সংবাদ সম্মেলনে আহবান ॥ করোনা পরিস্থিতিতে হোটেল- রেস্টুরেন্টে ভ্যাট বৃদ্ধিতে চাপ প্রয়োগ না করার আহবান

7
সিলেট জেলা রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি, ক্যাটারার্স গ্র“প অব সিলেট এবং সিলেট হোটেল এন্ড গেস্ট হাউজ ওনার্স গ্র“প এর যৌথ উদ্যোগে সিলেট চেম্বার ভবনের হল রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করছেন রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি খালেদ আহমদ।

স্টাফ রিপোর্টার :
চলমান করোনা পরিস্থিতিতে সিলেটের হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোতে ভ্যাট বৃদ্ধিতে চাপ প্রয়োগ না করার আহবান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
রবিবার বিকালে সিলেট চেম্বার অব কমার্স মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহবান জানান সিলেট জেলা রেস্তোরা মালিক সমিতি, ক্যাটারার্স গ্রুপ অব সিলেট এবং সিলেট হোটেল এন্ড গেস্ট হাউজ ওনার্স গ্রুপের নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে পৃথিবীর সকল কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশও। ধ্বস নেমেছে সব রকম ব্যবসা-বাণিজ্যে। এর মধ্যে পর্যটন খাত সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত। আর এই পর্যটন খাতের অন্যতম অংশ হল হোটেল-রেস্টুরেন্ট। দেশে করোনার প্রকোপ বাড়লে এবং সরকার লকডাউন ঘোষণা করলে মার্চ মাসের শেষ দিকে সিলেট তথা দেশের সকল হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যায়। ফলে হোটেল ও রেস্টুরেন্টের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বাড়িতে চলে যান। আমরা তাদের সকল বেতন/ভাতা বন্ধকালীন সময়েও সাধ্যমত পরিশোধ করেছি। পাশাপাশি আমাদের পক্ষ থেকে এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মানবিক সহযোগিতাও করেছি।
প্রায় ৫ মাসের বেশী সময় বন্ধ থাকার পর আমরা কিছু হোটেল-রেস্টুরেন্ট সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও স্বল্প আসন নিয়ে চালু করি। কিন্তু চালু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত ব্যবসা করোনা পরিস্থিতির আগের অবস্থায় ফিরে আসেনি। যার অন্যতম কারণ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকা, প্রবাসীদের আসা বন্ধ থাকা, পর্যটক কমে যাওয়া এবং পরিবার নিয়ে মানুষের বাইরে বের না হওয়া। এ অবস্থায় হোটেল-রেস্টুরেন্ট চালু করে লাভ করাতো দূরের কথা প্রতিষ্ঠানের খরচ বহন করাই সম্ভব হচ্ছেনা। বাকি জমে আছে বন্ধ থাকা ৫ মাসের হোটেল-রেস্টুরেন্টের ভবন ভাড়া, কর্মীদের বেতনসহ বিভিন্ন বিল। এগুলোও এখন আমাদের পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। পাশাপাশি যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এখনও নিয়োগ দিতে পারিনি,তাদের নিয়োগ দেয়ার জন্যও তারা চাপ দিচ্ছে। এই সকল চাপ নিতে না পেরে একের পর এক হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমরা এখন টিকে থাকার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি।
তারা বলেন, হোটেল-রেস্টুরেন্ট নিয়ে আমরা যখন টিকে থাকার সংগ্রাম করছি, এই পরিস্থিতিতে সিলেট কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট থেকে আমাদের বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্টসমূহে বাড়তি ভ্যাট প্রদানের জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন। আমাদের অন্তভুক্ত অনেক হোটেল-রেস্টুরেন্ট মালিককে এককভাবে ডেকে নিয়ে বর্তমানের চেয়ে তিন-চারগুন ভ্যাট বাড়ানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন। কোনো কোনো হোটেল-রেস্টুরেন্টে ভ্যাট কর্মকর্তারা অভিযানও পরিচালনা করছেন। যা এই সময়ে আমাদের টিকে থাকার সংগ্রামকে বাধাগ্রস্ত করছে। যা কোনো ভাবেই কাম্য নয়। আমরা সরকারের আইন কানুন মেনে ব্যবসা পরিচালনা করছি এবং যথাযথ ভ্যাট, ট্যাক্স প্রদান করে সরকারের রাজস্ব আহরনে সহযোগিতা করছি। এ ব্যপারে আমরা সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সকে লিখিতভাবে অবগত করি। কিছুদিন পূর্বে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাননীয় চেয়ারম্যান মহোদয় সিলেট সফরে এলে আমরা তাকেও এ বিষয়ে অবহিত করি। তারপরও ভ্যাট বিভাগ চাপ দিয়ে যাচ্ছেন।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য সরকার বিভিন্ন প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। যদিও সিলেটের পর্যটন খাতের কোন ব্যবসায়ী জানা মতে এখনও কোন প্রণোদনা সুবিধা পান নাই। এমতাবস্থায় ভ্যাট কর্তৃপক্ষের এমন আচরণে আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। যেহেতু প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে ভ্যাটে রিটার্ন দাখিল করতে হয়। সুতরাং ভ্যাটে রিটার্ন দাখিলে কাস্টমস্, এক্সাইজ ও ভ্যাট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোন হয়রানীর সম্মুখীন হলে আমরা বৃহৎ আকারে কর্মসূচী দিতে বাধ্য হব।