আটকে পড়া ৫ শতাধিক পাথর বোঝাই নৌযান ছেড়ে দেয়ার দাবিতে কানাইঘাট থানায় নৌযান চালক-শ্রমিকদের অবস্থান ধর্মঘট

42
কানাইঘাট থানার মূল ফটকে অবস্থান করে বিক্ষোভ করছেন নৌযান চালক ও শ্রমিকরা।

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাট থানায় দিনভর অবস্থান করে কয়েক’শ নৌযান চালক ও শ্রমিকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে মিছিল সহকারে প্রায় দেড় মাস থেকে লোভাছড়া পাথর কোয়ারীতে আটকা পড়া প্রায় ৫ শতাধিক পাথর বোঝাই বলগেট ও স্টীল নৌকার চালক ও শ্রমিকরা থানার ভিতরে মূল ফটকে বৃষ্টির মধ্যেও অবস্থান করে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
থানার ভিতরে অবস্থানকালে নৌযান চালক সুনামগঞ্জের আজিম উদ্দিন, মাগুরার আবুল কালাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোঃ টিটু, বরগুনার রুবেল হোসেন, কিশোরগঞ্জের উবায়েদ উল্লাহ, ভোলার মোঃ বাসেদ, মোঃ শফিক, ফিরোজপুর জেলার আল-আমিন কান্নাজড়িত কন্ঠে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, প্রায় দেড়মাস পূর্বে লোভাছড়া পাথর কোয়ারীর ব্যবসায়ীদের আশ^াসের প্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৫ শতাধিক বলগেট ও স্টীল নৌকার চালক ও শ্রমিকরা কোয়ারী থেকে পাথর নৌপথে পরিবহনের জন্য কোয়ারিতে আসেন। যথারীতি তারা বলগেট সহ স্টীল নৌকায় পাথর বোঝাই করার পর স্থানীয় প্রশাসন ও থানা পুলিশ তাদের পাথর বোঝাই বাহনগুলো এখন পর্যন্ত নৌপথে আটক করে রেখেছে। এতে করে তারা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন এবং শত শত নৌযান চালক ও শ্রমিকরা অনাহারে অর্ধাহারে জীবন যাপন করছেন। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, কেউ তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছে না। আটকা পড়া অনেক নৌকা ডুবে ডুবে অবস্থা, কয়েকটি পাথর বোঝাই নৌকা ডুবে গেছে।
স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বারিউল করিম খান ও থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম এর কাছে বার বার শরণাপন্ন হওয়ার পরও তাদের পাথর বোঝাই নৌকাগুলো গন্তব্যস্থানে নিয়ে যেতে পারছেন না। যার কারণে আজ প্রায় নৌযান চালক ও শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে থানায় অবস্থান ধর্মঘট সহ বিক্ষোভ করতে বাধ্য হচ্ছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের পাথরবোঝাই বাহন ছেড়ে দেয়া না হবে তারা থানার সামনে অনশন সহ অবস্থান করে যাবেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে নৌযান শ্রমিকরা বলেন, দেড় মাস থেকে তাদের পাথর বোঝাই বাহনগুলো আটক করে রাখা হয়েছে, কিন্তু কেউ তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন না। প্রশাসনের ধারে ধারে তারা ঘোরছেন, কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। এমতাবস্থায় তারা সকল শ্রমিক সংগঠন, মানবাধিকার সংগঠন, সিলেটের প্রশাসন তথা শ্রমিক মেহনতি মানুষের আশ্রয়স্থল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তারা আকুল আহ্বান জানিয়েছেন, দরিদ্র নৌযান চালক ও শ্রমিকদের অসহায়ত্বের কথা বিবেচনা করে দ্রুত যেন তাদের নৌকাগুলো নিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়। এ ব্যাপারে থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম জানান, আইনি জটিলতার কারনে পাথর বোঝাই বাহনগুলো কর্তৃপক্ষের নির্দেশে থানা পুলিশ আটক করে রেখেছে। তবে আটকেপড়া নৌযান চালক ও শ্রমিকদের দুরাবস্থার কথা তুলে ধরে তিনি বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলছেন, যাতে করে এর একটি সুরাহা হয়। ওসি নৌযান চালকদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের দাবী-দাওয়ার বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাবেন বলে আশ^স্থ করলেও নৌযান চালক ও শ্রমিকরা থানার মূল ফটকের ভিতরে অবস্থান করছেন এবং কয়েকজন নৌযান শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অবস্থান কর্মসূচীতে একাত্মতা প্রকাশ করে এ সময় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক জুনেদ হাসান জীবান।