কানাইঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারী শামীম কর্তৃক অভিযোগকারীর স্বাক্ষর নেয়ার চেষ্টা

10

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডাঃ শেখ শরফ উদ্দিন নাহিদ ও অফিস সহকারী শামীম আহমদ কানাইঘাট বাজারের নাঈম এন্ড ফাহিম রেস্টুরেন্টের ভুয়া ক্যাশ মেমো তৈরি করে তাদের স্বাক্ষরের মাধ্যমে ১ লক্ষ ৫৭ হাজার ৫’শ টাকা উত্তোলনের ঘটনায় দায়েরকৃত অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য অফিস সহকারী শামীম আহমদ বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
কানাইঘাট বাজারের নাঈম এন্ড ফাহিম ও পানসী রেস্টুরেন্টের মালিক আব্দুল মন্নান জানান, করোনাকালীন সময়ে রেস্টু বন্ধ থাকলেও তার মালিকানাধীন নাঈম এন্ড ফাহিম রেস্টুরেন্টের নামে ভুয়া ক্যাশ মেমো, স্বাক্ষর ও সীল জালিয়াতি করে হাসপাতালের টিএইচও শরফ উদ্দিন নাহিদ ও অফিস সহকারী শামীম আহমদ হাসপাতালের স্টাফদের খাবার বাবদ ভুয়া ক্যাশ মেমোতে স্বাক্ষর দিয়ে ১ লক্ষ ৫৭ হাজার ৫’শ টাকা সরকারী কোষাগার থেকে উত্তোলন করেন। এ ঘটনায় তিনি ৯ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বারিউল করিম খানের বরাবরে বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দায়েরের পর থেকে একবার অফিস সহকারী শামীম আহমদের বড় ভাই অভিযোগটি ইউএনও অফিস থেকে তুলে আনার জন্য আমাকে অনুরোধ করেন, এতে আমি আপত্তি জানাই। গত বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে আমার হোটেলের খাবার বাবদ একটি বিলের টাকা আনতে গেলে অফিস সহকারী শামীম আহমদ আমাকে বলেন, আপনার দোকান থেকে আমরা খাবার এনে থাকি। তুমি ইউএনও সাহেবের কাছে যে অভিযোগ আমাদের বিরুদ্ধে দিয়েছো, সেটি তুমি নিজ ইচ্ছায় প্রত্যাহার করে নিয়েছো মর্মে একটি লিখিত কাগজ বের করে সেখানে অফিস সহকারী শামীম আহমদ আমাকে স্বাক্ষর দেয়ার জন্য বার বার পিড়াপীড়ি করেন। আমি কাগজে স্বাক্ষর না দিয়ে বলি যে অভিযোগ আমি ইউএনও’র বরাবরে দায়ের করেছি সেটি তদন্তাধীন অবস্থায় রয়েছে। কাগজে আমি স্বাক্ষর করতে পারব না, যেহেতু আপনারা আমার হোটেলের ক্যাশ মেমো তৈরি করে বিল উত্তোলন করেছেন। হাসপাতালের বিভিন্ন খাতের টাকা তসরুফ সহ বিভিন্ন কেলেঙ্কারির বিষয়টি ধামা-চাপা দেওয়ার জন্য নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন হাসপাতালের টিএইচও ডাঃ শেখ শরফ উদ্দিন নাহিদ ও অফিস সহকারী শামীম আহমদ বলে অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন।
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন খাতের টাকা ভুয়া বিল-ভাউচার দেখিয়ে উত্তোলন এবং হাসপাতালের কোয়ার্টারে বসবাসরত ডাক্তার, নার্স, স্টাফ, কর্মচারীদের বাসা ভাড়ার টাকা বিগত ২০১৭ সালের পর থেকে ভাড়াটিয়াদের ভাউচার প্রদান না করে এবং ব্যাংকের টাকা জমা না দিয়ে অফিস সহকারী শামীম আহমদ কর্তৃক আত্মসাৎ এবং বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি তুলে ধরে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়ায় বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য গত ২১ সেপ্টেম্বর উপজেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির মাসিক সভায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অপরদিকে গত শুক্রবার কানাইঘাট বাজারে আয়োজিত একটি প্রতিবাদ সভায় উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ হাসপাতালের পাস গেইট নির্মাণ সহ হাসপাতালের বিভিন্ন খাতের সরকারি টাকা আত্মসাতের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থাগ্রহণ এবং যারা দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন তাদের প্রত্যাহারের দাবী জানানো হয়।