এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনা ॥ ৪ দিনের মধ্যে সকল আসামী গ্রেফতার, ধর্ষক তারেক ও মাহফুজুর ৫ দিনের রিমান্ডে

19

স্টাফ রিপোর্টার :
ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠ সিলেটের এমসি কলেজের মূল গেইটের সামন থেকে গৃহবধূ তরুণীকে (১৯) তুলে নিয়ে গিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গণধর্ষণের ঘটনার দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতারকৃত আরো এজাহারনামীয় ২ ধর্ষককে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করছে পুলিশ।
গতকাল বুধবার দুপুরে ও বিকেলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরান থানার ওসি (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য্য রাজন কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে ২ আসামীকে নির্যাতিত স্বামীর দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সিলেট চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ঘটনার মুল রহস্য উদঘাটনের জন্য তাদের বিরুদ্ধে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানান। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে পৃথকভাবে তাদের রিমান্ড শুনানী শেষে আদালতের বিচারক আবুল কাশেম তাদের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) অমূল্য কুমার চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রিমান্ডকৃতরা হচ্ছে, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার উমেদনগরের নিসর্গ ৫৭ নং বাসার মৃত রফিকুল ইসলামের পুত্র বর্তমানে মেজরটিলা দিপিকা আবাসিক এলাকার ৫নং বাসার ৩য় তলার বাসিন্দা তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক (২৮) ও কানাইঘাট থানার গাছবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা মাহফুজুর রহমান মাসুম (২৫)। ধৃত তারেক এই মামলার এজাহারনামীয় ২ নং আসামী ও মাহফুজুর একই মামলার এজাহারনামীয় ৬ নং আসামী। এ নিয়ে এ মামলার এজাহারনামীয় ৬ আসামী ও সন্ধিগ্ধ ২ আসামীসহ মোট ৮ আসামী বর্তমানে পুলিশ রিমান্ডে রয়েছে।
এর আগে গত সোমবার র‌্যাব-৯ সুনামগঞ্জের দিরাই এলাকা থেকে তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেককে ও একইদিন রাতে কানাইঘাট থানা পুলিশ মাহফুজুর রহমান মাসুমকে জৈন্তাপুরের হরিপুর থেকে গ্রেফতার করে। এদিকে এ ঘটনার ৪ দিনের মাথায় মামলার এজাহারভূক্ত ৬ আসামী ও সন্ধিগ্ধ আরো ২ আসামীসহ মোট ৮ আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে আইন শৃংঙ্খলা বাহিনী।
রিমান্ড শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষের সহায়তাকারি আইনজীবী দেবব্রত চৌধুরী লিটন জানান, নিজেকে নির্দোষ দাবি করে মাহফুজুর রহমান মাসুম আদালতকে বলেছেন- ফোনে খবর পেয়ে মোটর সাইকেল নিয়ে আমি ছাত্রাবাসে গিয়েছিলাম। তবে ধর্ষণের ঘটনার সাথে আমি জড়িত নই।
রিমান্ড শুনানিকালে আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেননি জানিয়ে আদালতের সরকারি কৌঁসুলি মাহফুজুর রহমান বলেন, বাদীপক্ষে স্বপ্রণোদিত হয়ে শতাধিক আইনজীবী অংশ নিলেও আসমিপক্ষে কোনো আইনজীবী অংশ নেননি। আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন মাহফুজুর রহমান মাসুম। তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও এ ঘটনায় জড়িত নন বলে আদালতে দাবি করেন।
উল্লেখ্য, বেড়ানো শেষে বাড়ি ফেরার পথে গত শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে এমসি কলেজের গেইট থেকে ৫-৬ জন যুবক জোরপূর্বক কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়ে যায় দক্ষিণ সুরমার জৈনপুর গ্রামের বর্তমানে চকেরবাজার এলাকার এক দম্পতিকে। সেখানে একটি কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে ১৯ বছরের গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণ করে আসামীরা। এ ঘটনায় ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২/৩ জনকে আসামি করে গত শনিবার সকালে শাহপরান থানায় মামলা (নং-২১) দায়ের করেন ভুক্তভোগীর স্বামী মাইদুল ইসলাম। এ জঘন্যতম ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় উঠে।