা সম্পূর্ণ গঠনতন্ত্র বিরোধী।’
এসব বিষয় উলে¬খ করে গত ১৭ সেপ্টেম্বর তারিখে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবরে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অভিযোগের অনুলিপি ছাত্রদলের সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের প্রধান ওমর ফারুক কাওসার এর হাতেও দেওয়া হয়েছে কিন্তু এতোদিনেও এসব কমিটির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলকে এ বিষয়ে অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহনেরও আহ্বান জানান তিনি।
এসএসসি’র সার্টিফিকেট জাল করে পদ ভাাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করে তিনি বলেন, উপজেলা কমিটির আহবায়ক তানজিম আহাদ এসএসসি পাস করলেও বর্তমানে তিনি অছাত্র। সদস্য সচিব ফাহিম চৌধুরী ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। এসএসসি’র সার্টিফিকেট জাল করে নিজেকে ছাত্র হিসেবে প্রমাণ করেছেন। যা সম্পূর্ণ ভুয়া। কমিটির ৩ নম্বর যুগ্ম আহবায়ক আব্দুর রহমানও একজন অছাত্র, ৭ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। তার সার্টিফিকেটটিও ভুয়া। ৫ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক জাকারিয়া শাহজাহান তিনি এসএসসি’র জাল সার্টিফিকেট জমা দিয়ে পদবী পেয়েছেন। অথচ উপজেলা ছাত্রদলের কমিটিতে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত, পরীক্ষিত, ত্যাগী, নির্যাতিত, শিক্ষিত ছাত্রনেতারা রয়েছেন।
ঢাকা দক্ষিণ সরকারী কলেজ ছাত্রদলের কমিটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ কমিটির সদস্য সচিব মতিউর রহমান মুমিন কলেজের ছাত্র নয়। তিনি কলেজের ভুয়া প্রত্যয়নপত্র দিয়ে নিজেকে কলেজের ছাত্র প্রমাণ করে ছাত্রদলের পদবী লাভ করেছেন। ১৮ নম্বর সদস্য আব্দুল মুহাইমিন ইসলাম রাহিও কলেজের ছাত্র নয়। দীর্ঘদিন থেকে কলেজের ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িতদেরকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এছাড়াও গোলাপগঞ্জ পৌর ছাত্রদলের ৫নং যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান একজন বিবাহিত, তার একটি সন্তান রয়েছে। ৪নং যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়েজ আহমদ পৌর জাসাসের সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি বলেন, জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক টিম গোলাপগঞ্জ উপজেলা, পৌর ও কলেজ ছাত্রদলে ত্যাগী, পরীক্ষিত, শিক্ষিত ও নির্যাতিত দেখে প্রস্তাবিত কমিটি গঠন করেন। কিন্তু সাংগঠনিক টিমের কমিটির সাথে অনুমোদনকৃত কমিটির কোন মিল নেই। গোলাপগঞ্জ ছাত্রদলের তৃণমূলের কর্মীরা তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে এবং অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, আমরা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের প্রতি জোর আহ্বান জানাচ্ছি, সিলেট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দিলোয়ার হোসেন নাদিম ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র বিরোধী কাজ করে সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে নিজস্ব ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে ও নিজেদের বলয় বড় করতে কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন। তাই তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি। তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানের নির্দেশনা অমান্য করায় তাদের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হলে ভবিষ্যতে সিলেট জেলার সকল ইউনিটের ছাত্রদল ভেঙ্গে পড়বে। এ সময় তিনি অবিলম্বে এসব ‘অনৈতিক’ কমিটি বাতিল করে যোগ্যদের দিয়ে কমিটি গঠন করার জোর দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কামিল তালুকদার, এমরান হোসেন, সুবেদ আহমদ, তোফায়েল আহমদ সুমেল, জাকির হোসেন জুনেদ, সুনু মিয়া, রাজু আহমদ, বক্কর আহমদ, নাদির আহমদ, রাসেল আহমদ, জাকির হোসেন, জয়হরুল ইসলাম, সাব্বির আহমদ, তানহার আহমদ পলাশ, নিশাত মোস্তফা ইনান, রুহেল আহমদ, জাহিদুল ইসলাম রিপন, ছায়েম আহমদ, ডিএক্স ইমরান প্রমুখ।