সুনামগঞ্জের ৩ শুল্কবন্দর বন্ধ, ১৫ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি

15

সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
করোনা মহামারীর কারণে মার্চ মাস থেকে এই পর্যন্ত (২১ সেপ্টেম্বর) সুনামগঞ্জ জেলার ৩ শুল্কবন্দর বন্ধ থাকায় সরকার কমপক্ষে ১৫ কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে।
ব্যবসা বন্ধ থাকায় প্রায় ৮০০ আমদানী কারক এবং কমপক্ষে ৫০ হাজার শ্রমিকের দুর্বিষহ দিন কাটছে।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তের বড়ছড়া, চারাগাঁও ও বাগলী শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা ও পাথর আমদানী হয় ভারতের মেঘালয় থেকে। দেশের উত্তর-পূর্বঞ্চলের বড় শুল্কস্টেশন এগুলো। এই শুল্কস্টেশন গুলোতে নানাভাবে কর্মরত থাকেন ৫০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক। গত মার্চ মাস থেকে করোনার কারণে এই তিন শুল্কস্টেশন দিয়ে আমদানী বন্ধ। এ কারণে বেকার হয়ে আছেন এসব শ্রমিকরা।
বড়ছড়ার শ্রমিক সিরাজ মিয়া বললেন, এপ্রিল মাসে কয়েকদিন ধান কাটা গিয়ে কিছু ধান পেয়েছিলেন। কিছু নগদ টাকাও ছিল। এই ধান ভাঙিয়ে চাল করে খেয়ে শেষ, নগদ টাকাও এখন আর হাতে নেই। এখন কীভাবে যে চলি, শুল্ক ববন্দর চালু না হলে না খেয়ে মরবো।
তাহিরপুর কয়লা আমদানী কারক গ্রুপের সদস্য সচিব রাজেশ তালুকদার জানান, ভারতের ন্যাশনাল গ্রীণ ট্রাইব্যুনাল মার্চের প্রথম সপ্তাহে মেঘালয়ের ২ লাখ টন উত্তোলিত কয়লা মৌখিক চালানের ভিত্তিতে রপ্তানী করার আদেশ দিয়েছিলেন। মেঘালয়ে ৩২ লাখ টন উত্তোলিত কয়লাও রয়েছে। এরমধ্যে ২ লাখ টন কয়লা রপ্তানী করার সুযোগ পেয়েছিলেন রপ্তানী কারকরা। কিন্তু করোনার কারণে আমদানী-রপ্তানী বন্ধ থাকায় এই কয়লা আসে নি। অন্যদিকে, পাথরও আসছে না। এই কারণে কেবল শ্রমিকরা নয়, আমদানী কারকরাও আর্থিক কষ্টে পড়েছেন।
তাহিরপুর কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের বললেন, আমদানী কারকরাও ব্যবসা বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন। নতুন করে ব্যবসা হচ্ছে না, কয়লা-পাথরের যে বাকী পড়েছে, সেগুলেও তুলতে পারছে না। ঋণগ্রস্ত আমদানী কারকরা অন্য ব্যবসা খুঁজছেন, তাও করতে পারছেন না।
বড়ছড়া-চারাগাঁও শুল্কস্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, তাহিরপুরের তিন শুল্কবন্দর চালু থাকলে মাসে দেড় কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব আদায় হয়। সেই হিসাবে গত ৭ মাস করোনার কারণে বন্দর বন্ধ থাকায় ১৫ কোটি টাকার মতো রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। গত এক মাস হয় আমদানী চালু হবে শুনছি, কিন্তু চূড়ান্ত কিছুই হচ্ছে না।