এমসি কলেজে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় হবিগঞ্জ ও ছাতক থেকে ৪ ধর্ষক গ্রেফতার

48
এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের ঘটনায় আটক চার জন।

স্টাফ রিপোর্টার :
ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিট সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাস এলাকায় ক্যাম্পাস থেকে গৃহবধূ তরুণীকে (১৯) তুলে নিয়ে গিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গণধর্ষণের ঘটনার দায়েরকৃত মামলায় ৪ ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-পুলিশ। গতকাল রবিবার ভোরে ও রাতে হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্নস্থানে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব ও পুলিশের পৃথক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণকারী এবং তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়দাতাদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ, যুবলীগের মানববন্ধন ও কালো পতাকা প্রদর্শন।

গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার চান্দাইপাড়া গ্রামের তাহিদ মিয়ার পুত্র এম সাইফুর রহমান (২৮), জকিগঞ্জ উপজেলার আটগ্রামের কানু লস্করের পুত্র অর্জুন লস্কর (৩০), হবিগঞ্জ সদরের বাগুনীপাড়ার মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার পুত্র শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫) ও সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুর (জগদল) গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম (২৫)। গ্রেফতারকৃতরা সবাই রাজনীতির সাথে জড়িত। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ধর্ষক এম সাইফুর রহমান ও অর্জুন লস্করকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা পুলিশের কাছে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়। এর পর পুলিশ গতকাল রবিবার দুপুরে তাদেরকে সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির করলে আদালত তাদেরকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
সূত্র জানায়, গতকাল রবিবার রাতে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থেকে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনিকে র‌্যাবের একটি দল গ্রেফতার করে। অন্যদিকে নবীগঞ্জ উপজেলা থেকে রবিউল ইসলামকে (২৫) গ্রেফতার করে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ। এর আগে গতকাল রবিবার ভোরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা সীমান্তবর্তী খেয়াঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে নারী নির্যাতন ও অস্ত্রসহ দু’টি মামলার প্রধান আসামী এম সাইফুর রহমানকে গ্রেফতার করে ছাতক থানা পুলিশ। অপরদিকে একই দিন সিলেট জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি টিম হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার মনতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে নারী নির্যাতন মামলার অপর আসামী অর্জুন লস্করকে (৩০) গ্রেফতার করে। এর মধ্যে সাইফুর রহমান চুল ও দাঁড়ি কেটে চেহারা পরিবর্তন করেও রক্ষা পায়নি সে। এ ঘটনায় জড়িত তারেক আহমদ ও মাহফুজুর রহমান বর্তমানে পলাতক রয়েছে। তাদেরকে হণ্য হয়ে খোঁজছে আইন শৃংঙ্খলাবাহিনী।
পুলিশ সূত্র জানায়, ধর্ষনের ঘটনার পর পরই জড়িত আসামীরা বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে চলে যায়। সাইফুর রহমান পালিয়ে যায় সুনামগঞ্জের ছাতক ও অর্জুন লস্কর পালিয়ে যায় হবিগঞ্জের মাধবপুরে আর রবিউল ও রনি পলিয়ে যায় হবিগঞ্জ সদর ও নবীগঞ্জে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের অবস্থান শনাক্ত করে তাদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। এর মধ্যে গ্রেফতারকৃত সাইফুর রহমান ও অর্জুন লস্করকে শাহপরান থানায় হস্তান্তর করা হয়।
এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া কর্মকর্তা এডিসি জ্যোতির্ময় সরকার বলেন, গণধর্ষণের ঘটনার পর আসামীরা গা ঢাকা দেয়। তবে শেষ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে তারা রক্ষা পায়নি। ধর্ষণ মামলার অপর আসামীদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে এডিসি মিডিয়া আরো বলেন, প্রধান আসামী সাইফুর গ্রেফতার এড়াতে মুখের দাঁড়ি কেটে ফেলে। সে সীমান্ত পথ ব্যবহার করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ছিলো।
এদিকে, গতকাল শিক্ষার্থী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায় :
সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম ও ছাত্র ফ্রন্ট : এমসি কলেজ হোস্টেলে গণধর্ষণকারী ছাত্রলীগ নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট মহানগর শাখার উদ্যোগে রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টা সিলেট কেন্দ্রিয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে প্রতিবাদী মানববন্ধন-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সংগঠক রত্না বসাকের সভাপতিত্বে ও ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক সনজয় শর্মার সঞ্চলনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাসদ সমন্বয়ক আবু জাফর, জেলা সদস্য প্রণব জ্যোতি পাল, মহিলা ফোরামের মনি দাশ প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, একের পর এক নারী নির্যাতনের গঠনা গঠে চলছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি, বিচারের দীর্ঘসূত্রতা, ভোগবাদী রাজনীতি নারী-শিশু নির্যাতনের জন্য দায়ী।
বক্তারা, এমসি কলেজে গণধর্ষণের দায় সরকার কোনভাবে এড়াতে পারেনা।বক্তারা অবিলম্বে এমসি কলেজে গণধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
বাম জোট : বাম গণতান্ত্রিক জোট সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রবিবার বিকাল ৫টায় সিটি পয়েন্টে সিলেট জেলা বাম গণতান্ত্রিক জোট ও বাসদ সমন্বয়ক আবু জাফর এর সভাপতিত্বে ও সিপিবি নেতা নিরঞ্জন দাশ খোকনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) আহ্বায়ক উজ্জল রায়, সিপিবি সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমন, বাসদ সদস্য প্রণব জ্যোতি পাল প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদিক্ষণ করে শহিদ মিনার গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ছাত্রলীগ কর্তৃক তরুণী গণধর্ষণের ঘটনা ন্যাক্কারজনক। নেতৃবৃন্দ, বিচারহীনতা-বিচারের দীর্ঘসূত্রতা-ভোগবাদী রাজনীতির কারণে সারাদেশের একের পর এক নারী ধর্ষণের যে ঘটনা ঘটছে তারই ধারাবাহিকতায় এমসি কলেজে হোস্টেলে ধর্ষণের গঠনা। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে এমসি কলেজে হোস্টেলে তরুণী ধর্ষণকারী ৬ ছাত্রলীগ নেতাসহ তাদের আশ্রয়দাতাদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও সম্মিলিত নাট্য পরিষদ : গত ২৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠ এম.সি কলেজ’র ছাত্রাবাসে স্বামীর সামনে একজন গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচী পালন করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সিলেট ও সম্মিলিত নাট্য পরিষদ, সিলেট।
২৭ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকেল ৪টায় এম.সি কলেজ ছাত্রাবাসের প্রধান ফটকের সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচীতে অংশ নেন সিলেটের প্রায় শতাধিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সিলেট’র সভাপতি আমিনুল ইসলাম চৌধুরী লিটনের সভাপতিত্বে ও সম্মিলিত নাট্য পরিষদ, সিলেট’র সাধারন সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্তের পরিচালনায় কর্মসূচীতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমেদ চৌধুরী মিশু। বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সদস্য শামসুল আলম সেলিম ও বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থা, সিলেট বিভাগের সাধারণ সম্পাদক নীলাঞ্জনা যুঁই।
প্রতিবাদ কর্মসূচীতে বক্তারা বলেন, এই গণধর্ষণের ঘটনা বর্বরোচিত ও অমানসিক। ঘটনার সাথে জড়িত সকলকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তারা বলেন, শিক্ষার্থী খাদিজার উপর হামলা, ঐতিহ্যবাহী ছাত্রাবাস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া এবং সর্বশেষ কলেজের ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের ঘটনা এই কলেজের দীর্ঘদিনের সুনামকে বিনষ্ট করেছে। বক্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হোস্টেলগুলো যেখানে বন্ধ রয়েছে সেখানে এম.সি কলেজ ছাত্রাবাসে ছাত্র ও বহিরাগতদের অবস্থান করার দায়-দায়িত্ব কলেজ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এবং ব্যর্থতার ফসল। বক্তারা পুলিশ প্রশাসন কর্তৃক এ পর্যন্ত দু’জন অন্যতম আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, অন্যান্য আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে একটি স্বাধীন সার্বভৌমত্ব দেশে সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে গণধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ যাতে আর সংঘটিত না হয় সেজন্যে অপরাধের সাথে যুক্ত ও তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোরভাবে ব্যবস্থা নিবে বলে আমরা আশা করি। তারা গণধর্ষণকারীদের বিচার দাবিতে কর্মসূচী অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।
ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ : এম.সি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে গণধর্ষণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নূরু গংদের এবং চট্টগ্রামের আদিবাসী নারী ধর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং আশ্রয় প্রশ্রয় দাতাদের দ্রুত গ্রেফতার দাবিতে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে ২৭ সেপ্টেম্বর রবিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এক মানববন্ধন ও কালো পতাকা প্রদর্শন অনুষ্ঠিত হয়।
সিলেট মহানগর ছাত্রলীগ নেতা শেখ লিপনের পরিচালনায় সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও জেলা যুবলীগ নেতা, এড. প্রবাল চোধুরী পুজন (এ.পি.পি.) বলেন, পুণ্যভূমি সিলেটের এই পবিত্র মাঠিকে যারা অপবিত্র করেছে তাদেরকে অতি দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অপরাধী যতই শক্তিশালী হোক না কেন তারা যেন আইনের কোনো ফাঁক দিয়ে বের হতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। পাশাপাশি তিনি প্রশাসনের প্রতি ধর্ষণকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের জোর দাবী জানান।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, জেলরোড শাখা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা এমদাদুল হক মান্না, বাপ্পা পাল, মদন মোহন কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রেজয়ানুল আজাদ চৌধুরী ইফাজ, সাংগঠনিক স¤পাদন রাশেদ মিয়া।
এছাড়া অন্যান্যদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন যুবলীগ নেতা উত্তম দেব, সাজু আহমেদ, শান্ত দেব, মামুন মিয়া, ১২ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ স¤পাদক মামুন ইসলাম, জায়েদ আহমদ, ইমন মিয়া, জুয়েল খান রায়হান, ফুয়াদ আহমদ রিফাত, সাগর তালুকদার, দিপু রায়, বিশাল দাশ, পিয়াং সোম, জনি খন্দকার, সম্রাট চন্দ, রাহুল চন্দ, তানভীর আহমেদ নূর, রুবেল আহমদ রাব্বি, মাজের আহমদ, সুহেল মিয়া, রুমেল আহমদ রুবেল, শান্ত অয়াল, নিকলেশ দাশ, ইব্রাহিম সারয়ার, রাকিব হাসান মিজু, মাহিন আলী, ইশফাক রুহান, জুনেল আহমদ, ইমরান আহমেদ, সাদমান ছাকিব, আহমেদ সানি, শাহ মেহাদ, রিদয় তালুকদার, রাকিব হুসেন, শিবু দাশ সুমন, আবদুল্লাহ সাবের, তন্ময় তালুকদার, সৈকত দাশ তন্ম্য, ১৭ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সায়েম ফরাজী, তিয়াস রায়, বিশ্ব দাশ, মনুজ চন্দ্র জয়, এহসান রাফি, আরফান শাহরিয়ার জয়, অনাবিল, রাতুল, জামিল আহমেদ, আজহার শাহরিয়ার, মিথিল হিমেল পিংকু, সায়েম আহমদ সানি, রাতুল রায়, সাব্বির আহমদ, মাহিন প্রীতম দেবনাথ, ইমন আহমেদ, রিফাত ইসলাম, শরিফ, রাসেল, রাকিব, প্রমি প্রমুখ।
বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া : বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোজতবা হাসান চৌধুরী নুমান বলেছেন, শত বছরের প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে যারা একজন নারীকে ধর্ষণ করেছে তারা কারা? তাদের পরিচয় কী? আমি বলবো তাদের পরিচয় হলো তারা অপরাধী। আমরা দেখেছি, আজ যারা অপরাধী সময়ে সময়ে আদর্শ ছাত্র রাজনীতির বিপরীতে এদের অবস্থান ছিল। ক্যাম্পাসে, ছাত্রাবাসে তাদের দৌরাত্ম্য ও অপকর্মে সাধারণ শিক্ষার্থীরা থাকতো শঙ্কিত। বিভিন্ন সময় অন্যায়ভাবে ছাত্রদেরকে এরা নির্যাতনও করেছে। বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের কর্মী পরিচয়ে তারা সময়ে সময়ে তাদের অপরাধমূলক কর্মকান্ডগুলো চালিয়ে গেলেও প্রশাসনিকভাবে তাদেরকে দমানোর কোনো প্রচেষ্টা করা হয়নি। যার পরিণাম এম.সি কলেজ ছাত্রাবাসের এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা। তিনি আরো বলেন, আমরা জানি বর্তমান করোনাকালীন সময়ে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। কিন্তু এ সময়ে কীভাবে এই বখাটেরা এম.সি কলেজের ছাত্রাবাসে অবস্থান করে। এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ কোনোভাবে দায়ভার এড়িয়ে যেতে পারেন না। তিনি আরো বলেন, গত সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে যে ঘটনা ঘটেছে তা অমানবিক, অগ্রহণযোগ্য ও বর্বরতম। স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ এটা জাহিলিয়াতি সময়ের কর্মকাণ্ডকেও হার মানিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অতি দ্রুত সকল দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তিনি গতকাল রবিবার বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া সিলেট জেলা ও মহানগরী আয়োজিত সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মুরারিচাঁদ কলেজের (এমসি কলেজ) ছাত্রাবাসে ধর্ষণের প্রতিবাদ ও দুষ্কৃতিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিলেট পশ্চিম জেলার সাধারণ সম্পাদক কবির আহমদ, সিলেট পূর্ব জেলার সাধারণ সম্পাদক হোসাইন মোহাম্মদ বাবু, সিলেট মহানগরীর সাংগঠনিক সম্পাদক মারুফ আহমদ, সিলেট পশ্চিম জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক কুতুব আল ফরহাদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সালেহ আহমদ, প্রচার সম্পাদক শেখ রেদওয়ান হোসেন, সিলেট মহানগরীর সহ প্রচার সম্পাদক পিয়ার হাসান, হোসাইন আহমদ, অর্থ সম্পাদক আজাদ হোসেন, অফিস সম্পাদক শামস উদ্দিন, সহ অফিস সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম নিয়াজ, প্রশিক্ষণ সম্পাদক আরিফ হোসেন সামাদ, সিলেট পশ্চিম জেলার প্রশিক্ষণ সম্পাদক রেজাউল করীম, শিক্ষা ও সংস্কৃতিক সম্পাদক খালেদ আহমদ, সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসা সভাপতি আশিকুর রহমান, সিলেট সরকারি কলেজ সভাপতি জাহিদ হাসান তালুকদার, সোবহানীঘাট ডি,ওয়াই কামিল মাদরাসা সভাপতি মুশতাক আহমদ, সিলেট এমসি কলেজ সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম বাবু, ওসমানীনগর উপজেলা সভাপতি মাহবুব আহমদ খান, বিশ্বনাথ দক্ষিণ উপজেলা সভাপতি আব্দুল মুক্তাদির ফয়ছল, বিশ্বনাথ উত্তর উপজেলা সভাপতি জামাল আহমদ, সদর পশ্চিম উপজেলা সভাপতি রইছ উদ্দিন, মোগলাবাজার থানা সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, দক্ষিণ সুরমা থানা সভাপতি ফখরুল ইসলাম, জগন্নাথপুর পূর্ব উপজেলা সভাপতি শাহ আলম, জকিগঞ্জ উপজেলা সভাপতি আহমদ আল মনজুর, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সভাপতি হোসাইন আহমদ, সিলেট মহানগরীর ২৭ নং ওয়ার্ড শাখার সভাপতি সাইদুল ইসলাম দুলাল, ২২ নং ওয়ার্ড শাখার সভাপতি এফ কে জুনেদ আহমদ, ০৮ নং ওয়ার্ড শাখার সভাপতি শফিকুল ইসলাম, ০৭ নং ওয়ার্ড শাখার সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম মুন্না, প্রমুখ।
সিলেট বিভাগ গণদাবী ফোরাম : সিলেট বিভাগ গণদাবী ফোরাম এর নেতৃবৃন্দ এমসি কলেজ ছাত্রবাসে সংঘটিত নারকীয় ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবী জানিয়েছেন।
নেতৃবৃন্দ ২৭ সেপ্টেম্বর রবিবার এক বিবৃতিতে উপরোক্ত দাবী জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, উপ-মহাদেশের প্রাচীন বিদ্যাপীঠের অন্যতম, সিলেট বিভাগের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজ। এই কলেজে বার বার সংঘটিত অমানবিক ঘটনা সমূহের সুষ্ঠু তদন্ত কিংবা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না করায় বিভিন্ন আকারে ও প্রকারে বার বার অমানবিক ঘটনা সংঘটিত হওয়ায় সিলেটবাসী গভীর উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত। ইতিপূর্বে সংঘটিত বদরুল কর্তৃক কলেজ ছাত্রী খাদিজাকে কোপানোর ঘটনা, হোস্টেলে অগ্নি সংযোগ করে ভষ্মীভূত করা, প্রাণী সম্পাদক কর্মকর্তাকে শরীরিক ভাবে নির্যাতন করে ছাগল ছিনতাই এর ধারাবাহিক ঘটনায় এবার স্বামীকে বেধে রেখে গৃহবধূ ছিনতাই ও ধর্ষণের মত জগন্ন ঘটনা ঘটলো।
উপরোক্ত ঘটনাগুলোর দৃষ্টান্তমূলক বিচার হলে ধর্ষণের মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটতো না। এছাড়াও নেতৃবৃন্দ বলেন, টিলাগড় পয়েন্ট থেকে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের সম্মুখ দিয়ে আম্বরখানা কিংবা বিমানবন্দর যাতায়াতের রাস্তা ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।
বিবৃতি প্রদান করেন সিলেট বিভাগ গণদাবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা বদরুল আহমদ চৌধুরী এডভোকেট, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি চৌধুরী আতাউর রহমান আজাদ এডভোকেট, সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন আহমদ, সহ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কাজী গোলাম মর্তুজা, সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি শামীম হাসান চৌধুরী এডভোকেট, সিলেট জেলা শাখার সভাপতি দেওয়ান মসুদ রাজা চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক চৌধুরী দেলওয়ার হোসেন জিলন, কেন্দ্রীয় সদস্য শিক্ষক আব্দুল মালিক, আনোয়ার উদ্দিন বুরহানাবাদী প্রমুখ।
পাবলিক ভয়েস : আমরা আজ সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসের সম্মুখে বর্বরোচিত গণধর্ষণের ঘটনায় পাবলিক ভয়েস এর পক্ষ থেকে ঘটনাস্থলে এসে দাঁড়িয়ে আছি। আমাদের এই প্রিয় ক্যাম্পাস ও আমাদের এই প্রিয় পুণ্যভূমি সিলেটের কতিপয় নরপশু সরকারদলের পৃষ্ঠপোষকতায় যারা একের পর এক জঘন্য কার্যক্রমে এমসি কলেজে পরিচালিত করছে, তারাই আজ গ্যাং রেপের মতো একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে এবং ১২৮ বছরের পুরনো চির সবুজ এই বিদ্যাপীঠ কে তারা কলঙ্কের কালিমালিপ্ত করেছে।
তারা শুধু কলেজ ক্যাম্পাস কে নয়, পুরো সিলেট তথা সারা বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করেছে। ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সভাপতির বক্তব্যে পাবলিক ভয়েস এর চেয়ারম্যান মিফতাহ্ সিদ্দিকী উপরোক্ত কথা গুলো বলেন।
রবিবার ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুর ঘটনাস্থল সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের সম্মুখে, গৃহবধূ গণধর্ষণের প্রতিবাদে, বিশিষ্ট সমাজসেবক ও রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব মুকুল মুর্শেদ ও ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মোঃ শাকিলুর রহমান এর পরিচালনায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে মিফতাহ্ সিদ্দিকী আরো বলেন, এইসব কুচক্রীমহল, সরকারী দলের পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের ছাত্র সংগঠনের নেতারা এমসি কলেজের হোস্টেল কে জ্বালিয়ে দিয়েছিল। আমরা সিলেটের সচেতন সমাজ তখন শাস্তির দাবী নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম কিন্তু আমরা প্রতিকার পাইনি। এবারও যদি এই কুলাঙ্গারদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হয় তবে সিলেটবাসীকে সাথে নিয়ে আবারও সচেতনসমাজ রাজপথে নামবে এবং যতক্ষণ পর্যন্ত না এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হচ্ছে, আমরা শপত নিলাম ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা ধর্ষক ও তাদের মদতদাতার বিরুদ্ধে আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যাব।
অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট লেখক, কলামিস্ট ও গণফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এড: আনসার খান বলেন, এমসি কলেজ যেখানে সাবেক হাজারও শিক্ষার্থী দেশ বিদেশে এই কলেজের নাম উজ্জল করে রেখেছেন। এই ক্যাম্পাস কে এমন কলঙ্কিত যারা করলো তাদের কখনো এই দেশ ক্ষমা করবে না। এই অপরাধীরা এক দিনে তৈরী হয়নি, ধীরে ধীরে বড় হয়েছে। অনতিবিলম্বে তাদের মদতদাতাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হউক।
সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এড: শামীম সিদ্দিকী তার বক্তব্যে বলনে, আমি এখানে কোন দলীয় পরিচয়ে আসিনি, একজন অভিভাবক পরিচয়ে এসেছি। দেশে হাজার-কোটি টাকা লুটপাট হচ্ছে, দুর্ণীতি হচ্ছে, আইনের শাষন নেই, তাই এরকম ন্যাক্কজার জনক ঘটনা বারবার ঘটছে। আমি তেমন কিছু বলতে চাই না।
অতি শীঘ্রই ধর্ষকদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আশার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানাই।
সিলেট বারের সিনিয়র আইনজীবী এড: হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, আমাদের প্রাণের সিলেট কে যে সন্ত্রাসীরা কলঙ্কিত করেছে তাদের কোন ক্ষমা নাই। আজ আমাদের জেলা বারে মিটিং করে সিদ্ধান্ত হবে ইনশাল্লাহ আমি মনের করি এই ধর্ষকদের পক্ষে আদালতে কোন আইনজীবী দাঁড়াবেন না।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন, সিলেট মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল ফাত্তাহ বকসি, সিলেট মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুব চৌধুরী, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক ও সিলেট মহানগর বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক রেজাউল করিম নাচন,
সিলেট মহানগর বিএনপির বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সাত্তার মামুন, জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক মন্জুর হোসেন মজনু, সিলেট মহানগর শ্রমিক দলের সভাপতি ইউনুস মিয়া, সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শাকিল মুর্শেদ, সিলেট জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আহমদ রানু, সিলেট জেলা জাসাসের সহ-সভাপতি রফিকুল বারী রোমান, সিলেট জেলা সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক আবদুল ওয়াহিদ সোহেল, সেলিম আহমদ মাহমুদ, কৃষক দল মহানগরের সদস্য সচিব মারুফ আহমেদ টিপু, আল মামুন খান, সিরাজুল ইসলাম, এড: লোকমান চৌধুরী, মমতাজ হোসেন মুন্না, রাজিব কুমার দে, আবু সাইদ মো: তায়েফ, হোসেন আহমদ রুহুল, জাকির হোসেন কয়েছ, আলমগীর কবির মুন্না, এখলাসুর রহমান মুন্না, আব্দুল মান্নান, ইফতেখার আহমদ বিপুল, এনামুল হক এনাম, মশিউর রহমান পাবেল, বিমন দেবনাথ, উজ্জল রন্জন চন্দ্র, সিলেট এম সি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক বদরুল আজাদ রানা, জমজম বাদশা, মো: রাসেল আহমদ, জাকির হোসেন, আজিজুর রহমান, এড: ফোরাহিম হোসেন, সুমন আহমদ, কাওসার হোসেন রকি, কয়েছ আহমদ, জালাল আহমদ, মীর সাইদুর রহমান আয়াত, সায়েম জাকির, আনোয়ার আহমদ, হোসেন খান ইমাদ, সোলায়মান আহমদ সুমন, শাহরিয়ার আশফাক শাহী, শাওন আশরাফ, জাকির আহমদ রিফাত প্রমুখ।
গোলাপগঞ্জে ছাত্রদল : শতবর্ষের ঐতিহ্যের স্মারক সিলেট বিভাগের শীর্ষ বিদ্যাপীঠ এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণকারী ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে গোলাপগঞ্জ উপজেলা পৌর ও ঢাকাদক্ষিণ সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদল।
রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩টায় গোলাপগঞ্জ উপজেলা পৌর ও ঢাকাদক্ষিণ সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের উদ্যোগে ঢাকাদক্ষিণ ডাকবাংলা থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বাজারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রোড প্রদক্ষিণ করে ঢাকাদক্ষিণ বাদামের চৌমুহনী পয়েন্টে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
গোলাপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদল নেতা জাহেদ আহমদ মান্নার সভাপতিত্বে ও ঢাকাদক্ষিণ সরকারি কলেজ ছাত্রদলনেতা কামিল আহমদ তালুকদার এর সঞ্চালনায় মিছিল সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ঢাকাদক্ষিণ সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি সিলেট জেলা ছাত্রদল নেতা কামরুজ্জামান জোনাক, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা ছাত্রদলনেতা জাহেদ আহমদ, মাছুম আহমদ, জাকু আহমদ, গোলাপগঞ্জ উপজেলা যুবদল নেতা হেলিম আহমদ, জুবায়ের আহমদ রাজু, নাসির আহমদ আপন, রুহেল আহমদ, পৌর যুবদল নেতা রাজু আহমদ তালুকদার, উপজেলা যুবদল নেতা জুনায়েদ রহমান বাবলু, বাবর খান, বাবুল আহমদ, জুয়েল আহমদ, গোলাপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলনেতা আলী আহমদ, জাকির হোসেন জুনেদ, সুজন আহমদ সুনু, মাজহারুল ইসলাম, দুলাল আহমদ, দিদারুল ইসলাম সাজু, রবিউল ইসলাম রবি, শফি আহমদ চৌধুরী, আবু বক্কর, ডি এক্স ইমরান, আরিফ আহমদ, মুন্না আহমদ, জাকির চৌধুরী, রাহি আহমদ, জাবেদ আহমদ, নাজু আহমদ, সাদিক সুমন, মাজেদ আহমদ, এলেক্স তামভীর, সবুজ আহমদ, জাকির আহমদ, নিরু আহমদ কামরুল, পৌর ছাত্রদল নেতা, তানহার আহমদ পলাশ, শিপলু আহমদ, সুমন আহম, ঢাকাদক্ষিণ সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের হয়ে বক্তব্য রাখেন ছাত্রদলনেতা- সুবেদ আহমদ, এমরান হোসেন, সুহেদ আহমদ, তোফায়েল আহমদ সুমেল, নজমুল চৌধুরী ফাহিম, নাদির আহমদ, রাসেল আহমদ, জয়রুল ইসলাম জয়, তায়েফ আহমদ রুহেল, মোস্তাক চৌধুরী, নিশাত মোস্তফা ইনান, জাহিদুল ইসলাম রিপন, নাসিম আহমদ, সায়েম আহমদ, হোসাইনুজ্জাম্মান ওলি, সাইফুল ইসলাম, লিমন রনি, সুমায়েল আহমদ অপু,কাওসার আহমদ।
সমাবেশে সিলেট জেলা ছাত্রদল নেতা কামরুজ্জামান জোনাক বলেন, এশিয়া মহাদেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ এমসি কলেজ। ছাত্রলীগের কিছু সন্ত্রাসীরা সিলেটে শত বছরের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে। তিনি ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত সকল ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি করেন।
ইসলামী আন্দোলন : এম.সি কলেজের ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে গণধর্ষণে জড়িত ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেফতারে প্রশাসন ব্যর্থ হলে সিলেটের সর্বস্তরের জনতাকে সাথে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট মহানগর।
এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের কর্মীদের দ্বারা গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় জরিতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গতকাল ২৭ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকাল ৫টায় নগরীর কোর্ট পয়েন্টে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট মহানগরের উদ্যোগে এক বিশাল সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। নগর সভাপতি আলহাজ্ব নজির আহমদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসানের পরিচালনায় মিছিল পূর্ববর্তী সমাবেশে বক্তারা উপরুক্ত হুশিয়ারী উচ্ছারণ করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট মহানগর সহ-সভাপতি ডা. রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, জেলা সেক্রেটারি হাফেজ মাওলানা ইমাদ উদ্দিন, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন এর কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য মুহাম্মাদ আবু তাহের মিসবাহ, ইসলামী যুব আন্দোলন সিলেট মহানগর সভাপতি মাওলানা মাহফুজ আহমদ মাহি, ইশা ছাত্র আন্দোলন সিলেট মহানগর সভাপতি ইসমাইল আহমদ, এমসি কলেজ শাখা সভাপতি মুহাম্মাদ নুরুদ্দিন প্রমুখ।
নারী মুক্তি কেন্দ্র : এমসি কলেজে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের দ্বারা তারুণী ধর্ষণের প্রতিবাদে বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে বিকাল ৫টায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র সিলেট জেলা শাখার আহবায়ক তামান্না আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নারী মুক্তি কেন্দ্রের সংগঠক রুবাইয়াৎ আহমেদ, নমিতা রায়, সুজাতা সেন, আমেনা বেগম প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমসি কলেজে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের দ্বারা যে ধর্ষণের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এই ঘটনা সিলেটবাসীসহ সারাদেশের মানুষকে বিস্মিত করেছে। ঘরে-বাইরে, পাহাড়ে-সমতলে কোথাও নারী আজ নিরাপদ নয়। প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও ঘটছে ধর্ষণসহ নারী নির্যাতনের ঘটনা। কিন্তু বেশিরভাগ ঘটনাই থেকে যায় অন্তরালে। যেগুলোও বা সামনে আসে সেগুলোরও সঠিক বিচার হয়না। কারণ অপরাধীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব বলয়ের মানুষ হিসেবে পরিচিত থাকে। ফলে এই বিচারহীনতার সংস্কৃতিই আজকে অপরাধীদের আরো আগ্রাসী করেছে। এর দায়ভার সরকার কোনভাবেই এড়াতে পারে না। এছাড়া এই অপরাধীরা দীর্ঘদিন ধরে এমসি কলেজসহ আশপাশের এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। যার বিরুদ্ধেও কলেজ প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় প্রশাসন কোন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বরং তাদেরকে নানাভাবে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে রেখেছিলো। এমনকি এই ঘটনার পরেও কলেজ প্রিন্সিপাল ও হোস্টেল সুপারের বক্তব্য চরম দায়হীনতার পরিচয়। এই অথর্ব অকার্যকর প্রশাসনের পদত্যাগের দাবী জানাই।
বক্তারা অবিলম্বে ধর্ষক ছাত্রলীগ কর্মীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।